আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আসন ভাগাভাগি নিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে তাদের আলোচনা ‘ইতিবাচক দিকে’ এগোচ্ছে।
Published : 13 Dec 2023, 12:23 AM
জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত ভোটে আসবে কি না, তা নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সংশয় থাকলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিচ্ছে সংসদের দুই বেঞ্চের প্রতিনিধিত্বকারী দুই দল।
মঙ্গলবার রাতে বনানীর একটি বাড়িতে দুই দলের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়। তাতে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও ‘ইতিবাচক অগ্রগতির’ কথা বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠকে কী আলোচনা হল জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এটা নিয়ে অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এটা পজিটিভ দিকে আগাচ্ছে। সামগ্রিক বিষয়গুলো একটি ভালো দিকে আলোচনা হচ্ছে। একমত হয়ে আমরা সামনে এগোচ্ছি।"
এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও দুয়েক দিনের মধ্যে ফয়সালা হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “দুয়েক দিনের ভেতরে সমস্ত বিষয়গুলো আমরা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করে জানাব। আমাদের সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে যে রাজনৈতিক আলোচনা হচ্ছে, এই আলোচনা ভবিষ্যতেও হবে। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো প্রকাশ্যে আসা উচিত। আমরা আশা করছি, দুয়েক দিনের ভিতরেই জাতিকে আমরা একটি পরিচ্ছন্ন ধারণা দিতে পারব। সেটা যৌথভাবেই প্রকাশ করা হতে পারে।"
সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে কিনা, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকবে কিনা, এসব নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সংশয় প্রকাশ করেছেন’ বলে খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে, যা নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর আলোচনা চলে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করুক বা না করুক, তার দল ‘ভোটে থাকবে’।
মঙ্গলবার রাতের বৈঠকের পর আলোচনার অগ্রগতি জানতে ফোন করা হলে চুন্নু ফোন ধরেননি। পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষে নাছিম ছাড়াও ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে গণতান্ত্রিক দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির ভূমিকা রয়েছে। সারাদেশে যেভাবে নির্বাচনী উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা অব্যাহত কীভাবে রাখা যায় এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন কীভাবে করা যায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে তা সম্ভব। এই আলোচনা চলমান থাকবে। আগামীকাল ও পরশু আবার আলোচনা হতে পারে।"
তাহলে সংশয় কেন?
বিএনপির বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ভোট করেছিল অনেক নাটকীয়তার পর। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি, আর জাতীয় পার্টি ভোটে আসবে কি না, শুরুর দিকে তা অস্পষ্ট রেখেছিলেন দলটির নেতারা।
পরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করার এবং সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে দলের প্রতিষ্ঠাতা এইচএম এরশাদের স্ত্রী, জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এবং তার ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ নেতৃত্বের টানাপড়েনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। তাদের বাদ দিয়েই প্রার্থী মনোনয়নসহ ভোটের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন এরশাদের ভাই, পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার কৌশল পাল্টেছে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় কোনো আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা যেন দশম সংসদ নির্বাচনের মত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় না পায়, সেজন্য দলের মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থীরা দাঁড়িয়ে গেছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। তাদের বলা হচ্ছে ডামি প্রার্থী। কেবল বিএনপি নয়, জাতীয় পার্টিও শেষে আবার ভোট বর্জন করে কি না, সে বিষয়টিও আওয়ামী লীগকে মাথায় রাখতে হচ্ছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী তার সহকর্মীদের সঙ্গে স্বতন্ত্র ও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচন নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনা করেন বলে খবর এসেছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে।
বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিকভাবে কিছু কথা বলেছেন। সেখানে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন ভাগাভাগির প্রসঙ্গ ওঠে।
"নেত্রী বলেছেন, জাতীয় পার্টি কখন কী করে, তার ঠিক নেই। ওরা নির্বাচনে থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। আলোচনা তো হচ্ছে, দেখা যাক তারা কী করে।"
মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “এটা কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য নয়। কেবিনেট শেষে উনি কথা বলেছেন। এটা আমরা এখনো নিশ্চিত না। এটা সব কাগজেরও নিউজ না।
“আজও জাতীয় পার্টি নেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের আলোচনা অব্যাহত আছে।”
অন্যদিকে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে চুন্নুকেও এ বিষয়ে সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে হয়।
তিনি বলেন, বলেন, “নির্বাচনে আসছি নির্বাচন করার জন্য, চলে যাওয়ার জন্য না। কেউ যদি বিশ্বাস না করেন, সেটা উনাদের বিষয়।… আমরা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নে নাই।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে চুন্নুর ভাষ্য, “জাতীয় পার্টি ইসি ও সরকারের কাছে শুধুমাত্র ভোটের সুষ্ঠ পরিবেশ চেয়েছে। এটাই আমাদের মেইন দাবি, এটুকু হলেই নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কোনো অবকাশ নাই।”
আসলে কী হচ্ছে?
২০০৮ সাল থেকেই ১৪ দল ও আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দুটিতে জোটের শরিক হিসেবে ছিল জাতীয় পার্টিও।
তবে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের পর জাতীয় পার্টি জোটে ছিল না। এবারও বিএনপি ভোটে আসেনি, জাতীয় পর্টিকেও জোটে রাখা হয়নি।
২০১৪ সালে জোট না থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আছে- এমন ৩৪টি আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেসব আসনেই জয় পায় দলটি। একাদশে জোট করার পর তাদেরকে দেওয়া হয় ২৬টি আসন, এর মধ্যে তারা জয় পায় ২৩টিতে। এবার দলটিকে কোথাও ছাড় দেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরছে তফসিলের পর থেকেই।
মঙ্গলবার রাতের বৈঠকের পর বাহাউদ্দিন নাছিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের সৌহাদ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য অনেক সুন্দর আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন যাতে প্রতিযোগিতামূলক হয় সে বিষয়টিও আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য, অংশগ্রহণমুলক করার ব্যাপারে উভয় দলই ঐকমত্য পোষণ করেছে।”
আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতারা ‘প্রতিযোগিতামূলক’, ‘অংশগ্রহণমুলক’ শব্দগুলোতে বার বার জোর দিলেও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে তাদের পরিকল্পনা নিয়ে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাইছেন না।
তবে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু আসন লাঙ্গলের জন্য ছেড়ে দিয়ে নৌকার প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে ইংগিত মিলেছে আওয়ামী লীগের এক জ্যেষ্ঠ নেতার কথায়।
ক্ষমতাসীন দলটির সভাপতিমন্ডলীর একজন সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আপনারা শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন, ভালো কিছু দেখবেন। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে যা যা করার তাই হবে। তবে জাতীয় পার্টি এক সময় আমাদের মহাজোটে ছিল।তাদের সঙ্গে নিয়েই নির্বাচন করতে হবে।
“সেক্ষেত্রে কিছু আসনে তাদের ছাড় দিতে হবে, সেই ছাড় হবে নৌকার প্রার্থী তুলে নেওয়া। কোথায় কী হবে সেটা জানার জন্য আরও দুয়েকদিন আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে।”
আর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলটির জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলোচনা চলছে, অপেক্ষা করেন। ১৭ তারিখের মধ্যে সব জানতে পারবেন।”
রওশনের নালিশ
দুই দলের মধ্যে যখন আসন ভাগাভাগির আলোচনা চলছে, জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ তখন গণভবনের গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নালিশ করে এসেছেন জিএম কাদের-চুন্নুদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার দুপুরের পর ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ, জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ এবং আরও কয়েকজনকে নিয়ে গণভবনে যান সংসদেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন।
বৈঠক থেকে বের হয়ে রাঙ্গাঁ সাংবাদিকদের বলেন, “বিরোধীদলীয় নেতা (রওশন) বলেছেন, আমরা যেহেতু তাদের (জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের) সঙ্গে নাই, তারা তাদের মতো নির্বাচন করুক, নির্বাচন উৎসবমুখর হোক। যদি জোট করতে হয়, আমাদের সঙ্গে আলাপ করে করবেন। কারণ আমরা জোটের ভাগিদার।"
প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উনি উনার পরিষদ নিয়ে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।"
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সেই নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নে জাতীয় পার্টির দ্যোদুল্যমান অবস্থার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিলেন রওশন। সেই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরে প্রার্থিতা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তখন দলে রওশনকে ঘিরে তৈরি হয় আরও একটি বলয়। তারা জানান, ভোট করবেন।
নির্বাচনের পর থেকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হন রওশন। বর্তমান সংসদেও তিনি একই পদে আছেন।
তবে ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলের নেতৃত্ব নিয়ে যে টানাপড়েন, তাতে এবার বেকায়দায় পড়েছে এরশাদপত্নী।
রওশন এবার তার নিজের পাশাপাশি সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার জন্য রংপুর-১, ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদের জন্য রংপুর-৩, ময়মনসিংহ জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি কে আর ইসলামের জন্য ময়মনসিংহ-৬, রুস্তম আলী ফরাজীর জন্য পিরোজপুর-৩ সহ কয়েকটি আসন চেয়েছিলেন।
কিন্তু রাঙ্গাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে রাজি নন জি এম কাদের, তার আসনে প্রার্থী করা হয়েছে জি এম কাদেরের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ারকে।
জি এম কাদের নিজে দাঁড়িয়েছেন রংপুর-৩ আসনে। এমনকি ১৯৯১ সাল থেকে জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে চার চারবার সংসদ সদস্য রুস্তম ফরাজীকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
জাতীয় পার্টি সাদ এরশাদকে ময়মনসিংহ-৭ আসন দেওয়ার পক্ষে ছিল, যদিও সেই আসনে অন্য একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কে আর ইসলামকে ময়মনসিংহ-৬ আসন দিতে অবশ্য আপত্তি ছিল না। তবে তাকে দুই বছর আগে জি এম কাদের বহিষ্কার করেছেন, সেই আদেশ ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না, সেটি ও নিশ্চিত নয়।
এই দ্বন্দ্বের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর রওশন জানান তিনি ভোটে আসবেন না, তার অনুসারীরাও আসছেন না।
গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধী দলীয় নেতার বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “রওশন এরশাদ বিরোধী দলের নেতা। তাদের দলীয় অভ্যন্তরীণ যে সংকট, সেটার সঙ্গে আমাদের কিছু নেই।
“বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে সংসদীয় দলের নেতা তিনি আলাপ করতেই পারেন। তিনি তো ইলেকশন বয়কট করেছেন। তবে তিনি ইন্টারেকশন করতে পারেন। এ নিয়ে তো আপত্তি থাকার কথা নেই।”
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নুর কণ্ঠেও মিলেছে একই সুর।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “উনি যেতেই পারেন। যে কোনো মানুষের যাওয়ার সুযোগ আছে। রওশন এরশাদ সংসদের বিরোধদলের নেতা। তিনি সংসদের নেতার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে যে কোনো সময়ে, যে কোনো বিষয়ে দেখা করতেই পারেন। রওশন এরশাদ গণভবনে যেতেই পারেন এটা খুব ইজি বিষয়, আনকমন বিষয় না।”
রওশন এরশাদকে বাদ দিয়েই নির্বাচনে যাওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “ম্যাডাম আমাদের পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। উনি নির্বাচন করুক, উনার ছেলে করুক এবং উনার (রওশন এরশাদ) ইচ্ছামত আরেক জন করুক। তিন জনের জন্য মনোনয়নপত্র নিয়ে আমরা অপেক্ষা করেছি।... নির্বাচনে যাবেন না। ম্যাডাম ভোটে এলে আমাদের জন্য ভালো হত, কর্মীরাও খুশি হত। ম্যাডাম না আসায় আমরা দুঃখিত।”
পুরনো খবর
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নে আমরা নেই, ভোটে আছি: চুন্নু
১৪ দল ও জাতীয় পার্টিকে ‘লড়াইয়ের বার্তা’ আওয়ামী লীগের
জাতীয় পার্টিতে দ্বন্দ্ব: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রওশনের ‘নালিশ’
আসন ভাগাভাগি: এবার জাপার সঙ্গে বসছে আওয়ামী লীগ