“এই ধ্বংস ভবিষ্যতে বাঙালি জাতির ইতিহাসে জাতির জন্য একটি কলঙ্ক হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধু যুগ যুগ জীবিত থাকবে, তার সম্মান যুগ যুগ থাকবে।”
Published : 07 Aug 2024, 05:04 PM
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে হামলা আগুন দেওয়ার ঘটনা বাঙালি জাতির জন্য ‘কলঙ্কজনক অধ্যায়’ হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী।
যারা এটা করেছে তাদের ‘বিচার একদিন হবেই’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরেও হামলা করা হয়।
ভবনটিতে আগুন দিয়ে সব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চার দেয়াল ছাড়া সেখানে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুড়ে গেছে তিনতলা বাড়ির প্রতিটি কক্ষ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ভবনের সামনের দিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশে রাখা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও।
আগুন নেভাতে আসতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসও। পরদিন সেই বাসা থেকে চারটি পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
দুই দিন পর বুধবার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে আসেন মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী টাঙ্গাইলের খ্যাতনামা কাদেরিয়া বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া কাদের সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, “আসলে দেশে একটা বিপ্লব ঘটে গেছে, আমি ছাত্রদের এই সফল আন্দোলনকে অভিনন্দন জানাই।”
বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনা এক কথা নন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা, স্বাধীনতার মহানায়ক।”
কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আজকে ৩২ নম্বরের বাড়ি যেভাবে ভাঙতে, পুড়তে, ধ্বংস হতে দেখলাম, তার আগে আমার মৃত্যু হলে অনেক ভালো হত। নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগ অন্যায় কাজ করেছে অনেক। শেখ মুজিব কিছু করে নাই। তিনি বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেছেন। আজকের এই ধ্বংস ভবিষ্যতে বাঙালি জাতির ইতিহাসে জাতির জন্য একটি কলঙ্ক হয়ে থাকবে।
“বঙ্গবন্ধু যুগ যুগ জীবিত থাকবে, তার সম্মান যুগ যুগ থাকবে। যারা এই অপকর্ম করছে তাদের বিচার একদিন না একদিন হবেই।”
আওয়ামী লীগ করা ‘দোষের নয়’, মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কোনো আওয়ামী লীগারের গায়ে হাত দেবেন না। দেশে শান্তি স্থাপন করুন। আপনারা জয় তিলক কপালে পরুন। আমি চাই, এখন থেকে দেশে একটা শান্তি আসুক।”
শেখ হাসি চলে যাওয়ায় দেশে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কী হবে এমন প্রশ্নে জনতা লীগের নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কিছু হবে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যে বিপর্যয় এসেছিল, এটা তার চাইতে বড় বিপর্যয় নয়। কিছুটা সময় তাদের ভয় যাবে, কষ্ট যাবে। কিন্তু এটা একেবারে কিয়ামত হয়ে যাবে না।”
সারা দেশে মানুষের বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ লুটপাট হত্যার ঘটনা নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি সকল ছাত্র নেতৃবৃন্দকে বলব, দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করুন। সংখ্যালঘুদের জীবন রক্ষা করুন।
“ছাত্র নেতৃবৃন্দকে বলছি, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা এখন তাদের সব থেকে বড় দায়িত্ব এবং সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবে না, এটাই আমি আশা করি।”
মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত ফেরার আহ্বান
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে বেছে নেওয়া মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “তাকে তত্ত্বাবধায়কের বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে, তাকে অভিনন্দন জানাই এবং তার এখন এক মুহূর্তে প্যারিসে বসে থাকা ঠিক মনে হয় না।”
“দেশে শান্তি শৃঙ্খলা না আনতে পারলে তারও পরিণতি এ রকম হবে। সে জন্য আমি সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলছি, সবাইকে। নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকতে বলছি।”