চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার জনসভার মঞ্চ হবে নৌকার আদলে

দাবি করা হচ্ছে, চট্টগ্রামে এত বড় মঞ্চ আগে কোনো রাজনৈতিক দলের জনসভায় হয়নি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2022, 09:43 AM
Updated : 29 Nov 2022, 09:43 AM

আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই জনসভার মঞ্চ তৈরি হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে, যা চট্টগ্রামে আগের যে কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চের চেয়ে বড় বলে দাবি করা হচ্ছে।

এই জনসভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো প্রচার-প্রচারণায় এখন ব্যস্ত। পোস্টার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগরীর বিভিন্ন অলিগলি ও মূল সড়কগুলোও। ‍

আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, তাদের সাংগঠনিক শক্তি বিবেচনায় পলোগ্রাউন্ড মাঠের আশ-পাশের অন্তত কয়েক কিলোমিটারজুড়ে তাদের জনসমাগম হবে। 

ক্ষমতাসীন দলটির জনসভার আগে-পরে নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। 

মঙ্গলবার পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শন করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ৪ ডিসেম্বর জনসভার জন্য পুরো চট্টগ্রাম নগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। নগর পুলিশের ছয় হাজার ফোর্সের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও দেড় হাজার ফোর্স আনা হচ্ছে নগরীতে।   

তিনি বলেন, “অনেক বছর পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসছেন, যা চট্টগ্রামবাসীর জন্য বড় উৎসব। পাশাপাশি সিকিউরিটি পয়েন্ট থেকে সিএমপি’র জন্য বড় আয়োজনের ব্যাপার। সে ব্যাপারে আমদের প্রস্তুতি আছে।”

সিএমপি কমিশনার জানান, এসএসএফ’র পরামর্শে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ নিয়োজিত হচ্ছে। সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে প্রধানমন্ত্রীর সফরটি যাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যে সম্পন্ন হয়।

‘সর্বৃবহৎ’ মঞ্চ

সমাবেশের যে মঞ্চ তৈরি হচ্ছে, তা চট্টগ্রামে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ বলে দাবি করেছেন মঞ্চ তৈরির কাজে নিয়োজিত শাহাবউদ্দিন ডেকোরেটার্সের মালিক ও ২১ নং জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. শাহাবউদ্দিন।

তিনি বলেন, “৪ লাখ ৭৫ হাজার বর্গফুটের পলোগ্রাউন্ড মাঠ। এ মাঠে ছয় ফুট উচ্চতা এবং ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সমাবেশস্থলের মঞ্চটি তৈরি করা হচ্ছে নৌকার আদলে। যেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন।”

শাহাবউদ্দিন জানান, নৌকাসহ মঞ্চটির দৈর্ঘ্য ১৬০ ফুট হলেও মূল মঞ্চটির দৈর্ঘ্য ৯০ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট। যেখানে একসঙ্গে অন্তত ২০০ লোক বসতে পারবেন।

এছাড়া মঞ্চের পশ্চিম পাশে ভিআইপিদের জন্য এবং পূর্ব পাশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা করে মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। আর মূল মঞ্চের সামনে ৯০ মিটার জায়গা খালি রেখে সামনে নারীদের বসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান শাহাবউদ্দিন।

মাঠ ছাড়িয়ে যাবে জনসভা

সমাবেশস্থলের আশেপাশে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে জনসমাগম হবে বলে ধারণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির বলেন, “আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নগর আওয়ামী লীগ জনসভা করেছে। তবে এটি হচ্ছে প্রায় ১২ বছর পর।

“পূর্ব অভিজ্ঞতা ও আওয়ামী লীগের যে সাংগঠনিক শক্তি আছে সেখানে পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিপূর্ণ করা কোনো বিষয় না। পলোগ্রাউন্ডের আশেপাশে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে জনসমাগম হবে।”

এ সমাবেশের আয়োজক চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা শাখা।

নাছির বলেন, “এ তিন জেলায় যে সব আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির লোকজন আছে, তাতেই এখানটা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।

“তাই আশেপাশের জেলাগুলোকে আমরা বিনয়ের সাথে অনুরোধ করেছি, তারা যেন ওইদিন সমাবেশে না আসে।”

পরীক্ষার্থীদের সময় নিয়ে বের হতে অনুরোধ

এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যে এই জনসভা হচ্ছে। ৪ ডিসেম্বরও পরীক্ষা রয়েছে। সেদিন সকাল- বিকাল দুই বেলা মিলে ১ হাজার ৪০০ করে মোট ২ হাজার ৮০০ জনের পরীক্ষা রয়েছে বলে পুলিশের হিসাব।

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, “অনুরোধ করছি, ওই দিন যেন পরীক্ষার্থীরা অন্তত এক ঘণ্টা হাতে সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। তবুও যদি কেউ কেন্দ্রে পৌঁছাতে সমস্যার মুখোমুখি হয়, তাহলে তারা যেন ৯৯৯ এবং পুলিশের নম্বরে ফোন করে। পুলিশ নিজেদের গাড়িতে তাদের পৌঁছে দেবে।”