প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মোহাম্মদ নাঈম শেখের যা রেকর্ড, তাতে টেস্ট দলের দৃষ্টি সীমানাতেও ছিলেন না বাঁহাতি এই ওপেনার। বিস্ময়করভাবে তার দলে আসা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। এবার টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক জানালেন, কিসের ভিত্তিতে অভাবনীয় ডাক পেয়েছেন নাঈম।
Published : 03 Dec 2021, 03:52 PM
২০১৯ সালের ভারত সফরে নিদারুণ ব্যর্থতার পর থেকে টেস্ট দলের বাইরে আছেন ইমরুল কায়েস। চলতি বছরের শুরুতে হুট করে দলে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি টেস্ট খেলে ফেলা সৌম্য সরকার আপাতত এই সংস্করণে ভাবনায় নেই। এনামুল হক ২০১৪ সালের পর থেকে নেই টেস্ট দলেই।
আপাতত টেস্টে ওপেনিংয়ের জন্য বাংলাদেশের ভাবনায় কেবল তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান। চোটের জন্য পাকিস্তান সিরিজে নেই তামিম, খেলবেন না নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পরের সিরিজেও। তার অনুপস্থিতিতে ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে মাহমুদুল হাসান জয়কে নেয় বাংলাদেশ, যিনি মূলত খেলেন তিনে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকেই সাইফের টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চট্টগ্রাম টেস্টে সেই ঘাটতিই পরিষ্কারভাবে সামনে আসার পর একাদশে জায়গা নড়বড়ে হয়ে গেছে তার। তিনিই টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ায় দ্বিতীয় টেস্টের দলে ব্যাকআপ ওপনার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন নাঈম।
যিনি সবশেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন ২১ মাস আগে। এই সংস্করণে তার গড় কেবল ১৬.৬৩! টি-টোয়েন্টি সংস্করণে দলের প্রথম পছন্দের ওপেনার হলেও তার প্রান্ত বদল করে খেলার সামর্থ্য নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।
সদ্য সমাপ্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের টুর্নামেন্ট জাতীয় ক্রিকেট লিগে সর্বোচ্চ রান করা ১০ ব্যাটসম্যানের ছয় জনই টপ অর্ডার। এদের তিনজন আব্দুল মজিদ, মাইশুকুর রহমান, তানজিদ হাসান ওপেনার। তাদের কাউকেই না ডেকে নাঈমকে সুযোগ দেন নির্বাচকরা। পরে প্রধান নির্বাচক জানান, সিস্টেমের মধ্যে থাকায় ডাক পেয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
এবার অধিনায়ক মুমিনুল জানালেন, ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের টেস্ট দলে আসার কারণ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগের দিন শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা করলেন প্রেক্ষাপট।
“সত্যি বলতে আমার আর কোনো ব্যাকআপ ওপেনার নেই। নাঈম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ভেতরে আছে। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হঠাৎ ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে একজন খেলোয়াড় নিয়ে এলে…হুট করে কাউকে নেওয়ার থেকে এমন কাউকে নেওয়া যায়, যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ভেতরে আছে।”
তাহলে কি লাল বল, সাদা বলে খেলার কোনো অর্থ নেই, স্রেফ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে গেলেই হয়? মুমিনুল দিলেন তারও ব্যাখ্যা।
“অবশ্যই লাল বল, সাদা বলে খেলার বড় ভূমিকা থাকে। কিন্তু আপনার যখন ব্যাকআপ ওপেনার থাকবে না, তখন আল্টিমেটলি যে খেলার ভেতরে থাকবে তাকে অনুশীলন করিয়ে ক্যারি করবেন।”
“জাতীয় লিগের পারফরম্যান্স বিবেচনায় আসে না? বিবেচনায় যে আসে না, তা না। আমার কাছে মনে হয় যে, খেলার ভেতর থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।”
গত ২৪ নভেম্বর শেষ হয়েছে জাতীয় লিগের আসর। লাল বলে খেলার মধ্যেই ছিলেন ফজলে মাহমুদ, অমিত হাসান, মজিদ, মাইশুকুর, তানজদিরা। জাতীয় লিগের পারফরমারদের বাদ দিয়ে কেন এমন পরীক্ষা? মুমিনুল বললেন, দলে আনা প্রতিটি পরিবর্তন প্রয়োজনে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নয়।
“আপনারা যদি দেখেন, এখানে কিন্তু জুনিয়র কাউকে আনা হয়নি পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য। তামিম ভাই নেই, তার জায়গায় ওপেনার দরকার ছিল, জয় আসছে, (আসন্ন) নিউ জিল্যান্ড সিরিজের ব্যাকআপ হিসেবে নাঈম আসছে। সাকিব ভাই ছিলেন না, উনার জায়গায় (ইয়াসির আলি চৌধুরি) রাব্বি খেলল প্রথম টেস্ট। রিয়াদ ভাইতো অবসর নিয়ে নিলেন। ওইসব জায়গাতে তো নতুন কাউকে নিতে হবে।”
“অনেক বেশি পারফরম্যান্স করেছে এমন খেলোয়াড় আমাদের নেই। আমার মনে হয়, আপনারা এটা আমার চেয়ে ভালো জানেন। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কিছু নেই। যারা নেই তারা ফিরলে যারা খেলছে ওরা নিজেদের জায়গায় ফিরে যাবে।”