ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
Published : 12 Nov 2020, 01:43 AM
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থী ভোটে থাকলেও অনেকটা নিরুত্তাপ পরিবেশে এ নির্বাচন হচ্ছে। আচরণবিধি নিয়ে ঢাকায় বিএনপি প্রার্থীর ছোটোখাটো অভিযোগ থাকলেও বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এ দুই উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও ভোটারদের হ্যান্ড স্যানিটাইজ করার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করা হবে।
সাবেক দুই মন্ত্রী সাহারা খাতুন ও মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে এ দুটি আসন শূন্য হয়।
>> বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা-বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে।
>> ভোটের দিন সাধারণ ছুটি নেই নির্বাচনী এলাকায়।
>> বুধবার ইভিএম কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে।
>> মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে মটরসাইকেল, ট্রাক ও পিকআপ চলাচলে কড়াকড়ি রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এর আগে ইভিএমে ঢাকা-১০, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। সব শেষ গেল ১৭ অক্টোবর দুই আসনে ইভিএমে ভোট হয়।
এরপর এ দুটি আসনেও ইভিএমে ভোট হতে যাচ্ছে।
ইভিএমের ভোটে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ৫.২৮%, ঢাকা-৫ আসনে ১০.৪৩% এবং নওগাঁ-৬ আসনে ৩৬.৪৯% ভোট পড়েছে। এমন কম ভোটার উপস্থিতির দায় দলগুলোর প্রতি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহতাবউদ্দিন বলেন, “প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএমসহ নির্বাচনী মালামাল পৌঁছানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মাঠে রয়েছে, পরিস্থিতি বেশ ভালো। ভোটাররা কেন্দ্রে আসুন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে বাসায় ফিরে যাবেন।”
ভোটের আগ মুহূর্তে বুধবার প্রার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, “স্বাস্থ্য বিধি মেনে ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি নেই, শুধু ভোট সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র বন্ধ এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা ছুটির আওতায় থাকছে। ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে বলে আশা রাখি।”
ঢাকা-১৮
# ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১, ১৭, ৪৩ থেকে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং বিমানবন্দর এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসন সাংসদ সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শূন্য হয়।
# ভোটার: ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১৮৮ জন
# ভোটকেন্দ্র ২১৭, ভোটকক্ষ ১৩৫৩টি
# ছয় প্রার্থী: আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ হাবিব হাসান, বিএনপির এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, জাতীয় পার্টির নাসির উদ্দিন সরকার, গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ওমর ফারুক ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মবিবুল্লাহ বাহার।
ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার উত্তরার আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার কথা রয়েছে সকাল ১১টায়।
তার আগে সকাল ৯ টায় ওই কেন্দ্রেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিব হাসান ভোট দেবেন বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে।
বিএনপি প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন উত্তরার ৮ নম্বর সেক্টরের মালেকা বানু হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেবেন বলে জানানো হয়েছে।
উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস স্থাপন করা হবে এবং সেখান থেকে ভোটের ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন করা হবে।
সিরাজগঞ্জ-১
# কাজীপুর উপজেলা ও সদর উপজেলার মেছড়া, রতনকান্দি, বাগবাটি, ছোনাগাছা ও বহুলী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসন সাংসদ মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে শূন্য হয়।
# ভোটার ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬০৩ জন
# ভোটকেন্দ্রে- ১৬৮, ভোটকক্ষ ৮২৪টি
# প্রার্থী: এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় এবং বিএনপির সেলিম রেজা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
ছুটির বিষয়ে নির্দেশনা
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইসি সচিবালয়ের চাহিদা মোতাবেক ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচনের দিন যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে সেগুলো বন্ধ থাকবে।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় সংস্থা/প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দানে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হল।
যানবাহনে কড়াকড়ি
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচনকে ঘিরে যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
১০ নভেম্বর দিবাগত ( মঙ্গলবার) মধ্যরাত ১২টা থেকে ১৩ নভেম্বর (শুক্রবার) মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
পাশাপাশি বুধবার রাত ১২টা থেকে ১২ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রাক ও পিকআপ চলাচল করতে পারবে না।
এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দিয়েছে ইসি।
তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী-তাদের নির্বাচনী এজেন্ট এবং দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রে এ কড়াকড়ি শিথিল করা যাবে।
এছাড়া নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত সাংবাদিক, ভোটের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগের যানবাহন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।
জাতীয় মহাসড়কে চলাচলরত এবং বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহে নিয়োজিত যানবাহনের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে এ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যাবে।
আরও পড়ুন