ইউক্রেইন যুদ্ধের বর্ষপূর্তির আগে পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধির কথা বললেন পুতিন

স্থল, সাগর ও আকাশভিত্তিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি এসব শক্তি জোরদার করা হবে বলে জানান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2023, 08:36 AM
Updated : 23 Feb 2023, 08:36 AM

রাশিয়া পারমাণবিক শক্তি জোরদার করার দিকে মনোযোগ বাড়ানো অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

২৩ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ‘পিতৃভূমির রক্ষক’ দিবসে এবং ইউক্রেইন যুদ্ধের এক বছর পূর্তির আগের দিন জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় পুতিন একথা বলেন।  

স্থল, সাগর ও আকাশভিত্তিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আগের মতোই পারমাণবিক ত্রয়ীর শক্তি জোরদার করতে মনোযোগ বৃদ্ধি করবো আমরা।”

পুতিন জানান, চলতি বছর প্রথমবারের মতো সারমাত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) মোতায়েন করা হতে পারে।

এই ক্ষেপণাস্ত্র একসঙ্গে অনেকগুলো পারমাণবিক বোমা বহন করতে পারে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। 

বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের সরবরাহ করা মন্তব্যগুলোতে পুতিন বলেন, “আমরা আকাশভিত্তিক হাইপারসনিক কিনজাল সিস্টেমের ব্যাপক উৎপাদন অব্যাহত রাখবো এবং সাগরভিত্তিত জিরকন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপক সরবরাহ শুরু করবো।”

শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকায় চীনের সঙ্গে সামরিক মহড়া শুরু করবে রাশিয়া। সেখানে উপকূলীয় ওই মহড়ায় যোগ দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে তারা।

এর আগে মঙ্গলবার রুশ পার্লামেন্টে দেওয়া বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ন্যাশন’ ভাষণে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্থগিত করেন। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে অস্ত্র সজ্জিত করে যুদ্ধটিকে আন্তর্জাতিক সংঘাতে পরিণত করছে বলে এ সময় অভিযোগ করেন তিনি।

পুতিন ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে প্রায় ২ লাখের মতো সেনা পাঠিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় আক্রমণের সূচনা করেন।

তখন থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৭১৯৯ জন বেসামরিক নিহত ও আরও হাজার হাজার আহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের অনুমিত হিসাব থেকে জানা গেছে।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেইন প্রত্যেকেরই অন্তত ১ লাখ সেনা হতাহত হয়েছে।

যুদ্ধের কারণে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে, তারা ইউক্রেইনের ভেতরে অথবা অন্য দেশগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়ে আছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেইনকে ‘নব্য-নাৎসীমুক্ত’ ও ‘নিরস্ত্রীকরণ’ এর প্রয়োজনেই এই অভিযান চালানো দরকার ছিল।

ইতিহাসগতভাবে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা ইউক্রেইন ও এর মিত্ররা পুতিনের ওই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বিনা উস্কানিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে।

বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক বৈঠকে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইউক্রেইনে রাশিয়ার হামলা জাতিসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন:

Also Read: ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জাতিসংঘ মহাসচিবের