দ্বিতীয় দিন খেলা ৮ বলে যে পাগলাটে ব্যাটিং করেছিলেন সাকিব আল হাসান তাতে তার বিদায়কে মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। সেই তিনি পর দিন টিকে থাকলেন প্রায় দুই সেশন। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে তৃতীয় দিন দেখা গেল শান্ত চেহারায়। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে এনে দিয়েছেন লিড, পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম শতক।
Published : 17 Mar 2017, 03:16 PM
রাতের ভাবনায় সাকিবের বদলে যাওয়া
সাকিব-মোসাদ্দেকে বাংলাদেশের সেরা লিড
‘আমি থাকলে হয়তো মোসাদ্দেক সেঞ্চুরি পেত’
সকালের সেশনের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ
ধৈর্য ধরেছি বলেই সেঞ্চুরি পেয়েছি: সাকিব
কদিন আগেই কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, সাকিবের বোলিং আর আগের মতো নেই। ব্যাটিংয়েও নেই নির্ভরতার চিহ্ন। তার ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শব্দ খুঁজে পান না সতীর্থরা। ব্যাখ্যা নেই ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবিরার কাছেও।
তৃতীয় দিন দেখা গেল ভিন্ন এক সাকিবকে। খেললেন দায়িত্ব নিয়ে। আচমকা কিছু পুল ছাড়া তৃতীয় দিন খুব বেশি ঝুঁকি নেননি। খেলার চেষ্টা করেছেন বল অনুযায়ী। ভাগ্যের কিছুটা সহায়তা পেয়েছেন এদিনও। ৪১ রানে বেঁচে গেছেন রান আউট হতে হতে। ৬৭ রানে রঙ্গনা হেরাথের বলে ক্যাচ ছেড়েছেন উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকভেলা। আগের দিন ১১ রানে তার ক্যাচ ছেড়েছিলেন উপুল থারাঙ্গা।
১৮ রান নিয়ে খেলা শুরু করা সাকিব লাঞ্চের কিছুক্ষণ আগে ৬৯ বলে পৌঁছান অর্ধশতকে। আগের দিনের তিনটি চারের সঙ্গে যোগ হয় আরও দুটি। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে গড়েন ৯২ রানের জুটি। অধিনায়কের বিদায়ের পর দলকে এগিয়ে নেন অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে।
চমৎকারভাবে সামলেছেন দ্বিতীয় নতুন বল। দারুণ সহায়তা করেছেন তরুণ মোসাদ্দেককে। দিলরুয়ান পেরেরাকে সুইপ করে সাকিব শতক পাওয়ার পর তাকে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান যেভাবে জড়িয়ে ধরলেন তাতেই অনেক কিছু বলা হয়ে গেল।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাকিবের আগের সর্বোচ্চ ছিল ৯৬ রান। ২০০৮ সালে ২৮৭ মিনিট ক্রিজে থেকে ২১২ বলে করেছিলেন এই রান। দেশটির বিপক্ষে প্রথম তিন অঙ্কের স্কোরে ছাড়িয়ে গেলেন চারটি শতক করা মুমিনুল হককে।
মুশফিকের সমান পাঁচটি টেস্ট শতক হল সাকিবের। ৬ শতক নিয়ে দুই নম্বরে মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবার ওপরে থাকা তামিম ইকবালের শতক ৮টি।
এক সময় লিডের আশা হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ চা-বিরতির সময় ৯০ রানে এগিয়ে। এদিন যে ব্যাটিং সাকিব করেছেন, সেটা পারেন বলেই তার দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকালের ব্যাটিং নিয়ে এতো প্রশ্ন উঠে।
শতক করে সমালোচনার জবাব হয়তো দিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। একই সঙ্গে নিজেও হয়তো বুঝতে পেরেছেন অমন ক্ষ্যাপাটে ব্যাটিংয়ে টেস্টে বেশি দূর যাওয়া যায় না।