খাদ্যাভ্যাসে বৈচিত্র্য না থাকলে সব পুষ্টি উপাদান পাওয়া যাবে না।
Published : 03 Jan 2023, 04:43 PM
প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি বিপাক বাড়াতে প্রয়োজন হবে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস সমৃদ্ধ খাবার।
শরীরে ব্যথা, কোথাও ফুলে ওঠা, ত্বকের সমস্যা- এরকম যাবতীয় প্রদাহের তীব্রতা নির্ভর করবে কী খাচ্ছেন, কীভাবে খাচ্ছেন সেটার ওপর।
প্রদাহ ও খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করার জন্য কমাতে হবে ‘সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন (সিআরপি)’।
কী এই সিআরপি?
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিক’য়ের তথ্যানুসারে মতে, “সিআরপি’ হল এক ধরনের প্রোটিন যা যকৃতে তৈরি হয় যখন শরীর কোনো প্রদাহের শিকার হয়।”
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানাচ্ছে, “শরীরে, বিশেষ করে রক্তে ‘সিআরপি’র মাত্রা দেখে বোঝা যায় রোগ ও বিভিন্ন ‘অটোইমিউন’ সমস্যার সম্ভাবনা ও উপস্থিতি সম্পর্কে।
‘সিআরপি’ বেশি থাকা মানেই হল বিপাকজনিত বিভিন্ন সমস্যা থাকবে। শরীরের উপরিভাগের স্থূলতা বাড়বে, দেখা দেবে ‘হাইপারট্রাইগ্লিসারিডেমিয়া’, উচ্চ রক্তচাপ, অস্বাভাবিক শর্করা, উপকারী কোলেস্টেরল ‘এইচডিএল’য়ের কমতি ইত্যাদি।
যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ জোনা বুর্দেওস ‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত ‘সিআরপি’র মাত্রা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানান।
সামুদ্রিক উৎস থেকে ওমেগা থ্রি’স
সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন এই পুষ্টিবিদ সবার আগে।
তিনি বলেন, “স্যামন, ম্যাকারেল, অ্যানচোভিস, হেরিং এই মাছগুলোতে উচ্চমাত্রায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস মেলে। আর সেটাই ‘সিআরপি’র মাত্রা কমানো জন্য জরুরি।”
শরীরে প্রদাহের মাত্রা কমানো গেলে দূরারোগ্য ব্যধি যেমন- হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদির ঝুঁকিও কমে। সপ্তাহের নূন্যতম দুবার সামুদ্রিক উৎস থেকে আসা ওমেগা থ্রি’স সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।”
উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে ওমেগা থ্রি’স
বুর্দেওস বলেন, “চর্বিযুক্ত সামুদ্রিক মাছ যদি খেতে না চান বা সহজলভ্য না হয়, তবে ওমেগা থ্রি’সয়ের প্রয়োজন মেটাতে হবে উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে। সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার পরও এগুলো খাওয়া উচিত। কারণ শুধু ওমেগা থ্রিস নয়, আরও অনেক উপকারিতা মেলে এই উদ্ভিজ্জ খাবারগুলো থেকে।”
চিয়া সিড, ফ্লাক্স সিড ও কাঠবাদাম হল ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে সবচাইতে সমৃদ্ধ। এছাড়াও আছে হেম্প সিড। প্রাণিজ উৎসের কথা চিন্তা করলে ডিম, দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি থেকেও ওমেগা থ্রিস মেলে।
ভাজাপোড়া বাদ দেওয়া
বুর্দেওস বলেন, “ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলার অসংখ্য কারণ বলা সম্ভব, তবে এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হল ভাজাপোড়া খাবার শরীরের প্রদাহের ঝুঁকি বাড়ায়।”
আংশিক ‘হাইড্রোজেনেটেড’ তেলে এবং উচ্চ তাপমাত্রায় এই খাবারগুলো ভাজা হয়। ফলে এর ‘ট্রান্স ফ্যাট’ বেড়ে যায়। যা ‘এলডিএল’ বাড়াবে, ‘এইচডিএল’ কমাবে। ফলে বাড়বে হৃদরোগের ঝুঁকি। ভাজাপোড়া খাবারে থাকা উচ্চমাত্রার সোডিয়াম আরেকটি দুশ্চিন্তার বিষয়।
ফল ও সবজি বেশি খাওয়া
বুর্দেওস বলেন, “আঁশ, ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট’, ভিটামিন সি, ‘অ্যান্থোসায়ানিন’, ‘বেটা ক্যারোটিন’ এই সবগুলো প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আর এই সবগুলোই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় ফল ও সবজিতে।”
আবার যে কোনো একটি ফল কিংবা সবজি থেকেই এর সবগুলো পাওয়া সম্ভব না, তাই খাদ্যাভ্যাসে বৈচিত্র্য থাকা জরুরি।
আরও পড়ুন