আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ (একিউআইএস) শাখা ইউএসএআইডি কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে খবর দিয়েছে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ।
Published : 26 Apr 2016, 04:37 PM
সোমবার বিকালে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় পার্সেল দেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হয় ইউএসএআইডি বাংলাদেশের কর্মসূচি কর্মকর্তা জুলহাজ (৩৫) ও তনয়কে (২৬)।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অ্যাসিসটেন্ট জুলহাজ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির খালাত ভাই। তিনি সমকামী ও হিজড়া অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত সাময়িকী ‘রূপবান’ সম্পাদনায় যুক্ত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের একদিনের মাথায় মঙ্গলবার বিকালে একিউআইএসের দায় স্বীকারের খবর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে সাইট।
এর আগেই একিউআইএসের বাংলাদেশ শাখা আনসার আল ইসলামের মুখপাত্র মুফতি আব্দুল্লাহ আশরাফের নামে টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে ‘তাদের দুঃসাহসী মুজাহিদিনরা এই দুজনকে হত্যা করেছে’ বলে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে জুলহাজ মান্নানকে ‘বাংলাদেশে সমকামিতা প্রসারের পথিকৃৎ’ ও ‘সমকামীদের গুপ্ত সংগঠন রূপবানের পরিচালক’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। আর ‘সামির মাহবুব তনয়’ হিসেবে তনয়কে জুলহাজের সহযোগী পরিচয় দেওয়া হয়েছে।
“ক্রুসেডার আমেরিকা ও তার ভারতীয় মিত্রদের সাহায্য নিয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে এই ভূ-খণ্ডের অধিবাসীদের মাঝে সমকামিতার মত জঘন্য অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিল এই বেতনভোগী ভৃত্যদ্বয়।”
এর আগে এই ধরনের অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডের পর আইএস ও একিউআইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা এলেও সেই দাবি নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
সর্বশেষ গত শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় একিউআইএসের নামে দায় স্বীকারের খবর দিয়েছে। প্রথম দায় স্বীকারের করে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনায়।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বাইরের কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু এসব হত্যাকাণ্ডের পিছনে কারা রয়েছে তাও বের করতে পারেনি সরকার।
এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে এর মধ্যেই বাংলাদেশ সরকারকে তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, জুলহাজ ছিলেন ‘একজন আস্থাভাজন সহকর্মী, একজন প্রিয়তম বন্ধু এবং বাংলাদেশে ব্যক্তির মর্যাদা ও মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার’।
এ সম্পর্কিত আরও খবর