কলকাতার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল স্টার জলসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঋতুপর্ণের সঞ্চালনায় 'ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি' ফের সম্প্রচার করবে তারা।
Published : 04 May 2024, 02:19 PM
এক সময়ে কলকাতার বাণিজ্যিক সিনেমার তারকাদের নিজের ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্রে 'অভিনয় শিল্পী' হিসেবে তুলে ধরেছিলেন প্রয়াত নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষ। দেখিয়েছিলেন বাংলা সিনেমার নতুন দিশা।
সিনেমা বানানোর পাশাপাশি এক সময় তিনি চলচ্চিত্র, সংগীত, খেলাধুলাসহ নানা মাধ্যমের তারকাদের নিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে আড্ডা-গল্পের একটি শো উপহার দিয়েছিলেন দর্শকদের। দারুণ নন্দিত সেই 'ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি' ফের সম্প্রচার করা হবে টেলিভিশনের পর্দায়।
সাংবাদমাধ্যম এই সময় বলছে, কলকাতার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল স্টার জলসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঋতুপর্ণের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানটি ফের সম্প্রচার করবে তারা।
'ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি'তে প্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী অপর্ণা সেন থেকে মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল, ক্রিকেট তারকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, নির্মাতা-গায়ক অঞ্জন দত্ত, সঞ্চালক মীর আফসার আলী মীরসহ আরও অনেকে এসেছিলেন। তবে কবে, কখন এই শো পুনঃসম্প্রচার হবে তা এখনও জানায়নি স্টার জলসা। কেবল টেলিভিশনের পর্দায় অনুষ্ঠানের প্রোমো চালানো হয়েছে।
মানুষের ‘ভেতরের’ জগতের গল্প পর্দায় তুলে আনা নির্মাতা ঋতুপর্ণর মৃত্যু হয় ৪৯ বছর বয়সে, ২০১৩ সালের ৩০ মে কলকাতায়।
জীবদ্দাশায় যে ১৯টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন ঋতুপর্ণ, তার মধ্যে ১২টিই বিভিন্ন শাখায় ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতে। সেরা পরিচালক ও চিত্রনাট্যকারের পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন বেশ কয়েকবার। এছাড়া আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও রয়েছে তার।
নিজের নির্মিত সব চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য নিজেই লিখেছেন ঋতুপর্ণ।
‘হীরের আংটি’র মধ্য দিয়ে ১৯৯৪ সালে চলচ্চিত্র জগতে আসেন ঋতুপর্ণ। একই বছর ‘উনিশে এপ্রিল’ নির্মাণ করেন তিনি, যা তাকে এনে দেয় ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
তার চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- দহন, নৌকাডুবি, তিতলী, সব চরিত্র কাল্পনিক, শুভ মহরত, অন্তরমহল, বাড়িওয়ালি, আবহমান, উৎসব, খেলা, দোসর, সানগ্লাস ইত্যাদি। তার নির্মিত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র চিত্রাঙ্গদা।
তার হিন্দি চলচ্চিত্র রেইন কোট ২০০৪ সালে ভারতের সেরা হিন্দি চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায়। এতে অভিনয় করেন ঐশ্বরিয়া রাই। এই অভিনেত্রী চোখের বালিতেও অভিনয় করেন। ঐশ্বরিয়ার স্বামী অভিষেক বচ্চন অন্তরমহলে অভিনয় করেন।
২০০৭ সালে ভারতের সেরা ইংরেজি চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী ঋতুপর্ণের একমাত্র ইংরেজি চলচ্চিত্র ‘লাস্ট লিয়ার’ এ অভিনয় করেন অমিতাভ বচ্চন।
এছাড়া কলকাতার ইটিভি বাংলায় সম্প্রচারিত ‘এবং ঋতুপর্ণ’ ও স্টার জলসায় সম্প্রচারিত ‘ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি’ অনুষ্ঠানে উপস্থিতিও দর্শকদের কাছে প্রিয় করে তোলে এই চলচ্চিত্র নির্মাতাকে।
২০১০ সালে একটি জনমত জরিপে ‘দশকের সেরা বাংলা চলচ্চিত্রকার’ নির্বাচিত হন ঋতুপর্ণ। তিনটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন এই নির্মাতা।
প্রসেনজিৎ-চিরঞ্জিতদের কাছে ঋতুপর্ণর প্রস্থান ‘অবিশ্বাস্য’
ঋতুপর্ণ ঘোষের জন্য প্রণাম, ভালোবাসা ও ফুলের সুগন্ধ