চিনি খাওয়া কমাতে মিষ্টি খাবার এড়ানোর অভ্যাস গড়া উপকারী।
Published : 03 Nov 2024, 05:15 PM
বাটি ভর্তি ক্ষির কিংবা পায়েস অথবা দোকানের মিষ্টি আর আইসক্রিম- এসব খেতে কেনা পছন্দ করেন!
মাঝেমধ্যে এসব খাওয়ার ইচ্ছে জাগতেই পারে।
“তবে সব সময় খেতে ইচ্ছে করলে বুঝতে হবে এমন খাদ্যপরিবেশের মধ্যে থাকেন, যেখানে আপনাকে সারাক্ষণ বলতে থাকে চিনি খান, চিনি খান”- সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এভাবেই মন্তব্য করেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া’র ‘স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের স্বাস্থ্যনীতি বিষয়ক অধ্যাপক ডা. লরা ইশ্মিড।
তিনি মনে করেন চিনিকে গালি না দিয়ে বরং কম খাওয়ার অভ্যাস গড়া উচিত।
তিনি বলেন, “খাদ্য ও পুষ্টি নিয়ে প্রচলিত অনেক ধারণাই ভুল রয়েছে। বিশেষ করে যখন একটি পুষ্টিগুণ নিয়ে কথা বলা হয়। তবে স্বাস্থ্যের দিক থেকে একটি উপাদান কখনও চিন্তার বিষয় হতে পারে না। বরং সম্পূর্ণ খাদ্যাভ্যাস গনায় ধরতে হয়।”
আবার এটাও ঠিক আশপাশে এত মিষ্টি খাবারের থাকতে সেগুলো জীবন থেকে ঝেরে ফেলাও সম্ভব না। তাই নিজেকে চিনি বা মিষ্টি খাবার থেকে দূরে রাখার কয়েকটি পন্থার কথা জানান এই অধ্যাপক।
বেশি খাওয়াটা এড়ানো
প্রথম বিষয় হল, তরল মিষ্টি এড়াতে হবে।
“চিনিযুক্ত কোমল পানীয়র দিকে নজর দিন। যেমন- সোডা, এনার্জি ড্রিংকস এবং কৃত্রিম ফলের রস”- বলেন ডা. ইশ্মিড।
তিনি মন্তব্য করেন, মিষ্টি তরল পানীয় গ্রহণ করা অভ্যাস সহজেই গড়ে যায়। ফলে চিনি গ্রহণের পরিমাণও বাড়ে।
কর্মক্ষেত্রে লোভ সামলানো
যেখানে কাজ করতে যাওয়া হয় সেখানে মিষ্টি ধরনের খাবার ও পানীয় গ্রহণ করার লোভ সামলাতে হবে।
কর্মক্ষেত্রের আশাপাশে বহু রেস্তোরাঁ থাকে। দুপুরে খাবার সেসব জায়গায় খেতে গিয়ে সহজেই মিষ্টি-ধরনের খাবার এড়ানো যায়।
চোখের আড়াল তো মনের আড়াল
ঘরে চিনি ও মিষ্টি খাবার রাখা বন্ধ করতে হবে।
ডা. ইশ্মিড বলেন, “চিনি দেওয়া মিষ্টি জুস, পানীয় ও মিষ্টি খাবার ফ্রিজে রাখা বন্ধ করুন। গবেষণায় দেখা গেছে একক চেষ্টার চাইতে দলগত চেষ্টায় মিষ্টি গ্রহণের পরিমাণ কমানো সহজ হয়। তাই পারিবারিকভাবে সবাই মিলে মিষ্টি খাওয়া কমালে, চিনি গ্রহণ কমবে।”
পাশাপাশি জাঙ্কফুড ও কোমল পানীয় গ্রহণের ভাবনা ভাবাও বন্ধ করতে হবে।
লোভ দমন
চিনি এড়াতে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে।
“চিনি গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর সেটা গ্রহণ করাও সহজ। আর সহজ জিনিসের প্রতি আগ্রহও বেশি জন্মায়”- বলেন ডা. ইশ্মিড।
তাই আত্মনিয়ন্ত্রণ জরুরি। এই ক্ষেত্রে ধ্যান কৌশল কার্যকর হতে পারে। মনে মনে সবসময় বলতে হবে ‘চিনি খাবন না, মিষ্টি খাব না’।
গবেষণায় দেখা গেছে আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এই ধরনের বাক্য সারাক্ষণ আওড়ালে বা শুনলে মনের ভেতর থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
মিষ্টি খাবার রাখুন যথাযোগ্য জায়াগায়
মিষ্টি খাবার রাখুন ডেজার্ট হিসেবে, সবসময় খাওয়ার জন্য নয়।
ইশ্মিড পরামর্শ দেন, “প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর দৈনিক ৬ চা-চামচের নিচে চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ সীমাবন্ধ রাখতে হবে। আর ৯ চামচের মধ্যে রাখতে হবে পুরুষের।”
আর দুই বছরের নিচে শিশুদের চিনিযুক্ত কোনো খাবার দেওয়া উচিত হবে না।
চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া কমানোর একটি কৌশল হল- নিজেই তৈরি করা। কারণ কিনে এনে সহজেই খাওয়া যায়। তবে বিশেষ কোনো মুহূর্ত বা সময় উদযাপন করতে মিষ্টি খাবার তৈরি করলে খাওয়া হবে কম।
এই পরামর্শ সবসময় কাজে লাগালে চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া কমবে। পাশাপাশি দিনে কী পরিমাণ চিনি গ্রহণ করা হচ্ছে সেটার হিসাব বা টালি করলেও মিষ্টি খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন
দৈনিক কতখানি মিষ্টি খাওয়া উচিত?