জনশুমারি প্রতিবেদনের অপেক্ষা কঠিন হয়ে যাচ্ছে: ইসি আলমগীর

সীমানা পুননির্ধারণ করতে মঙ্গলবার বসছে নির্বাচন কমিশন, জুলাইয়ের মধ্যে ৩০০ আসনের চূড়ান্ত গেজেট করার পরিকল্পনা ইসির।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2023, 01:56 PM
Updated : 5 Feb 2023, 01:56 PM

সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করে থাকা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে কমিশনার আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের মঙ্গলবারের সভায় সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত নিয়ে বসছে।

তিনি বলেন, “পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে জনসংখ্যার চূড়ান্ত রিপোর্ট আমরা এখনো পাইনি। আমাদের অপেক্ষা করা একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কাজ শুরু করতে হবে।”

মো. আলমগীর বলেন, “৭ ফেব্রুয়ারি আমাদের সভা। একেবারেই প্রথম সভা। এজেন্ডা একটাই। আমরা কাজ শুরু করব। আলোচনা শেষে আইন অনুযায়ী সীমানা পুনর্নির্ধারণে আমাদের কার্যপদ্ধতি ও নীতিমালা নির্ধারণ করা হবে।

“আমাদের প্রাথমিক কাজগুলো কাগজপত্র জোগাড়, তথ্য জোগাড়- এসব করে ফেলেছি। … ৭ ফেব্রুয়ারি সভা করে এখন নীতিমালা করে এগোব।”

জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন অনুযায়ী, প্রতি জনশুমারির পর সংসদ নির্বাচনে সীমানা নির্ধারণ করার বাধ্যবাধকতা আছে।

এ বছর ৩১ অক্টোবর থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে। ২৯ জানুয়ারির মধ্যে হবে সংসদ নির্বাচন। এর ছয় মাস আগেই ৩০০ আসনের সীমানা পুননির্ধারণ করার পরিকল্পনা ইসির। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে এ কাজ শেষ করার কথা।

গত বছর ২৭ জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ষষ্ঠ জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার বলে জানানো হয়। ছয় মাসের মধ্যে জনশুমারি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য কাজ করছে বলে তখন জানিয়েছিল পরিসংখ্যান ব্যুরোর জনশুমারি বিভাগ।

সীমানা পুননির্ধারণ আইন অনুযায়ী, ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রেখে সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনের জনসংখ্যার যতদূর সম্ভব ‘বাস্তব বণ্টনের’ ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, “শুধু একটাই ফ্যাক্টর আছে, সেটা হলো জনসংখ্যার কারণে। এখন জনসংখ্যার জন্য মাইগ্রেশনের (স্থান পরিবর্তন) যে পরিবর্তনটা আসে, সেক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসে। জনসংখ্যাকে তো আর সমবণ্টন করা যায় না। প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা ঠিক রাখলে জনসংখ্যা মেলানো কঠিন হয়ে যায়।

“সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা হচ্ছে তিন নম্বর গুরুত্ব। প্রথম গুরুত্ব হচ্ছে প্রশাসনিক; যদি কোনো প্রশাসনিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে তাহলে তো আমাদের পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। যদি কোনো ভৌগোলিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে তাহলেও করার প্রয়োজন নেই।”

সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ৩০০ আসনের সীমানা পুননির্ধারণ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করার আশা প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। 

নিয়ম অনুযায়ী, আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য ৩০০ নির্বাচনী এলাকার খসড়া তালিকা করতে হবে। সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়ায় ইসি অনুমোদন দিলে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ এবং এর উপর দাবি-আপত্তি-সুপারিশ চাওয়া হবে। শুনানির মাধ্যমে দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ৩০০ নির্বাচনি এলাকার নতুন সীমানা চূড়ান্ত করা হবে এবং তারপর গ্রেজেট প্রকাশ করবে ইসি।

সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছিল।

আরও খবর-

Also Read: জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেলে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস: ইসি

Also Read: বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার

Also Read: জনশুমারি: গ্রামে সাড়ে ১১ কোটি, শহরে ৫ কোটি

Also Read: বিআইডিএসের ‘সত্যতা’ যাচাইয়ের পর জনশুমারির চূড়ান্ত ফলাফল