স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডের পর যে মামলাটি করেছিলেন বাবুল আক্তার, অকার্যকর সেই মামলাটির নথিপত্র বিচার বিভাগের হেফাজতে থাকবে।
Published : 23 Aug 2021, 08:11 PM
স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের বাদী থেকে আসামি বনে যাওয়া সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল নিজেই পুলিশের হেফাজত থেকে ওই নথিপত্র বিচার বিভাগের হেফাজতে নিতে আবেদন করেছিলেন।
তাতে সাড়া দিয়ে সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমান আদেশ দিয়েছেন বলে বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার ডকেট (নথিপত্র) জুডিশিয়াল হেফাজতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের আওতায় থাকবে। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট যাকে কাস্টডিয়ান (ম্যাজিস্ট্রেট) নির্ধারণ করবেন, তার অধীনে ট্রাঙ্কে সিলগালা করা অবস্থায় এগুলো রাখা হবে।”
২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তখন চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় ছিলেন। স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এরপর নানা নাটকীয় ঘটনায় এক পর্যায়ে পুলিশের চাকরি ছাড়েন বাবুল। তার পাঁচ বছর পর তদন্ত করে বাবুলকেই স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে পিবিআই।
গত ১২ মে বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আগে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন মেয়েজামাইকে আসামি করে মামলা করেন।
নতুন মামলার পর পিবিআই বাবুলের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে দেয়, যার মধ্যদিয়ে ওই মামলার দৃশ্যত মৃত্যু ঘটল। সেই মামলার নথিপত্র নিয়ম অনুযায়ী আদালতের জিআরও (সাধারণ নিবন্ধন) শাখায় পুলিশ হেফাজতে ছিল।
পুলিশ হেফাজত থেকে নথি সরাতে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুলের চাওয়ার কারণ কী? তার আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল বলেন, “এখন যেখানে আছে, সেখানে থাকলে ডকেট টেম্পারিং হতে পারে বলে ধারণা থেকে এই আবেদন করা হয়।”
পিবিআই গত মে মাসে মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেও তা আদালতে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। সেই গ্রহণযোগ্যতার শুনানি এখনও হয়নি বলে জানান অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল।
এদিকে সোমবার পৃথক আবেদনে বাবলু আক্তারের করা ওই মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে আসামিদের দেওয়া ১৬১ ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দি এবং চূড়ান্ত প্রতিবেদনের নকলের (কপি) জন্য মহানগর হাকিম সরওয়ার জাহানের আদালতে আবেদন করা হয়।
ইফতেখার সাইমুল বলেন, “আদালত ফাইনাল রিপোর্ট এবং ১৬১ ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দিগুলোর নকল সরবরাহের আদেশ দিয়েছেন। এতে যে তথ্য-উপাত্ত পাব, তা ভবিষ্যতে এই মামলায় কাজে আসতে পারে।”
স্ত্রী হত্যার আসামি হয়ে বাবুল চার মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন। গত ১৮ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট দুই দফায় তার পক্ষে করা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত।
গত ২৯ মে বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেনী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।
আরও খবর