“অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান প্রফেসর ইউনূসের উচিত হবে নিজেই বাড়িটা ভিজিট করা। তিনি এই বাড়ি ভিজিট করলে একটা সিগনিফিকেন্স তৈরি হবে, একটা বার্তা দেবে।”
Published : 08 Aug 2024, 03:40 PM
হামলার শিকার হওয়া ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর সংস্কার দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দায়িত্ব শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে বাড়িটি ছিল পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের সূতিকাগার, সরকার পতনের পর হামলার শিকার হওয়া সেই বাড়িটিকে আগের রূপে ফিরে এনে, নানা ছবি বা অবশিষ্ট স্মৃতিস্মারক দিয়ে জাদুঘর ফের চালুর তাগিদ দিয়েছেন ফারুকী।
ফেইসবুকে দেওয়া পোস্টে ফারুকী বলেন, "আমি মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম কাজ হবে ৩২ নম্বরের বাড়ির পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা। এই বাড়িকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং এ বাড়ি সম্পর্কিত বিভিন্ন ছবি, স্মৃতিস্মারক যা যা পাওয়া যায় তা দিয়ে যাদুঘর আবার চালু করা। ”
প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সোমবার বিকালে বঙ্গবন্ধুর বেশ কিছু ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এবং আক্রান্ত হয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর। সেখানে কেবল হামলা চালিয়ে ভাংচুরই করা হয়নি। জাদুঘরের নানা সামগ্রী লুটপাট করা হয়েছে। আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তিনতলা ওই বাড়িটি।
আগুন নেভার পর দেখা গেছে জাতির পিতার বসবাসের ওই বাড়ির প্রতিটি কক্ষ পুড়ে গেছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ভবনের সামনের দিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশে রাখা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও।
বাড়িটি রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে চলা নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে ফারুকী বলেন, “প্রফেসর ইউনূসের উচিত হবে নিজেই বাড়িটা ভিজিট করা। তিনি এই বাড়ি ভিজিট করলে একটা সিগনিফিকেন্স তৈরি হবে, একটা বার্তা দেবে।”
১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর থেকে শেখ মুজিব এই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এই বাড়িতে থেকেই তিনি পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ৬২ সালের আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬ সালের দফা, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, একাত্তরের শুরুতে অসহযোগ আন্দোলন, নানা চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী এই বাড়ি। এই বাড়ি থেকেই একাত্তরের ২৫ শে মার্চের রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টে এই বাড়িতেই সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে বাড়িটি তার কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে এই বাড়িটিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণ করছিল আওয়ামী লীগ সরকার।
সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়েছে। এর নিন্দা জানিয়ে ফারুকী বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় বীরশ্রেষ্ঠদের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। এগুলো সব ঠিকঠাক করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। ”
বাংলাদেশকে সব ধর্মবর্ণের মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তোলার তাগিদ দিয়ে ফারুকী বলেন, “বাংলাদেশের মন্দির থাকবে, মসজিদ থাকবে, প্যাগোডা থাকবে, গির্জা থাকবে, বোরখা থাকবে, জিনস থাকবে। সবকিছুই থাকবে বহুজনের এই সমাজে।"
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আগুনের বিচার একদিন হবেই: কাদের সিদ্দিকী
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এখন শুধুই স্মৃতি
বঙ্গবন্ধু ভবনে অবশিষ্ট কিছু নেই, সব পুড়ে ছাই
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও আগুন