“এখানে আরো অনেক দল আছে না? এখানে তৃণমূল আছে না? তৃণমূল তো বিরাট জোট। তাদেরকে আপনি বিচ্ছিন্ন করবেন কেমন করে। সুপ্রিম পার্টি আছে, আরো কত পার্টি।”
Published : 06 Dec 2023, 01:56 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আলোচনার আগে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন ক্ষমতাসীন দলের নেতা ওবায়দুল কাদের।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও জয়ী হলে সংসদে বিরোধী দল কারা হবে, সেই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, “দাঁড়িয়ে যাবে বিরোধী দল।”
বুধবার দুপুরে ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের।
বিরোধী দল কারা হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, “এখানে আরো অনেক দল আছে না? এখানে তৃণমূল আছে না? তৃণমূল তো বিরাট জোট। তাদেরকে আপনি বিচ্ছিন্ন করবেন কেমন করে। সুপ্রিম পার্টি আছে, আরো কত পার্টি।”
২০০৮ সাল থেকেই ১৪ দল ও আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দুটিতে জোটের শরিক হিসেবে ছিল জাতীয় পার্টিও। তবে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের পর জাতীয় পার্টি জোটে ছিল না। এবারও বিএনপি ভোটে আসেনি, জাতীয় পর্টিকেও জোটে রাখা হয়নি।
২০১৪ সালে জোট না থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আছে, এমন ৩৪টি আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেসব আসনে জয়ী হয়ে প্রধান বিরোধী দল হয় জাতীয় পার্টি।
একাদশে জোট করার পর তাদেরকে দেওয়া হয় ২৬টি আসন, এর মধ্যে তারা জয় পায় ২৩টিতে। এবারও তারা সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসন পায়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে কোথাও ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি আওয়ামী লীগ। আসন ভাগাভাগির বিষয়ে বুধবারই দুই দলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, “১৪ দলের সাথে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেটা দুই একদিনের মধ্যে ঠিক হবে। আর জাতীয় পার্টি এক সময় আমাদের মহাজোটে ছিল। তারা নির্বাচনে করছে। সুতরাং আলোচনা হওয়ার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।"
জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি হলে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ কারা, এমন প্রশ্নও রাখেন সাংবাদিকরা।
জবাবে কাদের বলেন, "নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিদ্বন্দী আমাদের প্রতিপক্ষ। যারা নির্বাচন করছে তারা সবাই পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। আমাদের দলের সভাপতির আসনে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিযোগিতা তো হচ্ছে।"
বিএনপি নিজেদের ভুলের রাজনীতির কারণেই ‘জামায়াতের বি টিমে’ পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
জনসম্পৃক্ততার অভাবে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, "আজকে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে অগ্নি সন্ত্রাস ও নাশকতা দিয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মানবাধিকার দিবসে সারাদেশ একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে তারা এগোচ্ছে। জামায়াতকে বিএনপি একান্তভাবে তাদের পাশে চায়।
"আসলে বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ভুলের মধ্যে আছে। জামায়াতের সাথে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে তারা যেভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, তাতে এক সময় দেখা যাবে বিএনপির রাজনীতির যে মূল ধারা, সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে জমায়াত। আর বিএনপি এটার বি টিম হিসেবে আবির্ভূত হবে।”
মানবাধিকার দিবসে বিএনপি নাশকতা করতে পারে- এমন গোয়েন্দা খবর থাকার কথা জানিয়ে সরকারের সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, "আমরা খোঁজ খবর নিয়েই কথা বলছি। সরকারি দল হিসেবে আমাদের খোঁজখবর নেওয়ার সুযোগটা বেশি। তাছাড়া বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা ইতোপূর্বে যে সমস্ত খবর পেয়েছি, বাস্তবেও সেগুলোর মিল পেয়েছি।"
১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবসে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করছে না জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "যেহেতু নির্বাচন কমিশন মানবাধিকার দিবসে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে অপারগত প্রকাশ করেছেন, সেহেতু আমরা সমাবেশ করব না। তবে দিবসটি ঘিরে আওয়ামী লীগের ঘরোয়া কর্মসূচি থাকবে।”