গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর একমাস হয়ে গেলেও থামেনি বৃষ্টির মত গোলাবর্ষণ; তীব্র আক্রমণে বিধ্বস্ত গাজার উত্তরের শহর ছেড়ে দক্ষিণের পথে ঢল নেমেছে হাজারো মানুষের।
গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে যাওয়ার একটি পথ হল সালাহ এডিন স্ট্রিট। বুধবার এই পথ ধরে নারী, শিশু, বয়স্ক আর চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ছুটতে দেখা যায়। তাদের অনেকে পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিচ্ছেন দীর্ঘ পথ, কেউ চলছেন গাধা বা ব্যক্তিগত যানবাহনে।
গাজার বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যাওয়া জন্য সালাহ এডিন স্ট্রিটকে উচ্ছেদ করিডোর হিসেবে ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এই পথ ধরে যাওয়ার সময় কারও হাতে দেখা যায় লাঠিতে বাঁধা সাদা পতাকা। কেউ আত্মসমর্পণের মত করে দুই হাত উপরে তুলেও হাঁটছিলেন।
সিএনএন জানিয়েছে, নিজ শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার এই পরিস্থিতিকে ‘নাকবা’ বা বিপর্যয় হিসেবে অভিহিত করছেন ফিলিস্তিনিরা।
গাজায় অনবরত আক্রমণের মধ্যে সেখানকার বাসিন্দাদের উত্তর থেকে দক্ষিণাঞ্চলে চলে যেতে করিডোর খুলে দেওয়ার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। বুধবার সেই করিডর খোলা রাখার পঞ্চম দিনে হাজারো বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছাড়ে। প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছেই।
জাতিসংঘ বলছে, দক্ষিণের পথে রোববার গাজার ২ হাজার বাসিন্দা চলে গেছে। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ হাজারে।
ইসরায়েলের সরকার বলছে, এলাকা খালি করার ওই করিডোর দিয়ে বুধবার গাজার ৫০ হাজার মানুষ চলে গেছে। তাদের এই বক্তব্য যাচাই করা না গেলেও সিএনএন বলছে, আগের দিনের চেয়ে বুধবার আরও বিপুল সংখ্যক এলাকা ছেড়েছে।
ঘরবাড়ি ছাড়া গাজার এক বাসিন্দা সিএনএনকে বলেন, “এই যুদ্ধে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। আমাদের বাড়িঘর সব গেছে। আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। জামা-কাপড়, পানি, কিছুই সঙ্গে নিতে পারিনি।”
গত ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর থেকেই গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট বুধবার দাবি করেন, তাদের বাহিনী গাজা শহরের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। হামাসের স্থাপনা ও কমান্ডারদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালাচ্ছে। যদিও ইসরায়েলের বাহিনীর অবস্থান স্পষ্ট নয়।
এক মাস ধরে চলা আক্রমণে ১৪ হাজার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।