‘হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা আল-শিফা হাসপাতালের ভেতর পুনরায় একত্রিত হয়ে সেখানে বসে হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করছে’ বলে অভিযোগ ইসরায়েলের।
Published : 18 Mar 2024, 02:34 PM
গাজার আল-শিফা হাসপাতালে রোববার রাতভর অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। হাসপাতাল প্রাঙ্গনে ট্যাঙ্ক প্রবেশ এবং ভারী অস্ত্রের গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে।
আইডিএফ এর একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান, আইডিএফ হাসপাতালের ‘নির্দিষ্ট কিছু অংশে নির্ভুল অভিযান পরিচালনা করছে’।
‘হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা আল শিফা হাসপাতালের ভেতর পুনরায় একত্রিত হয়ে সেখানে বসে হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করছে’ বলে অভিযোগ আইডিএফ এর।
আইডিএফ এর অভিযানের সময় গাজার হাসপাতালটির ভেতর যে আতঙ্কের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তা বর্ণনা করেছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
এক ব্যক্তি তার ভাইকে ফোনে সেখানকার পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। ওই ফোনকলটি রেকর্ড করা হয় এবং সেটি হোয়াটসঅ্যাপ এ একটি গ্রুপে পোস্ট করা হয়। বিবিসি ফোনকলটি শুনেছে।
ওই ব্যক্তি বলেন, “আমাদের চারপাশে ট্যাঙ্ক ঘুরছে। আমরা তাঁবুর ভেতর লুকিয়ে আছি। আমরা কম্পাউন্ডের চারপাশে ট্যাঙ্ক থেকে গোলা বর্ষণের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ফুটেজ ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেগুলোতে ভারী অস্ত্রের গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিবিসি থেকে ওই ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো আরেকটি ভয়েজ ম্যাসেজে হাসপাতালের ভেতর থেকে মুহাম্মদ আল-সাঈদ নামে একজনকে বলতে শোনা যায়, “ইসরায়েলি সেনারা এখানে হাসপাতাল প্রাঙ্গনের ভেতরে। যেখানে মৃত আর আহতরা পড়ে আছে এবং সেনারা কয়েকজন তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। এখানে নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”
আল-শিফায় নতুন করে এই অভিযান পরিকল্পনার বিষয়ে আইডিএফ আগে থেকে কোনো আভাস দেয়নি বলে জানায় বিবিসি।
সোমবার প্রথম প্রহরের দিকে পোস্ট করা একটি অভিও বার্তায় আইডিএফ এর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হাসপাতালে অভিযান চালাচ্ছে। ওই গোয়েন্দা তথ্যে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে’।
অভিযান চলাকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব কার্যক্রম চালাতে পারবে বলেও জানান তিনি। বলেন, রোগী বা চিকিৎসাকর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না।
তবে তিনি এও বলেছেন, হাসপাতাল প্রাঙ্গনে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা যদি সেখান থেকে চলে যেতে চান তবে তারা ‘ইভাকুয়েশন রুট’ দিয়ে চলে যেতে পাবেন। তিনি ‘হামাস সদস্যদের দ্রুত অত্মসমর্পণ’ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, এভাবে হঠাৎ করে হাসপাতালে অভিযান চালানোর বিষয়টি কে ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করেছে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে গাজার সবচেয়ে বড় এবং আধুনিক হাসপাতাল ছিল আল-শিফা। যুদ্ধের পাঁচ মাসে একাধিকবার ইসরায়েল এই হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেছে। সেখানে এখন কোনো মতে জরুরি কিছু চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।