২৩১ জনবল নিয়ে চালু হচ্ছে এমআরটি পুলিশ

সচিব কমিটি অনুমোদন দিয়েছে, এখন প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে শুরু হবে এমআরটি পুলিশের কাজ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2023, 11:12 AM
Updated : 30 April 2023, 11:12 AM

ঢাকার মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তায় একজন ডিআইজি, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ২৩১ জন সদস্য নিয়ে পুলিশের বিশেষ ইউনিট ‘ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট’ বা ‘এমআরটি পুলিশ ইউনিট’ গঠিত হতে যাচ্ছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি ফারুক আহমেদ রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সচিব কমিটি সম্প্রতি এমআরটি পুলিশ গঠনের অনুমতি দিয়েছে।

“অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ২৩১ জন। জনবলের মধ্যে একজন ডিআইজি, একজন পুলিশ সুপার, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও বাকি সদস্যরা বিভিন্ন পদবির,” বলেন তিনি।

মেট্রো রেল পরিচালনাকারী কোম্পানি ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত ১১ এপ্রিল সচিব কমিটি এমআরটি পুলিশ গঠনের অনুমতি দেয়। এজন্য এখন অন্যান্য আনুষ্ঠিকতা চলছে।

এদিকে রোববার সচিব কমিটির সভায় মেট্রো রেলের প্রতিটি স্টেশনে ডিজিবক্স রাখার বিষয়ে এটুআইয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে ডিএমটিসিএল।

তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিভাগের এটুআই কর্মসূচি ডিজিবক্স উদ্ভাবন করেছে। ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় একটি কোডের মাধ্যমে এ বক্স খোলা যায়, যা একটি স্থানে পণ্য সরবরাহের বিশেষ করে কুরিয়ারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

চুক্তির আওতায় মেট্রো রেল স্টেশনের 'কনকর্স' লেভেলের বাইরে ডিজিবক্সগুলো স্থাপন করা হবে। এসব বক্সে ডেলিভারির পণ্যগুলো থাকবে, যা যাত্রীরা তার সুবিধাজনক সময়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে পুলিশ সদর দপ্তর ৮০৯ জন সদস্যের জনবলের একটি কাঠামো গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর ৩৫৭ জনবলের সুপারিশ সচিব কমিটিতে জমা পড়ে।

এরপর সচিব কমিটি ২৩১ জন জনবলের অনুমোদন দিল।

কবে নাগাদ এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম চালু হবে জানতে চাইলে ফারুক বলেন, সচিব কমিটির এই অনুমোদনের পরের ধাপ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন। এরপর প্রজ্ঞাপন জারি হবে এবং তারপর কার্যক্রম শুরু হবে।

ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল গত ডিসেম্বরে চালু হয়েছে। আরও পাঁচটি মেট্রোরেল লাইন হচ্ছে, যার আওতায় থাকছে ১২৮ কিলোমিটার যোগাযোগ ব্যবস্থা। ডিএমটিসিএলের এ যোগাযোগ নেটওয়ার্কে ৫১টি উড়াল ও ৫৩টি পাতাল স্টেশনসহ মোট ১০৪টি স্টেশন তৈরি হবে।

বিশাল এ স্থাপনা ও যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের হাতে দিতে এ বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তর মনে করছে, নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও যাত্রী সুরক্ষায় পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট দরকার।

এছাড়া মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান থাকবে, এছাড়া যাত্রী নিরাপত্তার জন্য এজন্য প্রতিটি স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ির প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ি পর্যন্ত উদ্বোধনের আগে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছিলেন, এমআরটি পুলিশ স্বতন্ত্রভাবে কাজ করবে।

মেট্রোরেল বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএলের চাহিদা অনুযায়ীই এমআরটি পুলিশ গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব, আর নতুন এই মেট্রোরেলের জন্য নতুন ইউনিট গঠন হবে। কিছু প্রসিডিউর রয়েছে। সেটা শেষ হওয়ার পর নিশ্চয়ই চালু হবে নতুন ইউনিট।”

তবে সররকারের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ বাহিনী গড়ে তোলা হলেও প্রযুক্তিগত বিষয়, জবাবদিহি ও টেকসই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথাও জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক।

তার ভাষ্য,”সরকারি সংস্থার অধীনে সেবার কাজটি যথাযথভাবে হয় না। আর বিশ্বের অন্য স্থানেও এই দায়িত্বটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

Also Read: এমআরটি পুলিশ মেট্রোরেলের নিরাপত্তা-সেবা নিশ্চিত করতে পারবে?