খুলনার মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়া থেকে আলোচিত রহিমা বেগমকে অপহরণের অভিযোগে করা মামলায় চারজনের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। তবে তার দ্বিতীয় স্বামীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে।
খুলনা মহানগর দায়রা জজ মাহমুদা খানম মঙ্গলবার দুপুরে চারজনের জামিনের আদেশ দেন বলে জানান আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবুল কালাম আজাদ।
জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া (৪০), তার ভাই দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন (৫০), প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম পলাশ (৩৬) এবং জুয়েল (৪০)।
এই মামলায় আরও দুই আসামি রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেলাল হাওলাদার ওরফে বেল্লাল ঘটক (৬০) এবং হেলাল শরীফ (৪০) কারাগারে আছেন। এর মধ্যে বেলাল হাওলাদারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একটি আবেদন রয়েছে। সেটির শুনানি এখনও হয়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) খুলনার পরিদর্শক আব্দুল মান্নান বলেন, “পাঁচ জনের জামিন আবেদন হয়েছিল। এর মধ্যে বিচারক চারজনকে জামিন দিয়েছেন। রহিমার স্বামীর জামিন আবেদন নাকচ হয়েছে। তাকে এই মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন রয়েছে। সেই আবেদনের শুনানি এখনও হয়নি।“
এ ছাড়া গ্রেপ্তার হেলাল শরীফ অন্য একটি আদালতে আওতায় রয়েছেন বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন। সেখানে তার জামিন বিষয়ে শুনানি হবে।
খুলনার মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ অগাস্ট নিখোঁজ হন ৫৫ বছর বয়সী রহিমা বেগম। সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও তার সন্ধান পায়নি বাড়ির লোকজন। পরে রাত ২টায় রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে রহিমার মেয়ে আদুরি আক্তার অপহরণের মামলা করেন। আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পুলিশের ওই ইউনিট।
৫৫ বছর বয়সী এ নারীর সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক মাস ধরে দৌড়ঝাঁপ করছিলেন তার সন্তানরা। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনও করা হয়।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুরে তার মায়ের লাশ পাওয়া গেছে বলে মেয়ে মরিয়ম মান্নান ফেইসবুক পোস্ট দেন। এরপর এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তা আলোচনায় আসে।
নিখোঁজের ২৯ দিন পর আলোচিত রহিমা বেগমকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পরের দিন আদালতে হাজির করা হলে অপহরণের দাবি করে জবানবন্দি দেন রহিমা বেগম। সেসময় মেয়ে আদুরি আক্তারের জিম্মায় তাকে মুক্তি দেয় আদালত। তিনি এখন মরিয়ম মান্নানের সাথে ঢাকার বসুন্ধরার বাসায় আছেন।
আরও পড়ুন: