Published : 27 Mar 2025, 01:02 PM
মেইকআপে যেন জাদুর কাঠি ‘কনসিলার’। কারণ এটি সামান্য ব্যবহারেই রাত জাগা চোখের ফোলা ভাব কমাবে, ত্বকের দাগ বা অতিরিক্ত রং পরিবর্তনও ঢেকে যাবে।
তবে এটি শুধুমাত্র ত্রুটি ঢাকার জন্যই নয়, কনসিলারের কৌশলি ব্যবহার চেহারায় উজ্জ্বলতা বাড়য় এবং ‘লিফটেড’ বা উঁচু ভাব আনে।
মেইকআপ আর্টিস্ট লেক্স স্মিথ, টি. কুপার এবং ড্রিটা প্যালজেভিক রিয়্যালসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কনসিলারের সঠিক ব্যবহার প্রসঙ্গে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কনসিলার চোখের চারপাশের এলাকা উজ্জ্বল করে, মুখের উঁচু অংশগুলোকে হাইলাইট করার পাশাপাশি তরুণ্যময় ভাব ফুটিয়ে তোলে। তবে কনসিলার ব্যবহারের কিছু পদ্ধতি রয়েছে যা না মানলে উল্টোভাবে মুখকে নিচু বা ভারী দেখাতে পারে।
চোখের নিচে কনসিলার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি
চোখের নিচে কনসিলার ব্যবহার করার কিছু সহজ পদ্ধতি রয়েছে। এক্ষেত্রে ‘কম বেশি’ নীতি অনুসরণ করা উচিত, অর্থাৎ খুব বেশি কনসিলার ব্যবহার না করে হালকা এবং স্বাভাবিক-ভাবে কনসিলার ব্যবহার করা উচিত।
নিউ ইয়র্ক সিটি’র পেশাদার রূপসজ্জাকর টি. কুপার পরামর্শ দেন, “চোখের নিচে ব্যবহারের সময়, কনসিলারটি উঁচু দিকে, বিশেষত চোখের ভেতরের এবং বাইরের কোণগুলোতে লাগাতে হবে। পুরো চোখের নিচে ব্যবহারের পরিবর্তে যেখানে গাঢ় বা ছায়াযুক্ত অংশ রয়েছে সেখানে কনসিলার লাগাতে হবে। এতে চোখ উজ্জ্বল ও সতেজ দেখায়। আর কনসিলারের অতিরিক্ত স্তরও চোখের নিচে জমে না।”
এই পদ্ধতিতে কনসিলারটি ধীরে ধীরে আঙুল দিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। তবে মোছা যাবে না। এতে কনসিলার ত্বকের সঙ্গে ভালোভাবে মিশবে। প্রয়োজন হলে বাড়তি কনসিলার যোগ করা যেতে পারে।
মুখের অন্যান্য অংশে কনসিলার ব্যবহার
চোখের নিচে কনসিলার ব্যবহারের পাশাপাশি মুখের অন্যান্য অংশে কনসিলার ব্যবহার করে একটি ‘লিফটেড’ এবং তরুণভাব তৈরি করা যায়।
এটি ‘কনটুয়ারিং’য়ের মতো কাজ করবে, মুখের উঁচু অংশগুলো আরও হাইলাইট হবে। আর অন্যান্য অংশগুলোকে স্বাভাবিক রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্রের মেইকআপ ব্র্যান্ড ‘টার্ট কসমেটিকস’য়ের রূপসজ্জাকর লেক্স স্মিথ বলেন, “ঠোঁটের দুই কোণ এবং নিচের অংশে হালকা করে কনসিলার ব্যবহার করতে হবে। এই অংশে সামান্য ছায়া থাকলে মুখ আরও নিচু বা ভারী মনে হতে পারে। তবে কনসিলার এই অংশগুলোকে উজ্জ্বল করে ও মেলে ধরে।”
এছাড়া, কনসিলার লাগানো যেতে পারে ‘জ লাইন’ বা চোয়ালের অংশে ‘চিকবোন’ বা গালের উঁচু অংশে যেখানে কনটুয়ারিং প্রয়োজন হয়। এতে মুখে টান টান ও তীক্ষ্ণ ভাব আসবে।
চোখের পাতায় কনসিলার ব্যবহার
চোখের পাতায় কনসিলার ব্যবহার একটি ভিন্ন ধরনের পদ্ধতি। এটি মুখে তরুণ-ভাব আনার জন্যও খুবই কার্যকর।
যুক্তরাষ্ট্রের মেইকআপ ব্র্যান্ড ‘কেভিন অকয়েন বিউটি’র প্রধান রূপসজ্জাকর ড্রিটা প্যালজেভিক বলেন, “চোখের পাতায় কনসিলার ব্যবহার করলে চোখের নিচে থাকা অস্বাভাবিক রং বা শিরাগুলোকে ঢেকে ফেলে। আর চোখের পাতার উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে। এটি প্রাইমার বা বেইজ হিসেবে কাজ করে। ফলে চোখের মেইকআপ আরও সুন্দরভাবে বসে।”
এমন কি চোখের পাতায় কোনো ভারী মেইকআপ ছাড়াও কনসিলার ব্যবহার করা যেতে পারে। আর শুধুমাত্র কনসিলার দিলেও চোখ উজ্জ্বল ও সতেজ দেখা যাবে।
নাকের দুই পাশের ছায়া কনসিলার দিয়ে হালকা করা
কনসিলারের আরও একটি কৌশল হল- নাকের মাঝখানে বা নাকের দুই পাশের ছায়া অংশ ঢেকে ফেলা।
প্যালজেভিক বলেন, “নাকের মাঝখানে কনসিলার ব্যবহারে এটি ‘রিভার্স কনটুয়ারিং’য়ের মতো কাজ করবে। আর এই অংশটি উজ্জ্বল হবে, যা মুখের উচ্চতর অংশগুলোকে ‘হাইলাইট’ করবে। নাকের দুপাশে কালচে ও ছায়াময় অংশ দূর করতে কনসিলার প্রযোজ্য হবে।”
ভ্রুয়ের নিচে কনসিলার লাগানো
ভ্রুয়ের নিচে কনসিলার ব্যবহার করা একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি, যা চোখকে আরও ‘লিফটেড’ এবং সতেজ দেখাতে সহায়তা করে।
লেক্স স্মিথ বলেন, “ভ্রুয়ের বাইরের কোণের নিচে কনসিলার ব্যবহারে চোখের চারপাশের অংশ উজ্জ্বল হবে এবং চোখ আরও প্রশস্ত ও সতেজ দেখাবে।”
পদ্ধতিটি সহজ। তবে ব্যবহার করতে হবে সামান্য কনসিলার। আর ভালোভাবে ত্বকে মিশিয়ে নিতে হবে যাতে অস্বাভাবিক কোনো লাইনের সৃষ্টি না হয়।
কনসিলার ব্যবহারের পর সেটিং পাউডার বা স্প্রে ব্যবহার করা
কনসিলার ব্যবহারের পর ‘সেটিং পাউডার’ বা ‘সেটিং স্প্রে’ ব্যবহার অপরিহার্য। এটি কনসিলারকে স্থির এবং মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। আর মেইকআপ দীর্ঘ সময় স্থায়ী রাখে।
ড্রিটা প্যালজেভিক বলেন, “কনসিলার ব্যবহারের পরে সেটিং স্প্রে বা পাউডার ব্যবহার করলে মেইকআপটি স্থায়ী হবে এবং ত্বকের ওপর কোনো লাইন বা ফোলাভাব দেখা যাবে না।”
আরও পড়ুন