টেস্টে টানা ১২ ইনিংসে পঞ্চাশছোঁয়া জুটি নেই বাংলাদেশের ওপেনারদের, আড়াই বছর ধরে শতক ছুঁতে পারছে না উদ্বোধনী জুটি।
Published : 20 Apr 2025, 01:52 PM
‘কঠিন সময়টা পার করে বাজে বলে আউট হয়ে গেল’- সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ছাদে নিজের বিরতির সময় কাটাতে এসে হতাশা প্রকাশ করছিলেন এক ধারাভাষ্যকার। আধঘণ্টা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে পরে দ্রুতই দুই ওপেনারের বিদায় দেখেই তার অমন মন্তব্য। পরমুহূর্তেই যেন নিজেকে সান্ত্বনা দিলেন তিনি, ‘অন্তত ১০ রানে ২ উইকেট তো দেখতে হয়নি…!’
সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের প্রায় সব ম্যাচেই ধারাভাষ্য কক্ষে থাকেন তিনি। তাই স্বাগতিকদের ওপেনারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফটা তার চেনা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও সেই গ্রাফ উর্ধ্বমুখী নয়।
প্রথম টেস্টের প্রথম ঘণ্টায়ই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এই চাপ অবশ্য গত দুই-আড়াই বছর ধরেই বাংলাদেশের সঙ্গী। নিয়মিতই উদ্বোধনী জুটি ভেঙে পড়েছে অল্প রানে। এবার তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও ওপেনারদের বন্ধন ছিল মাত্র ৮.৪ ওভার।
ব্লেসিং মুজারাবানি ও রিচার্ড এনগারাভার টানা ৮ ওভারের পর বোলিংয়ে আসেন ভিক্টর নিয়াউচি। এলোমেলো শুরু করা মিডিয়াম পেসারের চতুর্থ বলে খোঁচা মেরে গালিতে ক্যাচ দিয়ে বসেন সাদমান ইসলাম। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ৩১ রান।
এ নিয়ে টানা ১২ ইনিংসে পঞ্চাশ ছুঁতে পারল না বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। এই সময়ে প্রথম উইকেটে ৩০ রানের জুটি এটিই প্রথম।
শতরানের উদ্বোধনী জুটি খুঁজতে ফিরে যেতে হবে আরও অনেক পেছনে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ১২৪ রান যোগ করেছিলেন জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
এরপর ৩২ ইনিংস ধরে আর জুটি বেধে শতক ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশের ওপেনাররা। এই সময়ের পঞ্চাশছোঁয়া উদ্বোধনী জুটিই দেখা গেছে মোটে দুইটি।
টানা ব্যর্থতার পরও ওপেনারদের সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন বলেছিলেন, তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ হওয়ায় ফর্মহীন ওপেনারদের রানে ফেরার সুযোগ মনে করছেন তারা। প্রথম ইনিংসে সেই আশা মেটেনি।
মাত্র ১৪ রান করে ফেরেন সাদমান। সবশেষ সাত ইনিংসে তার ফিফটি মাত্র একটি। আর তিন অঙ্ক নেই ২৫ ইনিংসে। এই সময়ে অবশ্য তিনটি ফিফটি করেছেন ২৯ বছর বয়সী বাকি ওপেনারদের তুলনায় মন্দের ভালো!
সাদমান আউট হওয়ার এক ওভার পর নিয়াউচির আরেকটি অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শেষ হয় মাহমুদুল হাসান জয়ের ইনিংস। কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন ১২ রান করা ২৪ বছর বয়সী ওপেনার।
২০২৩ সালের নভেম্বরে সিলেটেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ ফিফটি করেছিলেন জয়। এরপর ১৬ ইনিংসে তিনি চল্লিশ ছুঁতে পেরেছেন মাত্র একবার। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৭ রানের পর ২৯ ইনিংস ধরে তিন অঙ্কের দেখা নেই তার।
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হওয়ার সুযোগ অবশ্য এখনও শেষ হয়ে যায়নি সাদমান বা জয়ের। সিরিজের মাত্রই শুরু। কিন্তু প্রভাতের সূর্যে আশার ঝিলিক ফুটে উঠল না।