পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
Published : 17 Oct 2023, 10:03 PM
মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স নিয়ে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ এবং চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় আরো তিন জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
দুদকের সহকারী পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন, দুদকের এএসআই মো. হারুনুর রশিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার হিসাবরক্ষক মো. কামরুল হাছান মঙ্গলবার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে সাক্ষ্য দেন। পরে তাদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
তিনজনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে এ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেন বলে দুদকের কৌঁসলি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান।
গত ১২ জুন ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলায় বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। ১৪ অগাস্ট মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীর জবানবন্দি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ডা. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক ডা. মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে সাহেদ কারাগারে এবং বাকিরা জামিনে আছেন।
২০২১ সালে স্বাস্থের সাবেক ডিজি আজাদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
সেখানে আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্সের মেয়াদবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার অভিযোগ আনা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। সেখানে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা না হলেও তদন্তে নাম আসায় চার্জশিটে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর কোভিড- ১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ২০২০ সালের ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন।
তিন মাস না যেতেই করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে রিজেন্টের বিরুদ্ধে। এরপর গত বছর ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয় র্যাব।
তখন জানা যায়, চুক্তি হওয়ার বহু আগে ২০১৭ সালেই হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ওই হাসপাতালের অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য বিভাগ।
২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদে ছিলেন ডা. আজাদ। সরকারি চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পরও তাকে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়ে ওই পদে রেখেছিল সরকার।
কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ হতে থাকলে বিপাকে পড়তে হয় ডা. আজাদকে। মাস্ক কেলেঙ্কারির পর করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ার ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণ ও জালিয়াতির খবর ফাঁস হলে তিনি তোপের মুখে পড়েন। এরপর গতবছরের ২১ জুলাই তিনি পদত্যাগপত্র দেন।
তার আগে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা চলছে।
পুরনো খবর
দুদকের মামলায় সাহেদসহ স্বাস্থ্যের আজাদের বিচার শুরু
স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আজাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ, শুনানি ১৬ মার্চ
দুদকের মামলায় সাহেদসহ স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজির নামে অভিযোগপত্র
রিজেন্ট কেলেঙ্কারি: সাহেদের সঙ্গে আসামি হচ্ছেন স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আজাদ