কোন কোন ট্যানারি বন্ধ হবে, তালিকা হবে সংসদীয় কমিটিতে

সংসদীয় কমিটি এর আগে দূষণের দায়ে শিল্প নগরী সাময়িক বন্ধ রাখার সুপারিশ করলেও তা কার্যকর হয়নি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2022, 04:25 AM
Updated : 28 Sept 2022, 04:25 AM

সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর যেসব কারখানা পরিবেশ ছাড়পত্রের আবেদন করেনি এবং কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার সম্ভাবনা নেই, সেসব ট্যানারি বন্ধের জন্য তালিকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয় বলে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “সবার সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী মাসে এসব ট্যানারির তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।”

Also Read: চামড়া শিল্পে দূষণ: শিল্প ও বাণিজ্য সচিবকে তলব করবে সংসদীয় কমিটি

Also Read: চামড়া শিল্পনগরে দূষণ: সংসদীয় কমিটির 'পদক্ষেপ' কাজে আসছে?

Also Read: সাভারে ট্যানারি বন্ধে অভিযান চায় সংসদীয় কমিটি

Also Read: সাভারের ট্যানারি কেন বন্ধ হবে না, বিসিকের কাছে ব্যাখ্যা দাবি

পরিবেশ মন্ত্রণালয় ছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।

সাভারের চামড়াশিল্প নগরীতে দৈনিক ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য তৈরি হয়, যেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে ২৫ হাজার ঘন মিটার। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো ব্যবস্থাও সেখানে নেই।

সংসদীয় কমিটি এর আগে দূষণের দায়ে শিল্প নগরী সাময়িক বন্ধ রাখার সুপারিশ করলেও তা কার্যকর হয়নি। এরপরও দূষণ বন্ধে একাধিকবার বিভিন্ন সুপরিশ করেছে সংসদীয় কমিটি, তাতেও কোনো ফল আসেনি।

এমন পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বৈঠকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেয় সংসদীয় কমিটি। শিল্পমন্ত্রী এবং বাণিজ্য মন্ত্রীকেও বৈঠকে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বিশেষ আমন্ত্রণে সংসদীয় কমিটির মঙ্গলবারের বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং বিসিকের চেয়ারম্যান অংশ নেন বৈঠকে।

বৈঠক শেষে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের উদ্দেশ্য ছিল দূষণ রোধ করা। কিন্তু এখন সাভারের ধলেশ্বরী মৃতপ্রায়। আগে বুড়িগঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এখন হচ্ছে ধলেশ্বরী। চামড়া শিল্প নগরীতে কঠিন বর্জ্য পরিশোধনের কোনো ব্যবস্থা নেই। শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে তাদের ব্যর্থতা আছে।”

তিনি জানান, বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়েছে ট্যানারি কারখানাগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হবে। একটি ভাগে থাকবে যেসব কারখানা নিজেরা বর্জ্য শোধানাগার তৈরি করেছে এবং করার বিষয়ে আগ্রহী। আরেকভাগে থাকবে যেসব কারখানা কখনোই পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেনি এবং জোড়াতালি দিয়ে চলছে, যাদের কমপ্লায়েন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাকি কারখানাগুলো থাকবে তৃতীয় ভাগে।

Also Read: চামড়া শিল্পনগরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যানের

Also Read: চামড়া শিল্পের জন্য পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব

Also Read: চামড়া শিল্প নগরীতে সিইটিপি পরিচালনায় কোম্পানি হচ্ছে

“দ্বিতীয় ভাগে যেসব কারখানা থাকবে, সেগুলো দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করবে। তাদের সব সুবিধা বাতিল করা হবে। তৃতীয় ভাগে থাকা কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্ট হওয়ার জন্য ছয় মাস সময় দেওয়া হবে। আগামী মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।”

বর্জ্য পরিশোধনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছাড়া কীভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, সেজন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে কমিটির বৈঠকে।

সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, তানভীর শাকিল, মো. রেজাউল করিম এবং মো. শাহীন চাকলাদার বৈঠকে অংশ নেন।