বেলারুশে পরমাণু অস্ত্র স্থাপনের ঘোষণা পুতিনের

তবে মস্কো নিজেদের অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ মিনস্কের কাছে হস্তান্তর করবে না।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2023, 04:14 AM
Updated : 26 March 2023, 04:14 AM

বেলারুশে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র স্থাপনের কথা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

তবে মস্কো নিজেদের অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ মিনস্কের কাছে হস্তান্তর করবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিবিসি জানায়, ১৯৯০ এর দশকের মাঝামাঝির পর এই প্রথম রাশিয়া অন্য কোনো দেশে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র স্থাপন করতে যাচ্ছে।

পুতিনের এভাবে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র স্থাপন বাকি বিশ্ব, বিশেষ করে পশ্চিমাদের জন্য অবশ্যই একটি বার্তা। তবে কী ইউক্রেইন যুদ্ধ পরমাণু যুদ্ধের রূপ নিতে চলেছে?

যদিও পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত সংবাদ মাধ্যমে শনিবার বলেছেন, তার এই পদক্ষেপ পরমাণু অপ্রসারণ চুক্তি লঙ্ঘন করবে না।

তিনি বরং তুলনা টেনে বলেন, ‘‘কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে তাদের (পরমাণু) অস্ত্র স্থাপন করেছে। এটা তেমনই।”

পুতিনের এই ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রাশিয়া পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমনটা তারা বিশ্বাস করে না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘আমরা আমাদের নিজস্ব কৌশলগত পারমাণবিক অবস্থানের মধ্যে সামঞ্জস্য আনার কোন কারণ দেখিনি।

‘‘আমরা নেটো জোটের সম্মিলিত প্রতিরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্ক রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের একনিষ্ঠ সমর্থক।

লুকাশেঙ্ক অনেক দিন ধরেই বেলারুশে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র স্থাপনের কথা বলে আসছেন জানিয়ে পুতিন আরো বলেন, ‘‘এখানেও অস্বাভাবিক কিছু নেই।

‘‘প্রথমত, গত কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র এটা করে আসছে। তারা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মিত্র দেশগুলোর ভূমিতে কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র স্থাপন করেছে।”

আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে রাশিয়া বেলারুশে তাদের কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রাগারের নির্মাণের কাজ শেষ করবে বলেও জানান পুতিন।

বলেন, পরমাণু অস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য অল্প কিছু ইস্কান্দার কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এরইমধ্যে বেলারুশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে কবে নাগাদ কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র বেলারুশে পাঠানো হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি এই নেতা।

১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর জন্ম নেওয়া চারটি নতুন স্বাধীন দেশ রাশিয়া, ইউক্রেইন, বেলারুশ ও কাজাখস্তানে পরমাণু অস্ত্র ছিল। ওইসব পরমাণু অস্ত্র ১৯৯৬ সালের মধ্যে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সম্প্রতি ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছে যুদ্ধের জন্য আরো সামরিক সহায়তা চেয়েছেন।

এরপরই পুতিনের এই ঘোষণা এলো।

কয়েকদিন আগে প্রায় ১৮টি দেশ ইউক্রেইনে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে একটি চুক্তি সই করে। ওই চুক্তিতে আগামী বছর কিইভকে অন্তত ১০ লাখ কামানের গোলা সরবরাহ করার কথা বলা হয়েছে।

সম্প্রতি জাপানের একটি দৈনিক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেছেন, গোলাবারুদের পরবর্তী চালান না আসা পর্যন্ত ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী দেশটির পূর্বে সম্ভাব্য পাল্টা আক্রমণ করতে পারছে না।

Also Read: ইউক্রেইন যুদ্ধের বর্ষপূর্তির আগে পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধির কথা বললেন পুতিন

Also Read: ইউক্রেইন যুদ্ধকে রাশিয়ার টিকে থাকার লড়াই প্রমাণের চেষ্টায় পুতিন