সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা অতি-উৎসাহী হয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করছেন বলে অভিযোগ করেছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এসবের মাধ্যমে নির্বাচন প্রভাবিত করার ইঙ্গিত মিলছে বলে মনে করেন তিনি।
শনিবার দুপুরে রোটারেক্ট ক্লাব অব সিলেট সিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
আরিফুল হক বলেন, “প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা অতি-উৎসাহী হয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন; গণহারে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। অনেক কর্মকর্তাকে বদলিও করা হচ্ছে। এগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করারই ইঙ্গিত।
“যদি আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াই, তাহলে বুঝতে হবে প্রশাসনের এসব কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডের প্রতি সন্দেহ গভীর রূপ নিয়েছে।”
এ সময় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে ভোটের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করেন মেয়র আরিফুল।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের ছয় মাস আগে ইভিএম সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল। অথচ এখন পর্যন্ত কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত ইভিএম সম্পর্কে ভোটাররা কিছুই জানে না।”
এতদিন পর্যন্ত আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচন করবেন কিনা, তা নিয়ে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি। তবু তার ‘ইশারা-ইঙ্গিতে’তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের ধারণা হয়েছিল, টানা দুইবারের এই মেয়র হয়তো ‘বিনা যুদ্ধে’মাঠ ছাড়বেন না।
সবশেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবার ঢাকায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন আরিফ। এরপর তার নির্বাচন করা না করা নিয়ে সিলেটে বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
এ গুঞ্জনের মধ্যেই শনিবার সিলেটে ফিরে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন।
সিলেট মহানগরীর মানুষ তাকে ভালোবাসে উল্লেখ করে আরিফ বলেন, তার জন্য বিএনপি বা আওয়ামী লীগ চাপে নেই। দলগুলো তাদের অবস্থানে অনড়। তাই অহেতুক ব্যক্তি আরিফকে নিয়ে ঢালাওভাবে মন্তব্য না করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আগের মতই বললেন, “২০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি খোলাসা করা হবে।”
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ মে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ২৫ মে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে ১ জুন পর্যন্ত।
২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে চারবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০০৩ সালে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন বদর উদ্দিন কামরান। ২০০৮ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও কারাগার থেকে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
এরপর ২০১৩ সাল থেকে মেয়র পদে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী।
আরও পড়ুন:
মেয়র আরিফের ঢাকা সফর, সিলেটে গুঞ্জন
সিলেটে ভোট করার ইঙ্গিত বিএনপির আরিফের
ভোটে অংশ নেওয়ার প্রশ্নে ৩ সপ্তাহ সময় চাইলেন আরিফ
মেয়র আরিফকে নিয়ে শোভাযাত্রা; বললেন, ‘মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে মূল্যায়ন করব’
লন্ডন থেকে ‘সিগন্যাল’ নিয়ে ফিরছেন মেয়র আরিফ
নির্বাচনের আগে মেয়র আরিফ লন্ডনে, প্রার্থিতা নিয়ে জল্পনা
‘বাইরের লোক’ আনোয়ারুজ্জামান সিলেট সিটি নির্বাচনে কতটা সফল হবেন