মুখ খুলেছেন রহিমা বেগম, দাবি ‘অপহরণ’

অপহরণের পর তাকে অজ্ঞাতস্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি রহিমা বেগমের।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2022, 12:47 PM
Updated : 25 Sept 2022, 12:47 PM

উদ্ধার হওয়ার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর রোববার দুপুর ১টার দিকে চার মেয়ের মুখোমুখি করার পর মুখ খুলেছেন খুলনার দৌলতপুর থেকে নিখোঁজ হওয়া রহিমা বেগম।

তিনি দাবি করেছেন, নিজ বাসার আঙিনা থেকে ৪-৫ জন লোক মুখে কাপড় বেঁধে তাকে অপহরণ করেছিল।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বেলা আড়াইটার দিকে এ তথ্য জানান।

মুশফিক বলেন, শনিবার ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর কোনো কথাই বলছিলেন না রহিমা বেগম। বেলা ১টার দিকে তাকে মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ চার মেয়ের মুখোমুখি নেওয়া হয়। এ সময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

কান্নারত অবস্থায় মেয়েরা মাকে বলতে থাকেন, “আমাদের ছেড়ে আর কোনোদিন কোথাও যাবে না! আমাদের জমি দরকার নেই। তোমাকে দরকার!”

পরে অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন রহিমা বেগম।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “রহিমা বেগমকে অপহরণের পর অজ্ঞাত স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন তিনি।

“জমি-জমার বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর এবং বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তাকে একহাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেন।”

পুলিশ সুপার জানান, “রহিমা বেগমের দাবি, তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর হয়ে পূর্ব পরিচিত ভাড়াটিয়া ফরিদপুরের বোয়ালখালীর সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তার কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।”

পুলিশ সুপার মুশফিক বলেন, “আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।”

এর আগে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেছিলেন, “রহিমার কাছে সাদা রঙের একটি শপিং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে ওড়না, হিজাব, আয়না, শাড়ি, আই ড্রপ, ওষুধ, সালোয়ার-কামিজ এবং ছোট একটি হাত ব্যাগ ছিল। সাধারণত একজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেলে এই জিনিসগুলো থাকার কথা না।”

শনিবার রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে উদ্ধারের পর রহিমা বেগম ও আরও তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারির কুদ্দুসের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। কুদ্দুস এক সময় খুলনার জুট মিলে চাকরি করতেন এবং সেখানে রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ছিলেন।

গত ২৭ অগাস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমে আর বাসায় ফেরেননি রহিমা। সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও তার সন্ধান না পেয়ে বাড়ির লোকজন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে রহিমার মেয়ে আদুরি আক্তার অপহরণের মামলা করেন। আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পুলিশের ওই ইউনিট।

৫৫ বছর বয়সী এ নারীর সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক মাস ধরে দৌড়ঝাঁপ করছিলেন তার সন্তানরা।

আরও পড়ুন:

Also Read: আমার কলিজা শান্ত হয়েছে: মরিয়ম

Also Read: যেভাবে উদ্ধার হলেন রহিমা বেগম

Also Read: ‘নিখোঁজ’ খুলনার রহিমা ফরিদপুর থেকে উদ্ধার, ছিলেন ‘আত্মগোপনে’

Also Read: বস্তাবন্দি লাশটি রহিমার? নিশ্চিত হতে খুলনা থেকে ফুলপুরে মেয়েরা