ভবিষ্যতে নির্বাচনি আচারণবিধি প্রতিপালনের শর্ত দেওয়া হয়েছে তাদের।
Published : 14 Dec 2023, 09:22 PM
আচরণবিধি লঙ্ঘনের পর অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে ‘ভবিষ্যতে প্রতিপালনের’ শর্তে আওয়ামী লীগের চার প্রার্থীকে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন, যারা সবাই বর্তমানের সাংসদ।
বৃহস্পতিবার পৃথকভাবে চিঠি দিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী, মো. এনামুর রহমান, মেহের আফরোজ চুমকি ও মৃণাল কান্তি দাসকে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাদের ‘ভবিষ্যতে নির্বাচনি আচারণবিধি প্রতিপালন করার শর্ত’ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠায় তাদের শোকজ করেছিল নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। কমিটির কাছে ব্যাখ্যাসহ আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে তারা আশ্বাস দেন।
তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি ভেঙে তারা কর্মসূচি পালন করেছিলেন।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ গোলাম দস্তগীর গাজী অস্ত্রসহ কর্মী নিয়ে গত ২৯ নভেম্বর শোভাযাত্রা করে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
একই দিন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোঃ এনামুর রহমান মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় হাজার খানেক কর্মী সমর্থক নিয়ে মিছিল করেন।
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ মনোনয়নপত্র জমার সময় ২৯ নভেম্বর কালিগঞ্জে শোডাউন করেন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস গত ২৭ নভেম্বর মুন্সিগঞ্জ গোলচত্বরে সভা সমাবেশ করেছিলেন।
সাবের ও আবু হোসেনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিটি
আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আগাম প্রচার করায় ঢাকা-৯ আসনে নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী এবং ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেরকে ১৯ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে কমিটি।
বৃহস্পতিবার নির্বাচনী অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. তসরুজ্জামান এ সংক্রান্ত নোটিস দিয়েছেন।
সাবেরের আসনে গত ৭, ১২ ও ১৪ ডিসেম্বর অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচনি এলাকা পরিদর্শনকালে খিলগাঁও, মুগদা ও সবুজবাগসহ কয়েকটি স্থানে নির্বাচনি প্রতীকসহ প্রার্থীর ছবি, সমর্থকদের আগাম প্রচারণামূলক পোস্টার দেখতে পায়।
এটা নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম উল্লেখ করে নোটিসে বলা হয়েছে, কমিটির কাছে (যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত-২) ব্যক্তিগত বা মনোনীত একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে হজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
অপরদিকে ঢাকা-৪ আসনে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, বিক্রম প্লাজাসহ কয়েক জায়গায় আগাম প্রচারণামূলক পোস্টার ব্যানার অপসারণ না করায় এ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেনকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নোটিস দিয়েছেন নির্বাচনি অনুসন্ধান কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান।
শতাধিক প্রার্থীকে শোকজ
এখন পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি শতাধিক প্রার্থীকে শোকজ করে। এদের মধ্যে যাদের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাদের পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে ইসিতে প্রতিবেদন দেয় অনুসন্ধান কমিটি।
এছাড়া প্রতীক বরাদ্দের আগেই জনসভা করে ভোট চাওয়ার অভিযোগে ঝালকাঠি-২ আসনের নৌকার প্রার্থী আমির হোসেন আমুর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাকে আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে কমিশনে সশরীরে এসে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হবে। পরদিন প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৯ দিন ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে মন্ত্রীর মিছিলে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন: প্রতিমন্ত্রী এনামুরকে শোকজ