পুলিশ কি ওখানে জুঁই ফুলের গান গাইবে: কাদের

সারা দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মাদক কারবারিরা অস্ত্র নিয়ে মোকাবেলা করছে বলেই ‘এনকাউন্টার’ হচ্ছে এবং একে বিচার বহির্ভূত হত্যা বলা যায় না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2018, 09:54 AM
Updated : 24 May 2018, 12:59 PM

তিনি বলেছেন, “এখানে এক পক্ষের হাতে অস্ত্র নেই, অস্ত্র আছে দুই পক্ষের হাতে।  যাদেরকে ধরতে যাচ্ছে, তারাও কিন্তু অস্ত্র নিয়ে মোকাবিলা করছে। তাহলে পুলিশ কি ওখানে জুঁই ফুলের গান গাইবে? তারা এটার কাউন্টার করবে না? “

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে জরুরি সহায়তা নম্বর ‘৯৯৯’ এর লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করেন।

আর কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে মাদক পাচারের অভিযোগে ধরতে হলে তার আগে ‘প্রমাণ লাগবে’ বলে মন্তব্য করেছেন কাদের। 

বৃহস্পতিবার ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিআরটিএ-এর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদেরের এ মন্তব্য আসে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সারা দেশে মাদক নির্মূলে যে অভিযান শুরু করেছে, তাতে প্রতি রাতেই কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছে বহু মানুষ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু যেভাবে তাদের দমন করার চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে জরুরি সহায়তা নম্বর ‘৯৯৯’ এর লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করেন।

আর জাতীয় পার্টির নেতা এইচ এম এরশাদ সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, “মাদক সম্রাট তো সংসদেই আছে। তাদেরকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝোলান।”

সরকার নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করছে- বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের উত্তরে বলেন, তিনি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেন না, কিন্তু সেটা ভিন্ন বিষয়।

“মাদক যারা  ব্যবসা করে এদের একটা সিন্ডিকেট আছে, এদের সন্ত্রাসী আছে, এদের সাথে অস্ত্রধারী আছে। যখন পুলিশ তাদের ধরতে যায়, তখন অস্ত্র নিয়ে মোকাবিলা করে, এনকাউন্টার হয়। এনকাউন্টারকে তো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এভাবে বলা যাবে না।”

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের গত সাড়ে নয় বছরের মেয়াদে কোনো দল তাদের রাজনৈতিক সভায় মাদকের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি।

“একটি শব্দও আপনারা উচ্চারণ করেননি। কাজেই এই ব্যপারে কথা বলার কোনো অধিকার আপনাদের নেই।”

কাদের বলেন, সবাই মিলে সোচ্চার হলে মাদকের বিস্তার ‘এই ভয়ঙ্কর অবস্থায়’ আসতে পারত না।

“আজকে পুলিশকে মোকাবিলা করতে হত না। আজকে অভিযান কেন হচ্ছে? জনস্বার্থে করা হচ্ছে একটা ভয়ঙ্কর অবস্থার অবসানের জন্য।”

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে জরুরি সহায়তা নম্বর ‘৯৯৯’ এর লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, বাংলাদেশের মানুষ এই অভিযানে খুশি। আর সেজন্যই বিএনপির ‘গাত্রদাহ’ শুরু হয়েছে।

“এটা নিয়ে বিএনপি এত চিৎকার করছে কেন? তাদেরও বহু লোক জড়িত, তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।”

বিভিন্ন মহল থেকে আওয়ামী লীগের এমপি আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ আসার পরও কেন সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না- সেই প্রশ্ন কাদেরের সামনে রাখেন সাংবাদিকরা।

জবাবে তিনি বলেন, “প্রমাণ করতে হবে, প্রমাণ ছাড়া তো কাউকে ধরা যায় না, একজন এমপিকে চট করে ধরা যায় না। প্রমাণ হলে সে যদি অপরাধী হয় অবশ্যই তার শাস্তি হবে।”

কেবল বদি নয়, মাদকের সঙ্গে সরকারের আরও কোনো প্রভাবশালী যদি জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর পরিষ্কার নির্দেশ, মাদক ব্যবসার সঙ্গে, ড্রাগ ডিলিংয়ের সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, যত প্রভাবশালীই হোক, তাদেরকে অবশ্যই এ অভিযানের আওতায় আনতে হবে।”

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে জরুরি সহায়তা নম্বর ‘৯৯৯’ এর লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, গত ২৩ দিনের অভিযানে ট্রাফিক আইন ভঙ্গের কারণে মোট ১২১৭টি মামলা হয়েছে। মোট ৩১ লাখ ৫৪ হাজার আটশ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বিভিন্ন যানবাহনের কাছ থেকে।

তিনি জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে; আর ২৩টি গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে ৫২টি জব্দ করা হয়েছে।