চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি শেষে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা।
Published : 16 Apr 2025, 11:58 PM
টানা চার মাস পর চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি শেষে ব্যাংক খাতে আমানত প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের উপরে থাকলেও এক মাস পর তা আবার নিচে নেমে এসেছে।
ফেব্রুয়ারি শেষে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে ছিল ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি শেষে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। আগের বছর ২০২৪ সালের একই মাসে ছিল মোট ১৬ লাখ ৬১ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা।
আর জানুয়ারি শেষে মোট আমানত ছিল ১৭ লাখ ৮১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে আমানতের এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংক খাতে আমানতে প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে, যা ওই মাসে ৭ দশমিক ২৬ শতাংশে নেমে যায়। অক্টোবরে তা সামান্য বেড়ে হয় ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। নভেম্বরে আরও কিছুটা বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ডিসেম্বরে তা দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এর আগে ব্যাংক খাত আমানতে এত কম প্রবৃদ্ধি দেখেছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, সেবার ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মোহাম্মদ মারুফ মনে করেন, মূল্যস্ফীতির চাপে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমেছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মাস শেষে হাতে বাড়তি অর্থ থাকলে ব্যাংকে আমানত হিসাবে জমা হয়। তবে খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে সেটা এখন হচ্ছে না। কারণ মূল্যস্ফীতির চাপে মাসিক খরচ বেড়েছে।”
দেশের বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপর। আর ব্যাংক আমানতে সুদের হার ৯ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত।
টানা চার মাস ব্যাংক আমানতে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে
৪ মাস পর আমানতে প্রবৃদ্ধি ৮% ছাড়াল
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, মার্চে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে এই হার ছিল ৯.৩২ শতাংশ। জানুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে ব্যাংকে আস্থার অভাব রয়েছে। আস্থার অভাবে অনেকেই ব্যাংকে টাকা রাখছেন না।
গণআন্দোলনে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তার আগে থেকেই ডলার সংকট, রিজার্ভের পতন, রেমিটেন্স কমে যাওয়াসহ অর্থনীতিতে নানা সংকট ছিল।
আন্দোলনের ধাক্কা সামলে উঠতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও অর্থনীতিতে গতি আসেনি।
সরকার পতনের মাস অগাস্টে ব্যাপক সহিংসতা, বিশৃঙ্খলার মধ্যেও ব্যাংক আমানতে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তথ্য দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে ১০ শতাংশের কম প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে, ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, সরকার পতনের পর ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজবে এসব ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেন গ্রাহকরা। এতে সংকটে পড়ে যায় এসব ব্যাংক।
তিনি বলেন, এসব ব্যাংক প্রথম অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার করে এবং পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেয়।