মাদকবিরোধী অভিযানে আরও ৯ জন গুলিতে নিহত

সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আরও অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2018, 03:41 AM
Updated : 23 May 2018, 09:36 AM

পুলিশ ও র‌্যাব বলছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বুধবার সকালের মধ্যে আট জেলায় মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে তাদের বন্দুকযুদ্ধ হয়।

এর মধ্যে পুলিশের গুলিতে কুষ্টিয়ায় দুইজন এবং জামালপুর, কুমিল্লা, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট ও রংপুরে একজন করে মোট পাঁচজন নিহত হয়েছে। আর ফেনী ও গাইবান্ধায় র‌্যাবের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুইজন।  

এছাড়া বগুড়ায় পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে সন্দেহভাজন একজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

পুলিশ ও র‌্যাবের দাবি, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।

মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত এই বন্দুকযুদ্ধে গত পাঁচ দিনে অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হল দেশের বিভিন্ন জেলায়।

এসব ঘটনার যে বিবরণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে আসছে, তা মোটামুটি একই রকম। তাদের দাবি, অভিযানের সময় মাদক চক্রের সদস্যরা গুলি চালালে পাল্টা গুলিবর্ষণ হয়, তাতেই এদের মৃত্যু ঘটে।

তবে বিভিন্ন সময়ে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে, ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় তাদের স্বজনদের।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।

মাদকের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে তা দমন করছে- তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন মানবাধিকারকর্মীরা।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তরুণ সমাজকে সর্বনাশা ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনার একটি ‘যুগান্তকারী পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এই অভিযানকে। তার দাবি, এই অভিযানে সারা দেশের মানুষ ‘খুশি’ হয়েছে।

আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মঙ্গলবার বলেছেন, “আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা, এই ব্যাপারে জিরো টলারেন্স; সে সংসদ সদস্য হোক, সরকারি কর্মকর্তা হোক, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা হোক, যেই হোক, ইভেন সাংবাদিক হোক, কাউকে আমরা ছাড় দেব না।”

দেশ থেকে মাদক নির্মূলের প্রত্যয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে বলেছিলেন, জঙ্গি দমনের মত মাদক ব্যবসায়ী দমনে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মূলত র‌্যাবকে।

তবে র‌্যাবের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, থানা পুলিশ এবং বিজিবিকেও নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানে দেখা যাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় সাজাও দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় এক রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধের দুটি ঘটনায় পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন।

কুমারখালী থানার ওসি আব্দুল খালেক জানান, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার লাহিনী পাড়ায় গড়াই নদীর ব্রিজের নিচে  গোলাগুলির মধ্যে ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) নামে একজন নিহত হয়।

ফটিক কুমারখালী উপজেলার এলেঙ্গীপাড়ার ওসমান গণির ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক আইনের মামলা রয়েছে বলে ওসির ভাষ্য।

তিনি বলেন, মাদক কেনাবেচার জন্য একদল চোরাকারবারি গড়াই নদীর ব্রিজের নিচে জড়ো হয়েছে খবর পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ সেখানে অভিযানে যায়।

“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি শুরু করে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী ফটিক ওরফে গাফফার গুলিবিদ্ধ হয়।”

পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।

কথিত বন্দুকযুদ্ধের অন্য ঘটনাটি ঘটে  রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার হাওয়াখালীর মাঠে।

সেখানে নিহত লিটন হোসেন (৪৫) ভেড়ামারা পৌরসভার নওদা পাড়ার গোলজার হোসেনের ছেলে।

পুলিশের খাতায় জেলার একজন ‘শীর্ষ মাদক চোরাকারবারি’ হিসেবে লিটনের নাম রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে ভেড়ামারা থানার ওসি আমিনুল ইসলামের ভাষ্য।

তিনি বলেন, মাদক চোরাকারবারিরা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের হাওয়াখালী মাঠে জড়ো হয়েছে খবর পেয়ে ভেড়ামারা থানা পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়।

‘পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিটন হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়।”

ভেড়ামারা থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিটনকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।  

পুলিশ বলছে, দুই জায়গায় অভিযানের পর অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। দুই ঘটনায় পুলিশের সাত সদস্যও আহত হয়েছেন।

ফেনী

চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ফেনীতে মঙ্গলবার রাতে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আরও একজন নিহত হয়েছে।

র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়াত জামিল ফাহিম বলছেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ফেনী শহরের দাউদপুর এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।

নিহত মোহাম্মদ ফারুক (৩৫) চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকার অলি আহম্মেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক আইনের একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

শাফায়াত জামিল বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মাদকের চালান ঢাকা যাওয়ার খবরে ফেনীর দাউদপুর কাঁচা বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে রাতে তল্লাশি করছিলেন র‌্যাব সদস্যরা।

“এ সময় একটি প্রাইভেটকারকে থামার ইংগিত দেওয়া হলে সেখান থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। র‌্যাবও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। তাতে মাদক ব্যবসায়ী ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়।”

পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।

র‌্যাব বলছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ ও ২২ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে তারা। পাশাপাশি মাদক চোরাকারবারিদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।

রংপুর

রংপুরে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে ‘গোলাগুলিতে’ একজন নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে নগরীর হাজীরহাট এলাকার জাফরগঞ্জ সেতুর কাছে এ ঘটনা ঘটে বলে রংপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানের ভাষ্য।

নিহত শাহীন মিয়া (৪৫) রংপুর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনোহর শুকানচৌকি এলাকার শহিদার ওরফে সিরাজুলের ছেলে।

পুলিশ বলছে, শাহীনের নামে কোতোয়ালি ও গঙ্গাচড়া থানায় মাদক ও সড়ক ডাকাতির ১১টি মামলা রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, জাফরগঞ্জ সেতুর কাছে মাদক কেনাবেচার খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল সেখানে যায়।

“এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের দিকে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। শাহীন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অন্যরা পালিয়ে যায়”। 

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১২৬ বোতল ফেনসিডিল ও একটি দেশি পিস্তল উদ্ধারের কথা জানিয়েছে।

কুমিল্লা

কুমিল্লায় মঙ্গলবার বিকালে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার এক ব্যক্তি মধ্যরাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।  

রাত ১টার দিকে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার চাঁনপুর ব্রিজ সংলগ্ন সামারচর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে বলে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়ার ভাষ্য।

নিহত নুরুল ইসলাম ইছাক ওরফে ইছা ওই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে ১১টি মামলা থাকার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ওসি ছালাম মিয়া বলেন, পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে মঙ্গলবার বিকালে ইছাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে সদর উপজেলার সামারচর এলাকা থেকে চারশ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।

“ফেরার পথে ইছার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে ইছার গায়েও গুলি লাগে।”

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইছাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।  

তিনি বলেন, এ অভিযানে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাহউদ্দিন, এসআই মারুফ ও কনস্টেবল মিজানও আহত হয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে মাদক মামলার এক আসমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলছেন, বুধবার ভোরে উপজেলার ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের বনবাড়ি এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।

নিহত আক্তাফুল (৩৮) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের পারুয়া গ্রামের ভেলসা মোহাম্মদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা, গরু চুরির পাশাপাশি মাদক আইনের ১৯টি মামলা রয়েছে থানায়।

পুলিশ সুপার বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে পুলিশ আক্তাফুলকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে ১০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।

“জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, বোতলগুলো ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিনে এনেছে সে।”

ওই তথ্যের ভিত্তিতে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের একটি দল রাত ৩টার দিকে আক্তাফুলকে নিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলায় রওনা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার।

“পথে ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কের বনবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে।  এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রায় ২০ মিনিট গোলাগুলির এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ী আক্তাফুল নিহত হয়।”

ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি ককটেল ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ফারহাত আহমেদ বলছেন, এ অভিযানে বালিয়াডাঙ্গীর ওসি এবিএম সাজেদুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান আহত হওয়ায় তাদের ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জামালপুর

জামালপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশের গুলিতে ১৬ মামলার এক আসামি নিহত হয়েছে।

জামালপুর সদর থানার ওসি নাছিমুল ইসলাম বলছেন, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে পৌর শহরের ছনকান্দা মাদ্রাসা ঘাটে পুলিশের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের গোলাগুলির মধ্যে ওই ব্যক্তি নিহত হয়।

নিহত মোশারফ হোসেন বিদ্যুৎ (৪৮) জামালপুর পৌরসভার বগাবাইদ এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় ১৬টি মাদকের মামলা রয়েছে। তার স্ত্রী শিল্পীর নামে রয়েছে মাদকের আটটি মামলা।

ওসি বলেন, “পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়েছিল। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে মাদক ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ নিহত হয়। তখন বাকিরা পালিয়ে যায়।”

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, এক হাজার ইয়াবা এবং ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধারের কথা জানিয়েছে।

ওসি বলছেন, এ অভিযানে তিনি নিজে এবং পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান, এসঅঅই সিরাজুল ইসলাম ও কনস্টবল ফারুক আহাত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

গাইবান্ধায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত রাজু মিয়া

গাইবান্ধা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে র‌্যাবের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। 

মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বিশ্রামগাছি গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে বলে র‌্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের উপ-অধিনায়ক মেজর রাব্বি জানান।

নিহত রাজু মিয়া (৩৬) পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের রাই গ্রামের জোব্বার মিয়ার ছেলে।

তার বিরুদ্ধে সদর ও পলাশবাড়ী থানায় মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৮টি মামলা রয়েছে জানিয়ে পলাশবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “রাজু মিয়া ছিল জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।”

র‌্যাব কর্মকর্তা রাব্বি বলেছন, মাদক কেনাবেচার খবর পেয়ে র‌্যাবের একটি দল রাতে বিশ্রামগাছি এলাকায় অভিযানে যায়।

“র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ী রাজু মিয়া ও তার সহযোগীরা গুলি চালায়। এ সময় র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ১০ মিনিট গোলাগুলির এক পর্যায়ে রাজু নিহত হয়। তার সহযোগীরা তখন পালিয়ে যায়।”

ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও বিপুল পরিমাণ গাজা উদ্ধার করার কথাও বলেছে র‌্যাব।  

মেজর রাব্বি বলছেন, এ অভিযানে র‌্যাবের দুই সদস্যও আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট

লালমনিরহাট সদর উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন।

জেলার পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক জানান, বুধবার ভোররাতে সদর উপজেলার কুলাঘাট এলাকার ধরলা চরাঞ্চলে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নূর আলম এশার (৩৫) কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার পানিমাছকুটি (যকুরতল) গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ সুপার বলেন, “এশার আন্তঃজেলা মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা। তার নামে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি ও লালমনিরহাট সদর থানায় মাদক আইনে মামলা রয়েছে।”

এশার দলবল নিয়ে মাদক পাচার করছে- এমন খবরে পুলিশ শেষ রাতে ধরলার চরাঞ্চলে অভিযানে যায় জানিয়ে রশিদুল হক বলেন, “পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের ধাওয়া দিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়। তখন এশার আলী নিহত হয়।”

ঘটনাস্থল থেকে ২০ কেজি গাঁজা, ৫০ বোতল ফেনসিডিল, বেশ কিছু গুলির খোসা এবং ছয়টি রামদা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

এ অভিযানে সদর থানার এসআই আসাদুল ইসলাম ও কনস্টবল আবুল কালাম আহত হয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, তাদের জেলার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বগুড়া

বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন এক মাদক চোরাকারবারি গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

আহত শাহীন মিয়া ওরফে হাজী শাহীন (৪২) চক সূত্রাপুর হাড্ডিপট্টি এলাকার আজিজার রহমানের ছেলে। তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, ইয়াবার চালানের ভাগ বাটোয়ারার খবরে রাত সোয়া ১টার দিকে পুলিশের একটি দল শহরের সিলিমপুর নতুন রাস্তা এলাকায় যায়।

“ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে কয়েকজন পালিয়ে গেলেও শাহীনকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পায়া যায়।”

সেখান থেকে ৪০০ ইয়াবা এবং একটি বার্মিজ চাকু ও আটটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত পলিশ সুপার বলেন, শাহীন মিয়ার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে।

এ অভিযানে আসলাম নামের এক এএসআই এবং হানিফ মিয়া নামের এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন এবং তাদের পুলিশ লাইনস হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে সনাতন চক্রবর্তী জানান।