দুর্ঘটনায় আহত উইং কমান্ডার সোহান হাসান খাঁন বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়ার্ডনে চিকিৎসাধীন।
Published : 09 May 2024, 02:08 PM
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আহত দুই বৈমানিকের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নৌবাহিনীর ইসা খাঁ ঘাঁটির বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের মৃত্যু হয় বলে পতেঙ্গা থানার ওসি কবীরুল ইসলাম জানান।
ওই ঘটনায় আহত উইং কমান্ডার সোহান হাসান খাঁন বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়ার্ডনে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন ওসি।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর ফেরার পথে বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় ওই বিমানে আগুন লেগে যায়। পরে সেটি চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের কাছে কর্নফুলী নদীতে বিধ্বস্ত হয়ে তলিয়ে যায় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা।
তিনি বলেন, “বিমানের পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাশুট দিয়ে নেমে আসেন। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।”
স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের ডা. মো. আমান উল্লাহ ও নীলুফা আক্তার খানমের ছেলে। ১৯৯২ সালে তার জন্ম।
সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি করে ২০১০ সালে তিনি বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে যোগ দেন এবং ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন পান। একাডেমিতে ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান ‘সোর্ড অফ অনার’ পান তিনি।
বিমান বাহিনীর ৩২ বছর বয়সী এই অফিসার স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈমানিকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানও মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন শোকবার্তা দিয়েছেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর YAK 130 প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে’ দুর্ঘটনায় পড়ে।
রাশিয়ার তৈরি YAK 130 কে বলা হয় অ্যাডভান্সড জেট প্রশিক্ষণ বিমান। এর মাধ্যমে চতুর্থ ও পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গি বিমানের প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়। তাছাড়া হালকা জঙ্গি বিমান এবং গোয়েন্দা বিমান হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে এ ধরনের ডজনখানেক উড়োজাহাজ রয়েছে।
কর্ণফুলী নদীর মোহনায় এ দুর্ঘটনার পর কিছুসময় জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে সতর্কতা তুলে নেওয়া হয় বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এ দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য বিমান বাহিনী উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।