তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষ্য দিলেন তিন ব্যাংকার

এ মামলায় ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে এই পর্যন্ত জবানবন্দি দিয়েছেন বাদীসহ ৬ জন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2023, 09:43 AM
Updated : 29 May 2023, 09:43 AM

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের করা অবৈধ সম্পদের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন এক বেসরকারি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা।

এবি ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখার সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম মুসা করিম, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওবায়দুর রশিদ খান এবং কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ সোমবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে জবানবন্দি দেন।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিচারক এদিন তিনজনের জবানবন্দি শুনে মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন।

রোববারও এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। কিন্তু কোনো সাক্ষী না আসায় বিচারক সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছিলেন।

মামলার ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত বাদীসহ ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় কোনো সাক্ষীকেই জেরার মুখোমুখি হতে হচ্ছে না।

গত ২১ মে মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদার জবানবন্দি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছিল।

তারপর ২৫ মে সাক্ষ্য দেন পিরোজপুরের কাউখালীর এমরান আলী শিকদার এবং নড়াইলের লোহাগড়ার সৈয়দ আজাদ ইকবাল। তারা দুইজনই বিএনপির মুখপত্র দৈনিক দিনকাল পত্রিকার হিসাব বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

অভিযোগপত্রে সাক্ষীর তালিকায় রয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা লায়লা জাকারিয়া, প্রাইম ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, আবদুল্লাহ আল হাসান এবং শেখ আশরাফুল ইসলাম।

এই সাক্ষীদের কেউ রোববার আদালতে আসেননি। তাদের ঠিকানায় তাদের পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

দেড় যুগ আগের এই মামলায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রীকে পলাতক দেখিয়ে তাদের বিচার চলছে।

মামলা বৃত্তান্ত

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার কাফরুল থানায় করা দুদকের মামলাটিতে অভিযোগ করা হয়, তারেক ও জোবায়দার ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে।

মামলায় জোবায়দার মা ইকবাল মান্দ বানুকেও আসামি করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় আদালতে। পরে উচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম বাতিল করে দেয়।

অভিযোগপত্র জমা হওয়ার পর মামলা বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করা হয় জোবায়দার পক্ষেও। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাই কোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাই কোর্টের আদেশ বহাল রাখে।

এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে রায় দেয় হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই আপিলের আবেদন করেন জোবায়দা।

এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখে। এরপর নিম্ন আদালতে মামলাটি আবার গতি পায়।

গত ১৩ এপ্রিল তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠনেরমধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার।

জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার তারেক তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোতে জামিন নিয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান চিকিৎসা নিতে। তারপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক লন্ডনে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

পুরনো খবর

Also Read: তারেক-জোবায়দার মামলায় প্রথম দিনই সাক্ষী আসেনি

Also Read: তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে মামলায় আবার সাক্ষী গরহাজির

Also Read: তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে আরও দুইজনের সাক্ষ্য