মাদকবিরোধী অভিযানে আরও ১১ লাশ

সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে নয় জেলায় আরও অন্তত ১১ জন গুলিতে নিহত হয়েছেন। এছাড়া বগুড়ায় একজন পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2018, 04:49 AM
Updated : 25 May 2018, 02:25 PM

এর মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের গুলিতে নেত্রকোণায় দুইজন এবং সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, ঝিনাইদহ, কুমিল্লা, গাইবান্ধা ও শেরপুরে একজন করে নিহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় একজন নিহত হয়েছেন র‌্যাবের গুলিতে।

এছাড়া কক্সবাজারের মহেশখালী ও হিমছড়িতে দুইজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘মাদক বিক্রেতাদের মধ্যে গোলাগুলিতে’ তাদের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ ও র‌্যাবের দাবি, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে কথিত এসব বন্দুকযুদ্ধ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য।

মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত এই বন্দুকযুদ্ধে গত ছয় দিনে অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হল দেশের বিভিন্ন জেলায়।

এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ যে বিবরণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে আসছে, তা মোটামুটি একই রকম। তাদের দাবি, অভিযানের সময় মাদক চক্রের সদস্যরা গুলি চালালে পাল্টা গুলিবর্ষণ হয়, তাতেই এদের মৃত্যু ঘটে।

তবে বিভিন্ন সময়ে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে, ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় তাদের স্বজনদের।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।

মাদকের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে তা দমন করছে- তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন মানবাধিকারকর্মীরা।

অন্যদিকে সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, মাদকের সঙ্গে জড়িত যেই হোক, কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

নেত্রকোণা

মাদকবিরোধী অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নেত্রকোণা সদর উপজেলায় দুই যুবক নিহত হয়েছে।

উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মনাং গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি বোরহান উদ্দিন খানের ভাষ্য।

নিহতদের মধ্যে একজন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পশ্চিম সিকদার পাড়া মিনা এলাকার মো. হোসাইনের ছেলে উছমান গণি (৩৫)। অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি।  তবে পুলিশের দাবি, তারা দুজনেই মাদক চোরাকারবারে যুক্ত ছিল।

ওসি বোরহান বলেন, “মনাং গ্রামে মাদক ব্যবসায়ীদের জড়ো হওয়ার খবরে পুলিশ রাতে সেখানে অভিযানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালায়। পুলিশও তখন পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীদের দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়।”

তাদের নেত্রকোণা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।

তিনি বলছেন, অভিযানে তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।  তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে তিন হাজারের বেশি ইয়াবা, দুটি পাইপগান ও ৭০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

কক্সবাজার

মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে কক্সবাজারের দুই এলাকায় এক ইউপি সদস্য এবং এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে; যারা মাদক বিক্রেতাদের অন্তর্কোন্দলে নিহত হয়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.আফরুজুল হক টুটুল বলেন, রামু উপজেলার কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকা থেকে শুক্রবার সকালে আক্তার কামালের (৪৮) লাশ উদ্ধার করা হয়।

আক্তার টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ছিলেন। তিনি সাংসদ আব্দুর রহমান বদির বোনের দেবর।

আক্তারের নামে টেকনাফসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন থানায় মানব পাচার ও মাদক চোরাচালানের পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলছেন, যেখানে আক্তারের লাশ পাওয়া গেছে, সেখান থেকে এক হাজার ইয়াবা, একটি দেশি বন্দুক ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

“মাদক মামলা মাথায় নিয়ে আক্তার দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। সকালে স্থানীয়রা তার গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তা উদ্ধার করে।”

এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ইয়াবা কারবারিদের দুপক্ষের কোন্দলের জেরে গোলাগুলিতে আক্তার নিহত হয়েছেন বলে তারা ধারণা করছেন।  

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের পাহাড়তলী এলাকা থেকে মোস্তাক আহমদ নামে ৩২ বছর বয়সী এক যুবকের লাশ উদ্ধারের কথা জানান মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস।

মোস্তাক ওই এলাকার এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের চোরা কারবারে জড়িত অভিযোগে মহেশখালী থানায় মামলা রয়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য।

ওসি বলেন, পাহাড়তলী এলাকায় দুই দল মাদক বিক্রেতার মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

“এ সময় মাদক বিক্রেতারা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে মাদকবিক্রেতারা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মোস্তাকের লাশ পাওয়া যায়।”

ঘটনাস্থল থেকে এক হাজার ইয়াবা, চারটি বন্দুক ও চার রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন ওসি।

ঢাকা

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি এক যুবক নিহত হয়েছে।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই মিজানুর রহমান বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিজি প্রেস স্কুল মাঠের গলিতে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।

নিহত কামরুল ইসলামের বয়স অনুমানিক ৩৫ বছর। তিনি তেজগাঁও রেললাইন বস্তি এবং মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকায় মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং তার বিরুদ্ধে ১৫টির বেশি মাদক ও অস্ত্র মামলা রয়েছে বলে এক বার্তায় জানিয়েছে র‌্যাব। 

এসআই মিজান বলেন, একদল মাদক চোরাকারবারি বিজি প্রেস এলাকায় অবস্থান করছে খবর পেয়ে র‌্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযানে যায়।

“এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি করলে একজন আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

ঘটনাস্থল থেকে ‘বিপুল পরিমাণ’ ইয়াবা, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে এই পুলিশ সদস্য বলেন, ওই অভিযানে র‌্যাবের দুই সদস্যও আহত হয়েছেন।

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ শহরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রাজন মিয়া নামে ৩৪ বছর বয়সী এক যুবক নিহত হয়েছে, যাকে মাদক চোরাকারবারি বলছে পুলিশ।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার দিকে পুরোহিত মহল্লায় রেলওয়ে কলোনীর রেনু বেগমের পুকুর পাড়ে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে। 

নিহত রাজন ময়মনসিংহ শহরের পুরোহিত মহল্লার হারনি মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের নয়টি মামলা রয়েছে।

ওসি বলেন, ওই এলাকায় মাদক বিক্রেতাদের অবস্থানের সংবাদে পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযানে যায়।

“এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়লে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে রাজন গুলিবিদ্ধ হয়।”

পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, এ অভিযানে তিনি নিজে এবং পুলিশের এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৪০০ ইয়াবা, তিনটি গুলির খোসা ও একটি চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ইউনুস আলী নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার দিকে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি গ্রামে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে কলারোয়া থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথের ভাষ্য।

তিনি বলেন, কলারোয়ার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে ইউনুস মাদক চোরাচালানে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগে একাধিক মামলাও রয়েছে।

এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি সীমান্তে মাদক চোরা কারবারিদের দুটি দলের মধ্যে গোলাগুলি খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও সেখানে গুলি চালায়। এ সময় মাদক বিক্রেতারা একটি বিলের মধ্যে দিয়ে পালিয়ে যায়।

“পরে বাচাঁও বাঁচাও চিৎকার শুনে পুলিশ সদস্যরা বিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইউনুসকে পায়। তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউনুসকে মৃত ঘোষণা করেন।”

ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের কথাও বলেছে পুলিশ।

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে শামীম সরদার নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

উপজেলার আড়পাড়ায় বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমানের ভাষ্য।

নিহত শামীম ওই এলাকার মমিন সরদারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় মাদক আইনের নয়টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওসি মিজানুর বলেন, আড়পাড়া এলকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে মাদক কেনাবেচার খবরে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ।

“এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে শামীমকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।”

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শামীমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।  

তিনি বলছেন, এ অভিযানে কালীগঞ্জ থানার এস আই অমিত কুমার দাস, এ এস আই শামীম হোসেন ও কনস্টেবল নাজিম উদ্দিন ও রতন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, ৫০০ ইয়াবা ও ১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের কথাও বলেছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

কুমিল্লা

কুমিল্লায় মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কামাল হোসেন নামে ৫১ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

বুড়িচং থানার ওসি মনোজ কুমার বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের মহিষমারা এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।

নিহত কামাল সদর উপজেলার রাজমঙ্গলপুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে বুড়িচং ও কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় ১২টির বেশি মাদক মামলা রয়েছে এবং স্থানীয়রা তাকে ‘ফেনসি কামাল’ হিসেবে চেনে।

জেলা ডিবি পুলিশের এসআই শাহ কামাল আকন্দ বলেন, কামাল ও তার সহযোগীরা মহিষমারা এলাকা দিয়ে মাদক পাচারের চেষ্টা করছে খবর পেয়ে বুড়িচং থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একটি দল সেখানে অবস্থান নেয়।

“পুলিশ তাদের আটকের চেষ্টা করলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি করে। উভয় পক্ষের গোলাগলির মধ্যে ফেন্সি কামাল আহত হয়।”

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান এসআই শাহ কামাল।

তিনি বলেন, ওই অভিযানের সময় ডিবির এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার, এএসআই সাহাবুল হোসেন ও কনস্টেবল সুমন মিয়া আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থল থেকে হানিফ (৪২) ও ইলিয়াস (২৮) নামে দুজনকে আটক করার পাশাপাশি ১ রাউন্ড কার্তুজসহ একটি পাইপগান এবং ৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে বলে ওসি মনোজ কুমার জানিয়েছেন।

শেরপুর

শেরপুর সদর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আজাদ ওরফে কালু নামে একজন নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার ভোর ৩টার দিকে উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র সেতুর কাছে সাতপাকিয়া এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে শেরপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম জানান।

তিনি বলেন, কালু সদরের মরাকান্দি খাসপাড়া গ্রামের মুন্তাজ আলীর ছেলে এবং চরপক্ষীমারী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত  নারী সদস্য মমতাজ বেগমের ভাই। ডাকাতি ও মাদক চোরাকারবারি হিসেবে এলাকায় কুখ্যাতি আছে কালুর।

এ অভিযানে শেরপুর সদর থানার এক এসআই ও দুই পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন এবং তাদের জেলা সদর হাসপাতলে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা আমিনুলের ভাষ্য।

অন্যদিকে কালুর স্বজনদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ কালুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। শুক্রবার ভোরে তারা কালুর মৃত্যুর খবর পান।

পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, “কালু শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী ছিল। তাকে আগে গ্রেপ্তারের বিষয়টি ঠিক নয়।”

গাইবান্ধা

গাইবান্ধায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মাদক মামলার এক আসামি নিহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার ফলিয়া সেতু ও ফুলছড়ির মদনেরপাড়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে সদর থানার ওসি খাঁন মোহাম্মদ শাহরিয়ারের ভাষ্য।

নিহত জুয়েল মিয়া (৪৭) জেলা শহরের ব্রিজ রোড মিস্ত্রিপাড়া এলাকার নছিম উদ্দিন ওরফে নছিম ড্রাইভারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনের ডজনখানেক মামলা থাকার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ওসি বলেন, “গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি থানা পুলিশ রাতে ফলিয়া সেতু এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে দুর্বৃত্তরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি করে।এতে জুয়েল নিহত হয়।”

ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশে তৈরি পাইপগান, দুই রাউন্ড গুলি ও পাঁচ শতাধিক ইয়াবা উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ওসি বলছেন, অভিযানে তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। তাদের গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া

বগুড়ায় পুলিশের গুলিতে কথিত এক মাদক বিক্রেতা পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নয়ন (৩২) বগুড়া শহরের নিশিন্দারার আব্দুর রহমানের ছেলে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, “রাত ১টার দিকে শহরের প্রথম বাইপাস রোডের  ইজতেমা ময়দানের দক্ষিণ দিকে একদল মাদক ব্যবসায়ী জমায়েত হচ্ছিল।

“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গুলি চালায়। পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে নয়ন আহত হন। তার ডান পায়ে গুলি লাগে। তার কাছ থেকে ২০০ ইয়াবা, একটি ওয়ান শুটার গান ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।”

তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নয়নের নামে অস্ত্র আইনে দুটি ও মাদক আইনে ছয়টি মামলা রয়েছে।

পুরনো খবর