ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও যদি ত্বকে সাধারণ কিছু সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে হয়ত ময়েশ্চারাইজার কাজ করছে না।
অথবা ত্বকের প্রয়োজন এর চেয়েও বাড়তি কিছু।
নিউইয়র্কের ‘বিউটিফিক্স মেডস্পা’র কেনইয়া উইলসন এই বিষয়ে বলেন, “রিকোভারি ক্রিম সাধারণত অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজিং উপাদান দিয়ে তৈরি। এটা ত্বকের সুরক্ষার স্তর উন্নত করে, অন্যদিকে ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতার ভারসাম্যতা রক্ষা করে।”
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “রিকোভারি ক্রিম ময়েশ্চারাইজারের তুলনায় ত্বকের জন্য বেশি উপকারী। এটা ত্বক আর্দ্র রাখে, আরোগ্য করে। আর এর আরামাদায়ক উপাদান ত্বকের ক্ষয়পূরণে সহায়তা করে।”
ময়েশ্চারাইজার ও রিকোভারি ক্রিমের পার্থক্য হল এর আর্দ্রতার মাত্রা।
ময়েশ্চারাইজার ত্বকের মৌলিক আর্দ্রতা যোগায় আর রিকোভারি ক্রিম ত্বকের গভীর পর্যন্ত আর্দ্রতা প্রবেশ করতে সহায়তা করে।
কানাডা’র ‘ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো’র মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্যান্ডি স্কটনিকি এই বিষয়ে বলেন, “ত্বকের সুরক্ষায় ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে রিকোভারি ক্রিম ব্যবহার করা বেশি উপকারী।”
অতিরিক্ত শুষ্কতা
উইলসন বলেন, “ত্বকে ভালো মতো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার পরেও যদি শুষ্ক অনুভূত হয় তাহলে বুঝতে হবে ময়েশ্চারাইজার কাজ করছে না।”
ত্বকের জন্য তিনটি প্রয়োজনীয় উপাদান হল- হিউমেকটেন্ট যা ত্বকের পানি ধরে রাখে, অক্লুসিভ যা ময়েশ্চারাইজার আটকে রাখে এবং ইমুলিয়েন্ট যা ত্বক পুনর্গঠন ও কোমল রাখতে সহায়তা করে।
তৈলাক্ততা বা ব্রেকআউট
উইলসন লক্ষ করেছেন যে, ময়েশ্চারাইজার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার একটি ইঙ্গিত হল ত্বকে অতিরিক্ত তৈলাক্ততা।
আর্দ্রতার অভাব হলে ত্বক নিজে থেকেই প্রাকৃতিক তেল উৎপাদন শুরু করে। ফলে তৈলাক্ততার সমস্যা দেখা দেয়। এমন সমস্যা সমাধানে রিকোভারি ক্রিম ব্যবহার উপকারী।
জ্বলুনি, পোড়াভাব বা খসখসেভাব
নানান কারণে ত্বকে জ্বলুনি হতে পারে- পরিবেশগত, হরমোন জনিত, অতিরিক্ত ত্বকের যত্ন বা ট্রিটমেন্ট নেওয়া ইত্যাদি। এগুলোর প্রধান কারণ হল ত্বকের সুরক্ষার স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সুরক্ষার স্তর পুনরুদ্ধারে কেবল ময়েশ্চারাইজার ভালো কাজ করতে পারে না। এক্ষেত্রে ‘রিকোভারি ক্রিম’ ব্যবহার করা উপকারী।
ডা. স্কটনিকি বলেন, “রিকোভারি ক্রিম সাধারণত লালচেভাব, জ্বলুনি বা খসখসে যা সংবেদনশীল ত্বক হিসেবে পরিচিত এমন ত্বকে ব্যবহার করা হয়। সংবেদনশীল ত্বকের রোগীরা সাধারণত নানান সমস্যা যেমন- একজিমা ও রোসাসিয়াতে ভোগেন।”
এগুলো সারাতে আরামদায়ক উপাদান যেমন- সেরামাইড ও হিউমেকটেন্ট ব্যবহার করে জ্বলুনি কমানো হয়।
তিনি আরও বলেন, “যদি কোনো ট্রিটমেন্ট যেমন- মাইক্রোনিডলিং, লেজার বা কেমিকেল পিল করা হয় তাহলে ‘রিকোভারি ক্রিম’ ত্বক পুনর্গঠন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।”
মোদ্দাকথা হল, সাধারণ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও যদি জ্বলুনি, খসখসেভাব ইত্যাদি দেখা দেয় তবে ত্বক পরিচর্যায় অবশ্যই ‘রিকোভারি ক্রিম’ বা ত্বক পুনর্গঠন করে এমন ক্রিম রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: