আর্থ্রাইটিস বা গ্রন্থিবাত বা গেঁটেবাতের কারণে হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা ও অস্বস্তি দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ফল আর্থ্রাইটিসের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
আর্থ্রাইটিস একটা দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা সংযোগস্থলে প্রদাহ, শক্ত হয়ে আসা ও ব্যথা সৃষ্টি করে। যে কোনো বয়সের মানুষদের যে কোনো কারণ যেমন- বয়স, বংশগতি, ক্ষত বা ‘রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস’য়ের মতো দেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসের কারণে হয়ে থাকে।
হেল্থ শটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাঙ্গালুরুর ফোর্টিস হসপিটাল’য়ের প্রধান খাদ্য বিশেষজ্ঞ রিংকি কুমারি বলেন, “যদিও আর্থ্রাইটিস সম্পূর্ণভাবে প্রতিকার করা যায় না। তবে প্রদাহনাশক উপাদান সমৃদ্ধ কিছু ফল এর ব্যথা উপশমে সহায়তা করে।”
আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণের প্রধান লক্ষ্য হল ব্যথা বাড়তে না দেওয়া, প্রদাহ কমানো এবং সংযোগস্থলের গতিশীলতা উন্নত করা। নির্দিষ্ট কিছু ফল আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
আপেল: আপেল কেলব খেতেই মজাদার নয় বরং এর রয়েছে নানা স্বাস্থ্যগুণ।
ব্যাখ্যা করে কুমারি বলেন, “আপেল কুয়ার্সেটিন নামক ফ্লাভানয়েড সমৃদ্ধ যা প্রদাহরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে।
কুয়ার্সেটিন দেহের প্রদাহ কমায় এবং আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ কমাতে সহায়তা করে তাই নিয়মিত আপেল খাওয়া আর্থ্রাইটিসের জন্য উপকারী।
চেরি: চেরি, বিশেষত টার্ট চেরি আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য উপকারী।
কুমারি বলেন, “চেরিতে আছে অ্যান্থসায়ানিনস, যা প্রদাহরোধী যৌগ হিসেবে কাজ করে দেহের ব্যথা কমায়।”
গবেষণায় দেখা গেছে, চেরি বা চেরির জুস খাওয়া প্রদাহের মাত্রা কমায় এবং আর্থ্রাইটিসের ব্যথার মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
আনারস: আছে ব্রমেলেইন নামক এঞ্জাইম যা প্রদাহরোধী হিসেবে কাজ করে। ব্রমেইলেইন শরীরের প্রদাহজনক পদার্থের উৎপাদন কমাতে এবং নির্দিষ্ট প্রদাহজনক কোষের কার্যকলাপ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
খাবার তালিকায় আনারস যোগ করা প্রদাহ কমায়, এর ফলে আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ যেমন- সংযোগস্থলের ব্যথা ও ফোলাভাব কমে।
ব্লুবেরি: পুষ্টির আঁধার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও নানান রকম উপকারী যৌগের উৎস। এটা অ্যান্থোসিয়ানিন-সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এজন্যই ব্লুবেরির রং উজ্জ্বল নীল রংয়ের হয়ে থাকে।
এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো দেহের ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিকেলকে নিষ্ক্রিয় করে অক্সিডেটিভ চাপ কমিয়ে শরীরকে প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
ব্লু বেরি অ্যান্থোসায়ানিন সমৃদ্ধ বলে খাবার তালিকায় এটা যোগ করা বাতের লক্ষণ ও ব্যথা কমাতে সহায়ক।
কমলা: কমলা কেবল খেতেই সতেজকারী নয় বরং এর রয়েছে নানান গুণাগুণ যা আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
কুমারি বলেন, “কমলা ভিটামিন সি’র ভালো উৎস যা শক্তিশালী আন্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি প্রদাহ কমাতে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে খুব ভালো কাজ করে।”
প্রতিদিন কমলা খাওয়ার মাধ্যমে দেহে ভিটামিন সি এবং প্রতিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পায়। এটা আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ কমায় এবং সংযোগস্থলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।
মনে রাখা প্রয়োজন
যদিও এই ফলগুলো আর্থ্রাইটিসের জন্য উপকারী কিন্তু অন্য চিকিৎসার পরিবর্তে এগুলোকে বেছে নেওয়া অথবা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ এড়িয়ে যাওয়া মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।
তাছাড়া অনেক ফল ওষুধের সঙ্গে বিক্রিয়া করে নানান রকম সমস্যার সৃষ্টি করে তাই এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা নিরাপদ।
আরও পড়ুন: