মার্জার প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় পদ্মা ব্যাংকের তারল্য পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
Published : 14 Oct 2024, 01:36 AM
আর্থিক খাতের সংস্কারের অংশ হিসেবে গাড্ডায় পড়া ব্যাংকগুলোকে উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাত মাস আগে যে ‘মার্জার’ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, আকস্মিক সরকার বদলের পর সে উদ্যোগ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় একীভূত হওয়ার শর্ত হিসেবে নিরীক্ষার কাজও শেষ করেছিল পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংক। সেই নিরীক্ষা প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমাও দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু এখন মার্জারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউ। তাতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে মার্জারের অপেক্ষায় থাকা পদ্মা ব্যাংক।
গত মার্চ মাসে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর থেকে পদ্মা ব্যাংক আমানত সংগ্রহ কার্যত বন্ধ রেখেছে। নতুন ঋণ দিচ্ছে না। পুরনো ঋণ তদারকি এবং শাখা পর্যায়ে দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে কেবল।
এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার এক মাস পরেই পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগ করে চলে যান।সম্প্রতি তিনি বেসরকারি আরেকটি ব্যাংকে যোগ দিয়েছেন।
তারল্য যোগান দেয়ার কারণে পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদে বসতেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম। অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সোনালী ব্যাংক থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়।
একইভাবে রাষ্ট্রায়ত্ব আরো তিন ব্যাংক জনতা, অগ্রণী ও রূপালীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ শূন্য হওয়ায় পদ্মা ব্যাংক থেকেও তারা পরিচালক পদ হারিয়েছেন।
একসঙ্গে চার পরিচালক হারিয়েছে পদ্মা ব্যাংক। এখন ব্যাংকটি পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকও করতে পারছে না।
একদিকে নেতৃত্ব সংকট, অন্যদিকে ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে পদ্মা ব্যাংকের কর্মচারী এবং গ্রাহকরা।
পুরনো খবর
• আপাতত মার্জারে যাচ্ছে ১০ ব্যাংক, এর বাইরে নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক
মার্জার যেভাবে এল
ঋণ কেলেঙ্কারি, তারল্য সংকটে নাজুক দশায় পড়া আর্থিক খাতকে সঠিক পথে ফেরাতে গত ডিসেম্বরে দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বা মার্জারের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর অংশ হিসেবে প্রথমে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তখনকার গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
সেজন্য গত ডিসেম্বরেই ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন (পিসিএ)’ নামের একটি কাঠামো তৈরি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিভিন্ন সূচকের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের শাস্তির পাশাপাশি মার্জারও করা হতে পারে।
কথা ছিল, ব্যাংকের ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন দেখে পিসিএ বাস্তবায়ন করা হবে। সে হিসাবে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে দুর্বল ব্যাংকের তালিকা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে আনতে সংস্কারের যে ১৭ দফার রোডম্যাপ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক; সেখানেও কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংককে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সুপারিশ আসে।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই গত মার্চে হুট করে শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে দুর্দশায় পড়া পদ্মা (সাবেক ফারর্মাস) ব্যাংক একীভূত হওয়ার ঘোষণা আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় একীভূত হতে দুটি ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ হয়। মার্জার প্রক্রিয়া কোন পথে হবে, তা নিয়ে আলোচনা উঠলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বাণিজ্যিক ব্যাংক চাইলে নিজেরা একীভূত হতে পারবে। নইলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একীভূত করে দেবে।
পরের মাস এপ্রিলে ‘স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যাংক-কোম্পানির একীভূতকরণ সম্পর্কিত নীতিমালা’ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নীতিমালার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, “এ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হল অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকের বিদ্যমান সমস্যা সমাধান এবং একইসাথে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের কার্যক্রম উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করা; যাতে করে জনস্বার্থে একীভূত ব্যাংক-কোম্পানি অধিকতর সেবা প্রদান করতে পারে।”
অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকগুলোকে একীভূত হতে উৎসাহী করতে নীতি সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ, সিআরআর, এসএলআর, এলসিআর এর বিপরীতে বিভিন্ন হারে যে প্রভিশন রাখতে হয়, তাতে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয় নীতিমালায়।
এক্সিম ও পদ্মা ছাড়াও আরো কয়েকটি দুর্বল ব্যাংককে তুলনামূলক সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার আলোচনা হয় সে সময়।
পুরনো খবর
• সোনালীতে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল, দুই পর্ষদই রাজি
• বিডিবিএলকে অধিগ্রহণের প্রস্তুতিতে সোনালী ব্যাংক
• সরকারি সুবিধার আশায় বেসিক নিতে চায় সিটি ব্যাংক
• ৪০ বছর পেরিয়ে অন্য ব্যাংকে মিলবে এনবিএল, আলোচনায় ইউসিবির নাম
• একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত 'এখনই না', সময় নেবে এনবিএল: চেয়ারম্যান
সরকার পরিবর্তনে আটকে গেল মার্জার
গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থ্যানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পড়ে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয় ৮ অগাস্ট সন্ধ্যায়।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের সংস্থাগুলোর নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে। গভর্নরের দায়িত্ব পান আহসান এইচ মনসুর।
অন্তর্বর্তী সরকার আর্থিক খাতসহ ছয় খাতের সংস্কারে টাক্সফোর্স গঠন করে। ব্যাংক খাতের সংস্কারেও কাজ শুরু হয়।
নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যাংক খাতের আগের উদ্যোগগুলোতে ভাটা পড়ে। ব্যাংক মার্জারের বিষয়টিও থমকে যায়।
অথচ কথা ছিল, নিরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে পদ্মা ব্যাংকের দায়-দেনা ও সম্পদের পরিমাণ ঠিক করে শেয়ার দর নির্ধারণ করা হবে। তারপর এক্সিম ব্যাংক দায়িত্ব বুঝে নিলে পদ্মা ব্যাংকের নাম বিলুপ্ত হবে।
তার আগে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং উচ্চ আদালতের অনুমতি নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা ছিল। কিন্তু এখন আর সেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে না এক্সিম ব্যাংকের নতুন পর্ষদ।
‘সুন্দর সময়ের’ অপেক্ষায় এক্মিম ব্যাংক
নানা কায়দায় নিয়ম পরিবর্তন করে দীর্ঘ ১৭ বছর এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন গত সরকারের আমলে ব্যাংক খাতের দাপুটে ব্যক্তি নজরুল ইসলাম মজুমদার।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে নতুন গভর্নর দায়িত্ব নিয়ে ১১ ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন করে সাজায়। তার মধ্যে এক্সিম ব্যাংকও রয়েছে।
মার্জারের চুক্তি করার সময় সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ভাষায় এক্মিম ছিল ‘ভালো’ ব্যাংক। কিন্তু চার মাসের ব্যবধানে নতুন পর্ষদ বলছে ভিন্ন কথা।
বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কি আর বলব, ব্যাংক তো ফাঁকা করে দিয়ে গেছে। আমরা সামাল দিচ্ছি, তারল্য সংকট থাকলেও অন্যদের মত তীব্র না। এতটুকু ব্যবস্থা করতে পেরেছি।’’
নতুন চেয়ারম্যান বলছেন, পদ্মার ষাটের বেশি শাখার দায়িত্ব নেওয়ার মত সক্ষমতা এক্সিম ব্যাংকের নেই।
নতুন পর্ষদ ফের নিরীক্ষা করে ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা জানার উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, “সুন্দর সময়ের অপেক্ষায় আছি। ব্যাংক আগে ভালো হোক, তারপরে পদ্মা ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়া বা মার্জারের বিষয়টি আসবে।’’
কাঙ্ক্ষিত সেই ‘সুন্দর’ সময় কখন আসবে, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “তা বলতেও কমপক্ষে ৪-৫ মাস সময় দিতে হবে। তার আগে বলা যাবে না।”
অপেক্ষা করার কথা বললেও মার্জার চুক্তি বাতিল করা হবে কি না, তার স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান।
পুরেনো খবর
• আইন সংশোধনের পর পদ্মা ব্যাংক রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে একীভূত: অর্থমন্ত্রী
• সরকারি ব্যাংকে 'একীভূত' হতে চায় পদ্মা ব্যাংক: প্রস্তাব এখ
• এমওইউ: পদ্মার পরিচালক থাকবে না এক্সিমে, যাবে না কারো চাকরি
• পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণ করে এক্সিম ব্যাংকের কী লাভ
• দুর্দশাগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংক একীভূত হচ্ছে এক্সিমে
• পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজের পদত্যাগ
উত্তর চাইছে পদ্মা ব্যাংক
সরকার বদল আর ব্যাংক খাতের নেতৃত্বে পরিবর্তনের পর মার্জার উদ্যোগের ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পদ্মা ব্যাংক।
এ বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের মনোভাব জানতে গত সপ্তাহে নজরুল ইসলাম স্বপনের সঙ্গে দেখা করেন পদ্মা ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মোহাম্মদ তালহা। তাকেও কোনো সদুত্তর দেননি নজরুল ইসলাম স্বপন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমি পদ্মা ব্যাংকের এমডিকে (ভারপ্রাপ্ত) বলে দিয়েছি, আপাতত মার্জার নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারব না। সময় লাগবে, এরপর দেখা যাবে।”
বাণিজ্যিক ব্যাংক একীভূত করতে সমন্বয়কের দায়িত্ব নেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকও চুক্তিবদ্ধ হওয়া ব্যাংকগুলোকে কিছু বলছে না। আর তাতে করে কার্যত হিমঘরে চলে গেছে ব্যাংক খাতের মার্জার প্রক্রিয়া। তাতে করে সংকটে থাকা পদ্মা ব্যাংকের বিপদ আরো বেড়েছে।
নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর অবশ্য বলেছেন, টাস্কফোর্সের সুপারিশের পর মার্জার নিয়ে ভাবা হবে।
তার কথার প্রতিধ্বনি তুলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেছেন, “ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে এখন আলোচনা নয়। আগে সুপারিশ আসুক, তারপর।’’
নতুন সুপারিশের পর বাংলাদেশ ব্যাংক আগের মার্জার প্রক্রিয়ায় হাঁটবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
তাদের যুক্তি, তখন অনেক কিছুই বদলে যাবে। নতুন পরিবেশ আসবে। তখন কোন ব্যাংকের অবস্থা কেমন থাকে, তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত আসবে।
প্রক্রিয়ায় ভুল ছিল?
মার্জার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা জারির পর পদ্মা ও এক্সিমের মত রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসির (বিডিবিএল) দায়িত্ব নিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক।
আর অন্য ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ও বেসিক ব্যাংক মার্জ হওয়ার আলোচনা চূড়ান্ত হলেও তা চুক্তি পর্যন্ত গড়ায়নি।
এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার কথা চলছিল রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব)। রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের দায়িত্ব বেসরকারি সিটি ব্যাংককে দেওয়ার কথা এগোচ্ছিল।
এই দশ ব্যাংক মার্জ করতে পাঁচটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ রেখেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা মেজবাউল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “এই পাঁচ প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে আমরা (বাংলাদেশ ব্যাংক) অভিজ্ঞতা নেব, অভিজ্ঞাতারও প্রয়োজন আছে। তারপর দেখা যাবে।’’
এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছিল, ব্যাংক একীভূত করতে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। অডিটর নিয়োগ, সম্পদ ও দায় ঠিক করা, শেয়ার দর ঠিক করা, শেয়ার অংশ র্নিধারণ ও আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। পাঁচ প্রস্তাবের ব্যাংকগুলো একীভূত করার সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে তিন-থেকে চার বছর লেগে যেতে পারে।
ওই সময়ে মার্জ হতে আপত্তি জানিয়েছিল ন্যাশনাল ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক। এখন নতুন পরিস্থিতিতে মার্জারের মত বিষয় নিয়ে ভাবছে না এসব ব্যাংক।
বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসেন মনে করেন, গত ডিসেম্বরে নেওয়া ‘মার্জার’ প্রক্রিয়াটি সুচিন্তিত ছিল না। বরং ‘কিছু একটা করা হচ্ছে’ তা দেখানোর চেষ্টায় ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এটি একটি বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ ছিল। এটি করার আগে ব্যাংকের উপর নিবিড় নিরীক্ষা চালানো হয়নি। দুর্বল ব্যাংকের সমস্যাটি কোথায় ছিল তা বের করা হয়নি। ব্যাংকভেদে তো সমস্যা আলাদা।
“কারো তারল্য সংকট, কারো ব্যবস্থাপনা সমস্যা থাকতে পারে। এটা তো বের করতে হবে আগে। এরপর কোন পথে সমাধান তা নির্ধারণ করার সুযোগ আসবে। সেক্ষেত্রে মার্জার একটি বিকল্প মাত্র, আরো বিকল্প আছে। কোন ব্যাংকের জন্য কোনটা প্রযোজ্য, তা নির্ধারণ করা যাবে ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা জানার পরে।”
তার মতে, পদ্ধতিগত ভুলের কারণেই মার্জারের মত স্পর্শকাতর উদ্যোগটি এখন আর কোথাও পৌঁছাতে পারছে না। যে ব্যাংকগুলো চুক্তি করেছিল, তাদের এখন নতুন করে ভাবা উচিত।