সম্প্রতি একটি আদালত বৈষম্যবিরোধী আইনের আওতায় নারী লাউঞ্জে পুরুষদের প্রবেশের সুযোগ দিতে নির্দেশ জারির পর তাসমানিয়ার মোনা জাদুঘর এ চেষ্টা শুরু করেছে।
Published : 08 May 2024, 10:32 PM
অস্ট্রেলিয়ায় একটি জাদুঘর তাদের নারী লাউঞ্জকে কেবলমাত্র নারীদের স্থান করে রাখার জন্য লড়ছে। সম্প্রতি একটি আদালত বৈষম্যবিরোধী আইনের আওতায় নারী লাউঞ্জটিতে পুরুষদের প্রবেশের সুযোগ দিতে নির্দেশ জারির পর জাদুঘরটি এ চেষ্টা শুরু করেছে।
তাসমানিয়ার `মিউজিয়াম অব ওল্ড অ্যান্ড নিউ আর্ট' (মোনা) আদালতের আদেশ মেনে নিতে রাজি নয়। মঙ্গলবার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ আপিলও করেছে।
এতে বলা হয়েছে, “ঐতিহাসিকভাবে এবং বর্তমান সমাজেও নারীরা যেসব অসুবিধায় পড়েন, সেই দিকগুলোর বিষয়ে আদেশে অত্যন্ত সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, লেডিস লাউঞ্জ কীভাবে পুরুষদের জন্য সমান সুযোগ করে দিতে পারে সেটিও বোধগম্য নয়।”
নারী লাউঞ্জটি যে আমেরিকান শিল্পী ২০২০ সালে চালু করেছিলেন, সেই কৃশা কাচেলে বলেছেন, আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করবেন তিনি। তবে আদালতের আদেশ এবং আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তা করা হবে।
এক্ষেত্রে কাচেলের পরিকল্পনা হল, সবুজ মখমলে মোড়ানো নারীদের লাউঞ্জটিকে নারী শৌচাগার এবং গির্জায় রূপ দেওয়া। তাতে নিয়মের মধ্যে থেকেই এ স্থানটিকে কেবল নারীদের জন্য বহাল রাখা যাবে। পুরুষরা আর তা দেখার সুযোগ পাবেন না।
কৃশা কাচেলের তৈরি ‘লেডিস লাউঞ্জ’টিতে বেশকিছু বিখ্যাত শিল্পকর্ম আছে। পিকাসো থেকে শুরু করে সিডনি নোলামের মতো চিত্রশিল্পীদের আঁকা ছবি আছে সেখানে। তবে আদালত সেখানে পুরুষ প্রবেশের আদেশ দেওয়ার পর লাউঞ্জটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা জ্যাসন লাউ লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ তুলে গতবছর এপ্রিলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, তাকে লাউঞ্জে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপরই আদালত গতমাসে লাউঞ্জে পুরুষ প্রবেশের ওই আদেশ দিয়েছে।
এখন লাউঞ্জটির রূপান্তর প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমে কাচেলে বলেন, “লেডিস লাউঞ্জে চমৎকার শৌচাগার আসছে। লাউঞ্জের গ্যালারিতে শৌচাগার তৈরি হবে। সেই গ্যালারিতে আছে ভাল কিছু চিত্রকর্ম। শৌচাগারের সুবাদে লেডিস লাউঞ্জ নতুন নামে কেবল নারীকক্ষ হিসাবে বহাল থাকবে। পুরুষেরা তা দেখার সুযোগ পাবে না।
“পিকাসোর আঁকা ছবির মতো ভাল ভাল আরও কিছু চিত্রকর্ম সেখানে স্থানাস্তর করা হবে। কোনও দর্শকের শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লেও যাতে তার ছবি দেখায় ছেদ না পড়ে, সে জন্যই এমন ব্যবস্থা করা হবে।
“আগামী ৪৫ দিনের মধ্যেই শৌচাগার তৈরি হবে। পুরুষরা সেখানে যেতে চাইলে কেবল রোববারে তা পারবেন। তবে কাপড় ইস্ত্রি ও ভাঁজ করা শেখার জন্য তারা সেখানে যাবেন।
“সেদিন নারীরা সেখানে ধোয়া কাপড় নিয়ে আসবেন। আর পুরুষেরা সেগুলো ভাঁজ করার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন।” জাদুঘরের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন কাচেলে। আদালতের আদেশ ‘ছদ্মবেশে আশীর্বাদ’ হয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।