চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরে খালে পড়ে সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমদের নিখোঁজ হওয়ার জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (সিসিসি) দায়ী করেছে তদন্ত কমিটি।
Published : 03 Nov 2021, 07:54 PM
গত ২৫ অগাস্ট জলাবদ্ধতার মধ্যে বন্দর নগরীর মুরাদপুর মোড়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চশমা খালে পড়ে নিখোঁজ হন ৫৫ বছর বয়সী সালেহ। তার খোঁজ আর পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে। সাত সদস্যের ওই কমিটি সোমবার প্রতিবেদন জমা দেয়।
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিবেদন বিভাগীয় কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছি। তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রতিবেদনটি পাঠাবেন।”
ঘটনাটিকে ‘মর্মান্তিক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখনও উনার সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ ব্যক্তির ছেলের সাথেও আমরা কথা বলেছি।”
এই ঘটনার ‘কারা দায়ী’ তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল তদন্ত কমিটিকে।
কী পেয়েছে কমিটি- প্রশ্নে মিজানুর বলেন, “সিডিএ এবং সিটি করপোরেশন সেখানে কাজ করার ক্ষেত্রে অথরাইজড। সুতরাং দায়-দায়িত্বও তাদের।”
সালেহ আহমদের মৃত্যুর পর এই ঘটনায় দায় নিয়ে একে অন্যের দিকে আঙুল তুলেছিল দুই সরকারি সংস্থা সিসিসি ও সিডিএ।
তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, “আশপাশের দোকানদারদের কাছে জিজ্ঞাসা করে তদন্ত কমিটি জানতে পারে, সেখানে (সড়ক সংলগ্ন খালের উপর) আগে স্ল্যাব ছিল। স্ল্যাব ভাঙা হলেও কোনো রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর কাছ থেকে একটি তালিকা পেয়েছিল তদন্ত কমিটি, সেখানে ৫ হাজারের মতো এরকম ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের কথা বলা হয়।
“তারা (সিসিসি) দেড় হাজারের মতো স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। তারা দাবি করেছে, বাকিগুলো সিডিএ’র ৩৬টি খালের সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায়।”
আগামী বর্ষার আগে সবগুলো পয়েন্টকে নিরাপত্তার আওতায় আনার উপর জোর দিয়ে মিজানুর বলেন, “আমরা বলেছি, সিডিএ কাজ করছে বলে সিটি করপোরেশন চুপচাপ বসে থাকলে হবে না। কারণ তাদের মূল দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুযোগ নিশ্চিত করা। যা তারা এড়িয়ে যেতে পারে না।”
গত কয়েক মাসে চট্টগ্রামে খালে বা নালায় পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। সালেহ আহমদের পর ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে আগ্রাবাদ এলাকায় ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় নাছির ছড়া খালে পড়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া (১৯)।
সাদিয়ার মৃত্যুর পরও খালে পড়ে মৃত্যুর দায় নিয়ে পরস্পরের দিকে আঙুল তোলে সিটি করপোরেশন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সিডিএ।