বিকালে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমাবেশে বক্তৃতা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 04 Dec 2022, 11:57 AM
এক দশক পর চট্টগ্রাম নগরীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
রোববার সকাল হেলিকপ্টারে করে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীতে পৌঁছে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) ৮৩তম লং কোর্সের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন সরকারপ্রধান।
সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে তিনি চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে নামবেন। বিকালে নগরীর পলোগ্রাউন্ডে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা শাখা আয়োজিত সমাবেশে বক্তৃতা দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে যাবেন বেলা ৩টায়। তার আগে দুপুর ১২টায় শুরু হয়েছে স্থানীয় নেতাদের বক্তৃতা। আর সকাল ১০টা থেকে মঞ্চে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ভোর থেকেই রঙবেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে, ব্যান্ড বাজিয়ে রঙিন টুপি পরা নেতাকর্মীরা পলোগ্রাউন্ডে আসছেন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের মধ্যে রয়েছেন।
সমাবেশ শুরুর আরো কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকতেই অনেকটা পূর্ণ হয়ে গেছে জনসভাস্থল। বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা কর্মীদের গায়ে স্থানীয় এমপি ও নেতাদের ছবি সম্বলিত টি শার্ট, হাতে শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ফেস্টুন, ব্যানার দেখা যাচ্ছে। ফুল আর পতাকায় সাজানো একটি নৌকাও দেখা গেছে সভাস্থলে।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন গত ২৯ নভেম্বর পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন, এ জনসভা মাঠের আশপাশ মিলিয়ে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃতি পাবে বলে তারা ধারণা করছেন। ভিড় সামাল দিতে চট্টগ্রামের পাশ্ববর্তী জেলার নেতাকর্মীদের সমাবেশ আসতে তারা নিরুৎসাহিত করছেন।
মাঠে শেখ হাসিনার জন্য ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যর মঞ্চটি তৈরি করা হয়েছে নৌকার আদলে। সেখান অন্তত ২০০ জন বসতে পারবেন। মঞ্চের সামনে বড় গোল আকৃতির বোর্ডে লেখা ‘নৌকায় ভোট দিন’।
এ মঞ্চ থেকেই বিকালে এক হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং এক হাজার ৪৫৩ কোটি টাকার চারটি প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করবেন।
শনিবার জনসভার প্রস্তুতি দেখতে পলোগ্রাউন্ডে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “এই চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দুর্জয় ঘাঁটি। আগামীকাল ঐতিহাসিক স্মরণকালের সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ হবে এই আশা করছি।”
এর আগে ২০১৮ সালের ২১ মার্চ পটিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে চট্টগ্রামে ২০১২ সালের ২৮ মার্চ ১৪ দলের জনসভার পর নগরীতে প্রধানমন্ত্রীর আর কোনো সমাবেশ হয়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রোববারের জনসভা থেকে শেখ হাসিনার নতুন ঘোষণা আসবে।
“আগামী দিন নিয়ে নেত্রী তার ইচ্ছা ব্যক্ত করবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ ছিল আমাদের নির্বাচনী ওয়াদা। আমাদের এবারকার নির্বাচনী ওয়াদা স্মার্ট বাংলাদেশ। এবং এ সম্পর্কে তিনি কী করতে চান, তা বলবেন।
“ভবিষ্যত করণীয় বলবেন। আজ সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তির যে উত্থান, এর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের শক্তির বৃহত্তর ঐক্য সম্পর্কেও কথা বলবেন। সাম্প্রদায়িক শক্তির যে উত্থান বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায়, এর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ স্বাধীনতার আদর্শে যারা বিশ্বাস করে, আজ তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এবং এবারে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংকট বিষয়ে বলবেন।”
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বলছেন, এটা তাদের দলের নির্বাচনী জনসভা। তাই দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন তাদের নেত্রী।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, “চট্টগ্রাম নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছে কখনোই কিছু চাইতে হয় না। তিনি ভিশনারি সব প্রকল্প নিজে থেকেই দিয়েছেন। হয়ত কালও সেরকম কিছু চমক দিতে পারেন। যা আমরা কেউ ভাবিইনি।
“আর যেহেতু আগামী বছর নির্বাচন, তাই আগামীকাল অবশ্যই দলীয় নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা দেবেন নেত্রী। আমাদের কর্তব্য উনার নির্দেশনা অনুসারে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়া।”
পুরনো খবর:
‘বদলে যাওয়া’ চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী দেবেন ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ রূপরেখা
নবরূপে ফিরছে সেই লালদিঘী ময়দান
চট্টগ্রামে 'স্মরণকালের সর্ববৃহৎ' সমাবেশ হবে: কাদের
চট্টগ্রামের জনসভায় প্রতি উপজেলা থেকে ২০০ বাস ভরে আনার লক্ষ্য আওয়ামী লীগের