শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম: রুমেলের অনশন তৃতীয় দিনে

রুমেল বলেন, “আমি বিসিবির সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য এই প্রতিবাদ করছি।”

জিয়া শাহীনবগুড়া প্রতিনিধি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2023, 02:03 PM
Updated : 7 March 2023, 02:03 PM

বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে বিসিবির লোকবল প্রত্যাহারসহ ভেন্যু বাতিল করার প্রতিবাদ এবং জেলার উন্নয়নের দাবিতে রুমেলের আমরণ অনশনের তৃতীয় দিন পার হয়েছে।

গত বুধবার বিসিবি এক নির্দেশে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে থাকা বিসিবির সব মালামাল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে পাঠিয়ে দিতে বলে। একইসঙ্গে বগুড়ায় কর্মরত বিসিবির ১৭ জনকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঢাকায় রিপোর্ট করতে বলা হয়। এই ১৭ জনের মধ্যে ভেন্যু ম্যানেজার ছাড়াও আছেন কিউরেটর, সুপারভাইজার, অফিস সহকারী, নৈশ প্রহরী। 

এর প্রতিবাদে গত রোববার সকাল ৯টা থেকে বগুড়ার জিরো পয়েন্ট সাতমাথার ফুটপাতে অনশনে বসা মো. রুমেল শহরের নাটাইপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জালাল উদ্দীনের ছেলে। 

রুমেলের এই কর্মসূচিতে নানা জন নানা কথা বললেও তিনি সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথার ফুটপাতে কাফনের সাদা কাপড় পড়ে শুয়ে রয়েছেন তিনি। কখনও রোদ, কখনও ছায়ায় থাকলেও রয়েছে মশা-মাছির উৎপাত। মশা-মাছি থেকে বাঁচতে মুখে, চোখে লাল রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখেন।

সন্ধ্যায় রুমেলের সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধির।

রুমেল বলেন, কয়েকজন এসে বলে গেছে স্যালাইন দেবে এবং চিকিৎসক আসবে; কিন্তু কথা পর্যন্তই; কেউ আসেনি।

“মুক্তিযুদ্ধার সন্তান আমি। আজ সকালে যখন ৭ই মার্চের অনুষ্ঠান হলো সাতমাথায় দলীয় কার্যালয়ে। সেই সময় কিছু লোক এসে আমাকে ভণ্ড বলে গালি দিল। কেউ কেউ বলল, তুমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তুমি কেন এটা করছ। তোমাকে দেখে বিরোধীরাও উৎসাহ পাবে। কয়েকজন এসে কানে কানে বলেছে, আমার সাথে গোপনে এসে খেয়ে আবার অনশনে বসো।”

তিনি বলেন, “আমি বুঝেছি ওরা আমাকে ভুয়া বানাতে চায়। আমি বিসিবির সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য এই প্রতিবাদ করছি। এ ছাড়া অন্য কিছু নয়।”

রুমেলকে কেউ কেউ বিভ্রান্ত করতে চায় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

“আমার একটাই প্রতিবাদ, বিসিবি মাঠটি ফেরাক। অনেকে ইউটিউব, পত্রিকা, ফেইজবুকে লেখা দেখাচ্ছে। মাঠ রেখে উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছে। ওসব রাজনীতির মাঝে আমি নেই। মাঠ চাই, একদিনের নোটিসে মাঠ উধাও! প্রয়োজনে জেলা ক্রীড়া সংস্থার খেলা বন্ধ করতে পারত। বন্ধ না হলে ব্যাবস্থা নিত। ২০০৬ সালের পর কেন বিসিবি আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত করতে পারল না?”

৪৮ ঘণ্টা না খেয়ে কেউ থাকলে সে তো মৃত্যুশয্যায় চলে যায়, স্যালাইন দিয়ে হাসপাতালের নেওয়া হয়; কিন্তু আপনাকে স্যালাইনও দেওয়া হয়নি। দিব্যি কথা বলছেন। 

এর উত্তরে রুমেল বলেন, “আমার বাসায় খোঁজ নিন, আমি মাঝে মাঝে ৫/৬ দিন না খেয়ে থাকি, কিছুই হয় না আমার।”

বগুড়া সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু বলেন, ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১৪ দিন পরও জীবিত মানুষ উদ্ধার হয়েছিল। কতদিন না খেয়ে থাকতে পারবে তা ‘ম্যান টু ম্যান ভেরি’ করে। তুরষ্ককের ভুমিকম্পের কত দিন পর শিশু উদ্ধার হয়েছে?

“তবে আমি শুধু ডাক্তার নই, খেলোয়াড় হিসেবেও কথা বলেছি রুমেলের সঙ্গে। লোক রেখেছি, সমস্যা হলে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য।”

 আরও পড়ুন

শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে এখন গরুর হাট, জুয়ার বোর্ড বসবে: হিরো আলম

শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম: বিসিবির সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠেছে বগুড়াবাসী

বগুড়ায় বিসিবির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ‘কাফনের কাপড়’ পরে অনশনে যুবক

শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম নিয়ে বিসিবির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি

শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে বিসিবির মালামাল ও লোকবল প্রত্যাহার