রাজধানীর কলাবাগানে এক সমকামী অধিকারকর্মীসহ দুই জনকে খুনের ঘটনায় পুলিশ ও পরিবারের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়েছে।
Published : 26 Apr 2016, 09:16 AM
এর মধ্যে নিহত জুলহাজ মান্নানের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমনের করা হত্যা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
আর কলাবাগান থানার এসআই শমীম আহমেদ অন্য মামলাটি দায়ের করেছেন পুলিশের ওপর হামলা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায়। এ মামলাতেও আসামি সেই অজ্ঞাতপরিচয় ৫-৬ জন।
কলাবাগান থানার এএসআই শ্যামল চন্দ্র হালদার বলেন, “দুটি মামলাই দায়ের করা হয়েছে সোমবার গভীর রাতে। কাউকে এখনো আটক করা যায়নি।”
সোমবার বিকালে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় পার্সেল দেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হয় ইউএসএআইডির কর্মসূচি কর্মকর্তা জুলহাজ (৩৫) ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়কে (২৬)।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অ্যাসিসটেন্ট জুলহাজ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক দীপু মনির খালাত ভাই। তিনি সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সাময়িকী ‘রূপবান’ সম্পাদনায় যুক্ত ছিলেন।
আর তনয় ছিলেন লোকনাট্য দলের কর্মী। পিটিএ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’ হিসেবেও কাজ করতেন তিনি।
হামলাকারীদের অস্ত্রাঘাতে ওই বাড়ির দারোয়ান পারভেজ মোল্লা আহত হয়েছেন। বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন মমতাজ নামে এক এএসআই।
ডিএমপির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার শিবলী নোমান রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, এএসআই মমতাজ হামলাকারীদের একজনের কাছ থেকে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে রাখেন, সেখানে ‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলামত’ পাওয়া যায়।
পরে পুলিশের দায়ের করা মামলায় বলা হয়, সেই ব্যাগে একটি পিস্তল, গুলি ও মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে।
কলাবাগান থানার এস আই মাহমুদ হাসান বলেন, “এএসআই মমতাজের ওপর হামলা এবং অস্ত্র পাওয়ার ঘটনায় এ মামলা করা হয়েছে।”
খুনিদের পালিয়ে যেতে দেখেছেন- এমন এক নারী জানিয়েছেন, টি শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পরিহিত পাঁচ থেকে সাতজনকে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়ে চলে যায়।
কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ধারণা দিতে পারেনি পুলিশ। তবে গত কয়েক বছরে ব্লগার, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট খুন যেভাবে হয়েছিল, জুলহাজ হত্যাকাণ্ডও ঘটেছে একইভাবে।
ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, জুলহাজকে হত্যার জন্যই খুনিরা গিয়েছিল বলে ঘটনাপ্রবাহে তাদের মনে হচ্ছে।
র্যাবের ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক আবুল কালাম আজাদও মনে করছেন, “ঘটনা পরিকল্পিত।”
এ সম্পর্কিত আরও খবর