আইএমএফের শর্তে সংস্কারের ‍উদ্যোগ, কমছে ভর্তুকি

বাজারভিত্তিক সুদহার ও মুদ্রানীতির কাঠামোতে ‘মনিটারি টার্গেটিং’ এর স্থলে ‘ইন্টারেস্ট রেট টার্গেটিং’ দিকে সরে আসার কথা বলছেন অর্থমন্ত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2023, 07:25 PM
Updated : 1 June 2023, 07:25 PM

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পর্যায়ক্রমে ভুর্তকি কমিয়ে আনা, কর বাড়াতে রাজস্ব খাতের সংস্কার এবং আর্থিক খাতে সুশাসন আনতে বড় সংস্কারের ঘোষণা এসেছে বাজেটে।  

এছাড়া বাজারভিত্তিক সুদহার চালু, ডলারের একাধিক বিনিময় হারের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনা, রিজার্ভ বাড়াতে সাশ্রয়ী অর্থায়ন সংগ্রহ, বিদেশ ভ্রমণে কর বৃদ্ধি ও খেলাপী ঋণ কমাতে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের ঘোষণাও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

‘স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে’ যাত্রার প্রত্যাশা রেখে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব তিনি ঘোষণা করেছেন, সেখানেই এসব উদ্যোগের কথা এসেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপের মুখে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে গতবছর আইএমএফ এর ঋণের আবেদন করে বাংলাদেশ। ঋণ চুক্তির সময় বাংলাদেশ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের শর্তে সম্মতি দিয়েছিল।

৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার হাতে পায় বাংলাদেশ। এর আগে ও পরে বাংলাদেশ পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোসহ আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়।

বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনতে কর অব্যাহতি দেওয়া বন্ধ করার পাশাপাশি কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি এবং আর্থিক খাত সংস্কারের পরামর্শও দিয়ে আসছে আইএমএফ।

রিজার্ভ নিয়ে আশায় অর্থমন্ত্রী

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল দ্রব্যের আমদানির ওপর কড়াকড়ি অরোপ, ঋণপত্র (এলসি) খুলতে বিভিন্ন হারে মার্জিন নির্ধারণের যে বিধি-নিষেধ চলমান রয়েছে তা আগামী অর্থবছরেও অব্যাহত থাকবে।

“আগামী অর্থবছরেও আমরা সতর্ক থাকব এবং সংকুলানমূলক নীতি গ্রহণ করব,” বলেন তিনি।

দেশের অর্থনীতি মহামারীর ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে ২০২১-২২ সালে আমদানি ব্যয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ৩৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। একই অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কমে যায়।

এই চিত্র জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এতে চলতি হিসাবে ঘাটতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়, যা আগের অর্থবছের ছিল ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। পাশাপাশি, রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন ও বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির ফলে আর্থিক হিসাবও নেতিবাচক অবস্থানে চলে আসে। চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাবের যুগপৎ ঘাটতি লেনদেনে ভারসাম্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়।”

এতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার থেকে কমতে কমতে ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডলারের তুলনায় টাকার মূল্যমানও কমেছে।

প্রতি ডলারের বিনিময় হার ২০২২ সালের জুন মাসের ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে গত ২৪ মে হয়েছে ১০৮ টাকা ১০ পয়সা।

মুস্তফা কামাল বলেন, “ব্যাংকের চাহিদা মেটাতে বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক চেষ্টায় বাজারে সাময়িক তারল্যসংকট তৈরি করে। এর প্রভাবে ব্যাংক উৎস হতে ঘাটতি অর্থায়নে সরকারের সুদ ব্যয় বৃদ্ধি পায়।”

রিজার্ভ বাড়াতে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির চেষ্টা এবং রপ্তানি আয় বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথাও বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “পাইপ লাইনে থাকা বৈদেশিক অর্থায়ন ছাড় করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে রিজার্ভ পরিস্থিতি আরো ভালো অবস্থায় চলে আসবে।”

বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোত্তম ব্যবহার করে সাশ্রয়ী অর্থায়নের জন্য বিদেশি উৎস থেকেও অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

ব্যাংক খাতের সংস্কার

দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বাড়তে বাড়তে গত মার্চে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। ওই অংক ২০২২ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ বা ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা বেশি।

খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে আনা এবং খেলাপিদের ছাড় দেওয়া বন্ধের সুপারিশ রয়েছে আইএমএফ এর পক্ষ থেকেও।

ব্যাংক খাতের সংস্কার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “আর্থিক খাতে খেলাপি ঋণসহ আর্থিক খাতের অন্যান্য সীমাবদ্ধতা দূর করে ব্যাংক খাতের উন্নয়নে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংক এ কাজটি করবে ‘ব্যাসেল-৩’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে। সে কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী বিভিন্ন পদ্ধতিগত নির্দেশিকা তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।’’

পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় মহামারী চলাকালীন যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তাও প্রত্যাহার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আর্থিক খাতে সুশাসন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।”

ঘাটতি কমাতে ‘সময়োপযোগী’ কৌশল

ডলার সংকটের কারণে বাণিজ্য ভারসাম্য ও চলতি হিসাবে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল, ‘সময়োপযোগী’ কৌশল নেওয়ায় ভারসাম্যর সেই অস্থিতিশীলতা ‘কমে আসছে’ বলে মন্ত্রব্য করেন অর্থমন্ত্রী।

২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় বাজেট ঘোষণার সময়েও ‘কৌশলি’ হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মুস্তফা কামাল। কিন্তু ‘কৌশল’গুলোর বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি তখন।

মুদ্রানীতিতেও সংস্কারের ঘোষণা

আইএমএফ এর পরামর্শে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ছয় মাস অন্তর মুদ্রানীতি ঘোষণার রীতি ফিরিয়ে এনেছে। মুদ্রানীতির প্রক্ষপণ বাজারভিত্তিক ও স্বচ্ছ করার পরামর্শ দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি।

সেই আলোকে মুদ্রানীতিতে পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা ও উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে মুদ্রানীতিতে সময়োপযোগী পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

“পরিবর্তিত বৈশ্বিক ও দেশীয় বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনার চিন্তা ভাবনা করছে।

‘‘মুদ্রানীতিতে কাঠামোতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও নমনীয়তা আনা এবং মুদ্রার চাহিদা ও সরবরাহকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে কার্যকারিতা বিবেচনায় মুদ্রানীতিতে ‘মনিটরি টার্গেটিং’ এর স্থলে ‘ইন্টারেস্ট রেট টার্গেটিং’ এর দিকে সরে আসার চিন্তা করা হচ্ছে।’’

এছাড়া ব্যাংকের সুদ হার এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে ‘বাজারভিত্তিক করার কাজ চলছে’ বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মুদ্রানীতির বর্তমান কাঠামোতে মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করা হয়। অর্থনীতির আকার বড় হওয়ায় এটি সেভাবে আর কাজ করছে না।

“এখন বাজারে মুদ্রা সরবরাহের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে বাজারভিত্তিক সুদহার নীতিকে। বাজারভিত্তিক হওয়ায় সুদহার প্রয়োজনে ওঠা-নামা করবে।”

সুদহার ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ আইএমএফ গতবছরই ছিয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তি বাংলাদেশ পাওয়ার সময়ও এ পরামর্শ অব্যাহত থাকে।

আগামী জুলাই মাসে বছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য ঘোষণা হতে যাওয়া মুদ্রানীতিতে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের রূপরেখা থাকতে পারে।

২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংক ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশে বেঁধে দেওয়ার পর থেকেই তা তুলে দেওয়ার দাবি আসছিল অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন মহল থেকে।

মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশ পেরিয়ে গেলে এ দাবি তীব্র হওয়ায় সুদ হারের ওই সীমা তুলে দেওয়ার কথা সরাসরি না বললেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, আগামী জুলাই থেকে সুদহার করিডোর করতে ‘রেফারেন্স রেট’ ঠিক করা হবে।

গত ছয় মাসের ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার বিবেচনায় নিয়ে ‘রেফারেন্স’ রেট ঠিক করার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

‘রেফারেন্স রেট’ এরসঙ্গে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ কত বেশি সুদ যোগ করতে পারবে, ঋণ বিতরণের সময় তাও বলে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “রেফারেন্স রেট এর মাধ্যমে ঋণ সুদহার ১০ শতাংশের মধ্যে বেঁধে না দিয়ে বাজারমুখী করতে হবে। বাজার যে সুদহার তৈরি করে, তা হতে দিতে হবে। এজন্য বাজারকে বিশ্বাস করতে হবে। এখানে ম্যানিপুলেট করলে তা কার্যকর হবে না।”

আর সুদহার যদি বাজারমুখী না হয়, তাহলে চাপে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারও সঠিকভাবে কাজ করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার সন্দেহ হয়, যদি একটা জায়গায় সুদহার ও বিনিময় হার বেঁধে দেয়- তাহলে প্রকৃত অর্থে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।”

সরকারের বাজেট বাস্তবায়নে সহযোগিতা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে কী পরিমাণ মুদ্রা সরবরাহ করা হবে- তার একটি আগাম ধারণা দেওয়া হয় মুদ্রানীতিতে।

রাজস্ব খাতে সংস্কার

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, শুল্ক কাঠামো সংস্কারের মাধ্যমে যৌক্তিকিকরণ এবং রপ্তানিতে নগদ সহায়তা প্রত্যাহার করার মত পদেক্ষেপে বাংলাদেশকে যেতে হবে।

“শুল্ক কাঠামো সংস্কার ও নগদ সহায়তা ধীরে ধীরে হ্রাস করার কথা ভাবছি। নগদ সহায়তার বিকল্প অনুসন্ধানের চেষ্টা করছি।”

সুশাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সংস্কার করতে সকল আর্থিক কার্যক্রম, বিশেষ করে বাজেট প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, হিসাব রক্ষণ, অনলাইন বিল জমাকরণ, স্বয়ংক্রিয় ব্যাংক হিসাবের সঙ্গতি বিধান করে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত আর্থিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন করার উদ্যোগ চলমান রয়েছে। এর পরিধি ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’’

অটোমেটেড চালান ব্যবহার করায় ব্যাংকের পাশাপাশি কার্ডের মাধ্যমেও সরকারি বিভিন্ন ফি নেওয়া হচ্ছে। এতে সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনা সুসংহত ও অপরিকল্পিত এবং ঋণ বাবদ ব্যয় হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

সরকারি সকল ব্যয় একটি হিসাবে কেন্দ্রীভূত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমে গিয়ে সুদ বাবদ ব্যয়ের পরিমাণও কমবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজস্ব আদায় কার্যক্রম গতি আনতে অটোমোশন প্রক্রিয়ায় গতি আনা, আয়কর, শুল্ক ও মূসক বিভাগকে ডিজিটালাইজ করতে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও আসে অর্থমন্ত্রীর ব্ক্তব্যে।

করহার না বাড়িয়ে কর যৌক্তিকিকরণ, কর ব্যবস্থার সংস্কার, কর ভিত্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে করের আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হওয়ার কথাও জানান তিনি।

ভুর্তকি কমানোর ঘোষণা

কর-জিডিপি অনুপাতে বাড়ানোর বিকল্প নেই মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, “এ অনুপাত বৃদ্ধি সাধনে কর অব্যাহতি অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। অপরিহার্য কোসো কারণ ব্যতীত আমরা কর অব্যাহতির কোনো এসআরও জারি করা পরিহার করব।”

বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ কমিয়ে আনতে ভ্রমণ কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এতে ‘অধিক রাজস্বের’ যোগান হবে।

এছাড়া কর রেয়াত, ছাড়, অব্যাহতি, হ্রাসকৃত কর আরোপ ও মোট করযোগ্য আয় পরিগণনা থেকে আয় বাদ দেওয়াকেই ‘প্রত্যক্ষ করব্যয়’ বলা হয়।

এটি এক ধরনের কর ভর্তুকি বলে মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারের অন্যান্য ভর্তুকির সঙ্গে করব্যয়ও ভর্তুকির অন্তুর্ভক্ত হবে।

পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে করব্যয় প্রাক্কলিত ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে কর্পোরেট পর্যায়ে কর ৮৫ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা।

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রত্যক্ষ করব্যয় এর পরিমাণ হবে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। এর সঙ্গে প্রাক্কলিত ভর্তুকির পরিমাণ যোগ করলে মোট ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৮৯ হাজার ২২৮ কোটি টাকা।