সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসনই দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
Published : 17 Dec 2023, 12:25 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন ভাগাভাগি নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো যখন নানা তথ্য প্রকাশ করছে, তখন আনুষ্ঠানিক কোনো হিসাব না দিয়ে সাংবাদিকদের বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে বললেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সমঝোতা আমাদের মধ্যে আছে। এখানে কোনো প্রকার অশোভন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আমরা বসেই আলোচনা করেছি। আজকেও টেলিফোনে কথা বলেছি।
"আমাদের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যা জাতীয় পার্টিকে আমরা দিয়েছি। সবশেষ কতজনে সমঝোতা হল সেটা জানতে বিকাল পর্যন্ত আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে।"
রোববার বিকাল ৪টায় শেষ হচ্ছে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ। এরপর জানা যাবে, শেষ পর্যন্ত কারা থাকছেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে।
আওয়ামী লীগ এবার জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটে যায়নি। তবে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দুই দলের মধ্যে চার দফা বৈঠক হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হলে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া আসনগুলো থেকে নিজেদের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবে আওয়ামী লীগ। সেটাও ইসিকে জানাতে হবে বিকাল ৪টার মধ্যে।
আওয়ামী লীগ অফিসের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা নানাভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জানতে চান, শেষ পর্যন্ত কতটি আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কাদের কোনো সংখ্যা বলেননি।
যেসব আসনে সমঝোতা হবে, সেসব আসন থেকে নৌকার প্রার্থীদের প্রত্যাহার করা হবে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "নৌকা প্রত্যাহার করতে তো হবেই। আমরা নৌকা প্রত্যাহার করে নেব।"
২০০৮ সাল থেকেই ১৪ দল ও আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দুটিতে জোটের শরিক হিসেবে ছিল জাতীয় পার্টিও।
তবে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের পর জাতীয় পার্টি জোটে ছিল না। এবারও বিএনপি ভোটে আসেনি, জাতীয় পর্টিকেও জোটে রাখা হয়নি।
২০১৪ সালে জোট না থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আছে- এমন ৩৪টি আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেসব আসনেই জয় পায় দলটি। একাদশে জোট করার পর তাদেরকে দেওয়া হয় ২৬টি আসন, এর মধ্যে তারা জয় পায় ২৩টিতে।
জাতীয় পার্টি এবার বলছিল, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাদের যে ২৬টি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তার সঙ্গে আরো একটি মিলিয়ে মোট ২৭টি আসন দিতে হবে তাদের। তাছাড়া যেসব আসন আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেবে, সেসব আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদেরও বসিয়ে দিতে হবে।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসনই দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। ১৪ দলের শরিকরা পাচ্ছে চারটি আসন। এছাড়া অন্যান্য দলকে আরো চারটি আসন ছেড়ে দেবে ক্ষমতাসীনরা। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের বিষয়ে কঠোর হতে রাজি নয় ক্ষমতাসীন দল।
আরও পড়ুন:
শেষ দিনের অপেক্ষায় রাখল জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ
লাঙ্গল-নৌকার অঙ্ক মেলেনি তৃতীয় বৈঠকেও
‘সংশয়’ কাটিয়ে সমঝোতার পথে লাঙ্গল ও নৌকা?
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নে আমরা নেই, ভোটে আছি: চুন্নু
১৪ দল ও জাতীয় পার্টিকে ‘লড়াইয়ের বার্তা’ আওয়ামী লীগের
জাতীয় পার্টিতে দ্বন্দ্ব: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রওশনের ‘নালিশ’
আসন ভাগাভাগি: এবার জাপার সঙ্গে বসছে আওয়ামী লীগ