“জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করব অস্ত্রের উৎস কোথায়। দেশের বাইরে কারও সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে কিনা,” বলেন সিটিটিসি প্রধান।
Published : 17 May 2024, 05:07 PM
পাহাড়ের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার এক নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন, যাকে সংগঠনটির ‘প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী’ বলছে পুলিশ।
গাজীপুর থেকে বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও শুক্রবার তার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিট বলছে, পাহাড়ে জঙ্গি সংগঠনের খবরে গত বছর যৌথ অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম (৩২) সমতলে আত্মগোপন করেন। বুধবার গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়েই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় গহীন বনে মাটিতে পুঁতে রাখা ড্রামে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
সিটিটিসির প্রধান, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রহিমের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অপহরণ, অবৈধ অস্ত্র, বনভূমি ধ্বংসসহ বিভিন্ন অভিযোগে নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের রামু থানায় ১২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
রহিমের অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করব এই অস্ত্রের উৎস কোথায়। দেশের বাইরে কারও সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে কিনা।
“তাদের ট্রেনিং ক্যাম্পে আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হত বলে আমরা জেনেছিলাম। কেমিকেল যেহেতু আমরা পেয়েছি, আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব কোনো জায়গায় তারা সরবরাহ করেছে কিনা।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৩ জুন শারক্বীয়ার ‘মাস্টারমাইন্ড’ শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর সংগঠনটির প্রশিক্ষণ, অস্ত্র-গুলির উৎস, অর্থায়ন সম্পর্কে ব্যাাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শামিনকে গ্রেপ্তারে আগে তার সহযোগী ইয়াসিন ও অস্ত্র সরবরাহকারী কবির আহাম্মদকে গত বছরের ৮ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়।
“জিজ্ঞাসাবাদে শামিন মাহফুজ জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টি শারক্বীয়ার সদস্যদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেবে এরকম একটা চুক্তি হয়েছিল তাদের মধ্যে। স্থানীয় অপরাধী কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিমের সঙ্গেও শারক্বীয়ার নেতারা যোগাযোগ করেন। তারাও জঙ্গি সংগঠনটিকে অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছিলেন।”
সিটিটিসি প্রধান বলেন, নও মুসলিমদের নিয়ে কাজ করার আড়ালে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার গড়ে তোলেন শামিন মাহফুজ। পরে কবির ও রহিমকে সংগঠনে যুক্ত হওয়ার ‘দাওয়াত’ দেন। তারা অস্ত্র সরবরাহ করছিলেন। কিন্তু গত বছর পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম আত্মগোপনে যান।
রহিম কক্সবাজার ও বান্দরবান এলাকায় ‘রহিম্ম্যা ডাকাত’ নামে পরিচিত জানিয়ে পুলিশ বলছে, তার দেওয়া তথ্যে দেশি-বিদেশি পিস্তল ও বন্দুক, গুলি, কার্তুজ, ধারালো অস্ত্র, দূরবীন, গ্যাস মাস্ক, ওয়াকিটকি, এসিড ও হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।