তার বিরুদ্ধে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের ‘অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগ রয়েছে।
Published : 17 Apr 2025, 05:04 PM
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির’ অভিযোগ অনুসন্ধান শুরুর পর এবার দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আবেদনে স্ত্রীসহ তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান সরকার ও তার স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, দুদকের পক্ষে কমিশনের পরিচালক আবুল হাসনাত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।
চলতি বছরের মার্চে সিদ্দিকুর রহমানের নিয়োগ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার।
তার পর ১০ এপ্রিল সংস্থার পরিচালক মো. আবুল হাসনাতকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক। অন্য সদস্যরা হলেন- কমিশনের সহকারী পরিচালক বিষাণ ঘোষ ও উপসহকারী পরিচালক আফিয়া খাতুন।
সিদ্দিকুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবুল হাসনাত যে আবেদন করেছেন তাতে বলা হয়েছে, সিদ্দিকুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নিজ নামে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ‘জ্ঞাত আয়বর্হিভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
আবেদনের বলা হয়েছে, সিদ্দিকুর রহমান ও তার স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশন ‘বিদেশে পালিয়ে’ যাওয়ার চেষ্টা করছেন’। তারা ‘বিদেশে পালিয়ে’ গেলে তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করছে দুদক।
গত বছরের এপ্রিলে সিদ্দিকুর রহমান সরকারকে দুই বছর মেয়াদে রাজউক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার।
সে বছর ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে ১৯ সেপ্টেম্বর তার নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
পরে আবার সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে তাকে পুনর্বহালের কথা জানানো হয়েছিল ২২ সেপ্টেম্বর। তবে চলতি বছরের মার্চে তার নিয়োগ বাতিল করা হয়।
অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে সিদ্দিকুর রহমানের তথ্য চেয়েছে দুদক। এসব তথ্য যথাক্রমে ১৬ ও ১৭ এপ্রিলের মধ্যে চেয়েছে সংস্থাটি।
মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকাকালে সিদ্দিকুর রহমানের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য বৈধ সুযোগ-সুবিধা, এ সময়ে কোনো অভিযোগে তদন্তের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নেওয়ার কোনো তথ্য থাকলে তা দুদকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজউকের বোর্ড সভার তথ্য চেয়ে বর্তমান রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
রাজউকের সাবেক এই চেয়ারম্যানের ব্যাংক লেনদেন যাচাইয়ে দেশের ৬৪টি তফসিলি ব্যাংকে তার হিসাবের তথ্য চেয়েও চিঠি দিয়েছে দুদক।