শুরুতে কলিম শরাফীর জীবনী নিয়ে নিশাদ হোসেন রানা নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র 'পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া' প্রদর্শন করা হয়।
Published : 08 May 2024, 10:27 PM
প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী কলিম শরাফীর শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করল উদীচী।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে উদীচী আয়োজন করে আনন্দ অনুষ্ঠান।
কলিম শরাফী উদীচীর সাবেক সভাপতি ছিলেন। অনুষ্ঠানে গান, নাচ, আবৃত্তি পরিবেশনের পাশাপাশি স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে তাকে স্মরণ করা হয়।
শুরুতে কলিম শরাফীর জীবনী নিয়ে নিশাদ হোসেন রানা নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র 'পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া' প্রদর্শন করা হয়। এরপর কলিম শরাফীর জীবনী পাঠ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি বেলায়েত হোসেন।
'আকাশ ভরা সূর্য তারা' গানের সাথে নেওয়াজ মৃন্ময় রহমানের একক নৃত্য পরিবেশনায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। পরে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সঙ্গীত বিভাগের শিল্পীরা পরিবেশন করেন দু'টি সমবেত সঙ্গীত। তারা পরিবেশন করেন 'অবাক পৃথিবী অবাক করলে তুমি' এবং 'থেমো না, থেমো না' গান দুটি।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম।
কলিম শরাফীর জীবন, কর্ম ও আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, সাংবাদিক আবেদ খান, চিত্রশিল্পী আব্দুল মান্নান, আবু তাহের এবং সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়।
সারোয়ার আলী বলেন, “কলিম শরাফী বহু গুণে গুণান্বিত একজন মানুষ। তার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে উদীচী, এজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে সংস্কৃতি এবং রাজনীতির মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন কলিম শরাফী।”
তার সাংগঠনিক দক্ষতার কথা উল্লেখ করে সারোয়ার আলী বলেন, “অনেক সংগঠন তিনি দাঁড় করিয়েছেন। তার যে আপোষহীন বৈশিষ্ট, তার গুণগুলোকে ধারণ করতে পারলে বাংলাদেশ বদলে যাবে।”
আবেদ খান বলেন, “আমার স্মৃতিতে কলিম ভাই এত জীবন্ত! তার স্নেহ, তার সেই কণ্ঠ এখনো মনে পড়ে। সত্যকে ধারণ করার যে অসামান্য ক্ষমতা, সংগ্রামী চেতনাকে বয়ে নেয়ার জন্য তার যে সাহস- তা বিরল।”
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় আবৃত্তি বিভাগের বাচিক শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন মহাদেব ঘোষ, ইকবাল ইউসুফ, মাহমুনা ঐশী এবং মায়েশা সুলতানা ঊর্বি।
এছাড়া, দু'টি সম্মেলক সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সঙ্গীত বিভাগের শিল্পীরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
১৯৬৮ সালে উদীচী প্রতিষ্ঠার পরের বছরই কলিম শরাফী সংগঠনটির সাথে যুক্ত হন এবং স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে যুদ্ধাপরাধী গোলম আযমের বিচারের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত গণ-আদালতের অন্যতম বিচারক ছিলেন কলিম শরাফী।