দুদকের মামলাটিতে আরও এক সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
Published : 05 Jun 2023, 07:38 PM
ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপির আইনজীবীদের বিক্ষোভের মধ্যেই এজলাসে চলছে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ।
গত কয়েকদিনের শুনানির মতো সোমবারও ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় বাইরে বিএনপির আইনজীবারা বিক্ষোভ করে।
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে ১৬ বছর আগের এই মামলাটি বর্তমান সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে এগিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপির।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের এই মামলায় গত এপ্রিলে অভিযোগ গঠন শুরুর পর সরকার সমর্থক ও বিরোধী দল সমর্থকদের আইনজীবীদের হৈ হট্টগোলের মধ্যেই শুনানি এগিয়ে চলছে।
সোমবার আদালতে সাক্ষ্য দেন মাহমুদ হোসেন নামে আরও একজন। তিনি ইসলাম গ্রুপের পরিচালক। মামলার ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে তাকে নিয়ে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হল।
মাহমুদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন বলে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানিয়েছেন।
গত ২১ মে মামলার বাদী দুদকের উপ পরিচালক জহিরুল হুদার জবানবন্দি গ্রহণের মাধ্যমে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এরপর শুনানির এক দিন আদালত কক্ষে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হৈ চৈ, ধাক্কাধাক্কিতে বিচারককে এজলাসও ছাড়তে হয়েছিল।
তারপর শুনানির দিনগুলোতে বিএনপির আইনজীবীদের বিক্ষোভ চললেও বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত হয়নি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক ও তার স্ত্রীকে পলাতক দেখিয়ে এই মামলার বিচার চলছে। তারা দেড় দশক ধরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানাও রয়েছে।
মামলা বিত্তান্ত
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তারেক গ্রেপ্তার থাকা অবস্থায় ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা। তিনি সম্প্রতি আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারেক ও জোবায়দার ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে।
মামলায় জোবায়দার মা ইকবাল মান্দ বানুকেও আসামি করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় আদালতে। পরে উচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম বাতিল করে দেয়।
তারেক-জোবায়দার মামলায় প্রথম দিনই সাক্ষী আসেনি
তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন মামলাকারী দুদক কর্মকর্তা
তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে মামলায় আবার সাক্ষী গরহাজির
তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষ্য দিলেন তিন ব্যাংকার
অভিযোগপত্র জমা হওয়ার পর মামলা বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করা হয় জোবায়দার পক্ষেও। তখন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাই কোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাই কোর্টের আদেশ বহাল রাখে।
এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে রায় দেয় হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই আপিলের আবেদন করেন জোবায়দা।
এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখে।
এরপর গত ১৩ এপ্রিল তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার।
তারেক ২০০৮ সালে তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোতে জামিন নিয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান চিকিৎসা নিতে। তারপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন।