জুটি বেঁধে আবারও শিকারে প্রস্তুত আফ্রিদি-হাসান

দুজনের বোলিংয়ের পার্থক্য অনেক। তবে তাদের মনের মিল অনেক। পারস্পরিক বোঝাপড়া দারুণ। শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলির সেই রসায়নে ম্যাচের পর ম্যাচ পুড়ছে প্রতিপক্ষের টপ অর্ডার। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারও ছারখার হয়েছে এই দুজনের আগুনে। এবার দুজন প্রস্তুত একসঙ্গে আরও একটি ম্যাচে জ্বলে উঠতে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2021, 01:19 PM
Updated : 3 Dec 2021, 03:49 PM

পেস বোলাররা সাধারণত জুটি বেঁধে বল করতেই পছন্দ করে। যুগে যুগে ক্রিকেট ইতিহাস রাঙিয়েছেন অনেক বোলিং জুটি। আফ্রিদি ও হাসানের নাম এখনও তাদের পাশে উচ্চারিত হওয়ার সময় হয়নি। তবে এই বছরের দুর্দান্ত ধারাবাহিকতায় সেই উচ্চতার পথে ছোটার ইঙ্গিত তারা দিয়েছেন নিশ্চিতভাবেই।

এই বছর ৮ টেস্টে খেলে ৪৪ উইকেট আফ্রিদির, সবদেশ মিলিয়েই যৌথভাবে সর্বোচ্চ ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে। হাসানের উইকেট ৭ টেস্টে ৩৯টি, বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

তিন সংস্করণ মিলিয়ে হাসান ও আফ্রিদি যৌথভাবে সর্বোচ্চ ৭১ উইকেট নিয়ে। তাদের দুজনের কাছাকাছি নেই কেউ। ৫৩ উইকেট নিয়ে অনেকটা পেছনে থেকে দুইয়ে অশ্বিন।

দুজনের বয়সের ব্যবধান বেশ। ২১ বছর বয়সী আফ্রিদির চেয়ে ৬ বছরের বড় হাসান। বোলিংয়ের ধরনও আলাদা। আফ্রিদি বাঁহাতি, গতি তার বড় সম্পদ। সহজাত গতির সঙ্গে আছে দুই দিকেই সুইং করানোর ক্ষমতা। উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে বাউন্সও আদায় করেন বেশ। হাসান অতটা গতিময় নয়। আফ্রিদির মতো উচ্চতা বা পোক্ত শরীর তার নেই। তবে স্কিলে তিনিও সমৃদ্ধ। দুজনই নতুন-পুরনো, দুই বলেই কার্যকর। 

বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টেও দুজন দেখিয়েছেন নিজেদের ঝলক। চট্টগ্রামের উইকেটে পেসারদের জন্য সহায়তা ছিল না খুব একটা। কিন্তু দুজনই ম্যাচে নেন ৭টি করে উইকেট।

এই ধরনের পেস-প্রতিকূল উইকেটে জুটি বেঁধে বোলিং করাটা অনেক কাজে দেয়, দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বললেন আফ্রিদি।

“এশিয়ার সব উইকেটই আসলে কম-বেশি ধীরগতির। লোকে বলে যে স্পিনারদের সহায়তা বেশি মেলে। তবে শক্তপোক্ত হলে ও গায়ে জোর থাকলে এখানেও কার্যকর হওয়া যায়। জুটি বেঁধে বল করতে হয়। হাসানেরও এখানে কৃতিত্ব আছে এবং হাসানের সঙ্গে যখনই আমি বোলিং করি, আমরা নিজেদের মধ্যে ঠিক করে নেই যে, কে কখন আক্রমণ করবে, কে রান আটকে রাখবে।”

“আমার কাছে ব্যাপারটি হলো, ৩ ওভারের স্পেল হোক বা ৫ ওভারের, আগ্রাসী বোলিং করতে চাই। এভাবেই সাফল্য ধরা দিচ্ছে। দ্বিতীয় টেস্টেও আমরা আগের টেস্টের মতো পারফরম্যান্স দিতে চাই।”

পেস বোলার তো সব দলেই থাকে অনেক। জুটি সবার সঙ্গে সবার সবসময় গড়ে ওঠে না। জুটির ক্ষেত্রে পরস্পরকে বোঝা জরুরি। মাঠের ভেতরে-বাইরের সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ। আফ্রিদি বললেন, হাসানের সঙ্গে তার জমে দারুণ।

“হাসানের সঙ্গে বোলিং দারুণ উপভোগ করি। এ বছর ৩৯ উইকেট ওর, আমার ৪৪টি। আমরা জুটি বেঁধে বোলিং করি এবং নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনা করি, কোনো ব্যাটসম্যান ভালো খেলতে থাকলে কিভাবে তাকে আটকে রাখা যায় বা দ্বিধায় ফেলা যায়। হাসানের সঙ্গে বোলিং করতে তাই ভালো লাগে। কারন সে লড়াকু, লড়াই চালিয়ে যায়।”