‘বন্দুকযুদ্ধ’ চলছেই, এক রাতে নিহত ৯

সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে জেলায় জেলায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই; র‌্যাব ও পুলিশ এসব ঘটনাকে বর্ণনা করে আসছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হিসেবে।  

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2018, 03:11 AM
Updated : 21 May 2018, 11:49 AM

রোববার রাত থেকে সোমবার সকালে মধ্যে সাত জেলায় নয়জন সেই কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এসব অভিযানে বিভিন্ন পরিমাণে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের কথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে।

পুলিশ ও র‌্যাবের দাবি নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে মামলাও রয়েছে।

এর মধ্যে টাঙ্গাইল, রাজশাহী, ঝিনাইদহ ও নরসিংদীতে র‌্যাবের গুলিতে চারজন এবং চুয়াডাঙ্গা ও গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। আর যশোরে তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ বলেছে, মাদক কারবারিদের মধ্যে গোলাগুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিটি ঘটনায় আইনশঙ্খলা বাহিনী যে বিবরণ দেয়, তা মোটামুটি একই রকম। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ধরনের ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে এলেও সরকারের তরফ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। 

দেশ থেকে মাদক নির্মূলের প্রত্যয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার এক অনুষ্ঠানে বলেন, জঙ্গি দমনের মত মাদক ব্যবসায়ী দমনে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। আর এই দায়িত্ব মূলত দেওয়া হয়েছে র‌্যাবকে।

গত ১৪ মে র‌্যাবের এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর তারা মাঠে নেমেছেন। মাদকের বিরদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনের আগে ৩০ এপ্রিল কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এ এম এম এম আওরঙ্গজেব চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, মাদকের বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’।

আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও গোয়েন্দা পুলিশ, রেল পুলিশ, থানা পুলিশ এবং বিজিবিকেও মাদকবিরোধী অভিযানে দেখা যাচ্ছে।

কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে মাদক চক্রের সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতে এ ধরনের ঘটনায় ছয় জেলায় ছয়জন নিহত হন, যাদের চারজনই মাদক কেনা-বেচায় জড়িত ছিল বলে পুলিশের ভাষ্য।   

রোববার রাতে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

যশোর

যশোরের দুই জায়গা থেকে গুলিবিদ্ধ তিনটি লাশ উদ্ধারের খবর জানিয়ে পুলিশ বলেছে, মাদক চোরাকারবারিদের ‘নিজেদের মধ্যে’ গোলাগুলিতে তারা নিহত হয়েছেন। 

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলছেন, রাত সাড়ে ৩টার দিকে শহরতলীর শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গায় গোলাগুলির এসব ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, দুই দল মাদক কারবারির মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গায় পুলিশ পাঠানো হয়। এর মধ্যে শেখহাটির নওয়াব আলীর খেঁজুর বাগান এলাকায় দুটি গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ আর ৪০০ ইয়াবা পাওয়া যায়। আর খোলাডাঙ্গায় মাঠের মধ্যে থেকে একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ এবং ১০০ ইয়াবা পাওয়া যায়।

দুই জায়গায় দুটি পিস্তল ও গুলির খোসাও উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি বলেন, “ঘটনাস্থলে ইয়াবা পড়ে থাকায় আমরা ধারণা করছি, নিহতরাও মাদকের কারবারে যুক্ত ছিল।” 

যশোর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কল্লোল কুমার সাহা বলেন, ভোর ৪টা ৫মিনিটের দিকে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক তরুণ কুমার গুলিবিদ্ধ একজন ও যশোর উপশহর ফাঁড়ির এসআই আব্দুর রহিম দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। মাথায় গুলি লাগায় তিনজনেরই অবস্থা ছিল ‘বিভৎস’।

এর মধ্যে শেখহাটির নওয়াব আলীর খেঁজুর বাগান এলাকায় নিহত দুজনের পরিচয় শনাক্ত করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।

তাদের একজন হলেন শার্শা উপজেলার টেংরা গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সিরাজুল ইসলাম। তার ছেলে রিপন হোসেন মর্গে গিয়ে বাবার লাশ শনাক্ত করেন।

আর শার্শা উপজেলার মহিশাকুড়া গ্রামের হারান মোল্লার ছেলে মুন্না হোসেনের লাশ শনাক্ত করেন বাগআচড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন।

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা রয়েছে থানায়।

রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘাটাইল থানার দেউলাবাড়ি এলাকায় মহাসড়ক সংলগ্ন ইটভাটার পাশে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে র‌্যাব-১২ এর অধিনায়ক আব্দুল আহাদের ভাষ্য।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘বড় ধরনের মাদকের চালান’ আসার খবরে র‌্যাবের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়।

“তখন মাদক ব্যবসায়ীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে, আত্মরক্ষার জন্য র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। ১০-১৫ মিনিট গোলাগুলির পর প্রতিপক্ষ পিছু হটলে র‌্যাব সদস্যরা গিয়ে দেখেন একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।”

তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

র‌্যাব-১২ এর সিপিসি ৩ এর কোম্পানি কমান্ডার রবিউল ইসলাম জানান, নিহত আবুল কালাম আজাদ খান (৪২) ঘাটাইল থানার পূর্ব পাকুটিয়ার আ. রহমান খানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছয়টি মামলা রয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, ১০০ বোতল ফেন্সিডিল, ১৫০০ ইয়াবা এবং মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারের কথাও জানিয়েছে র‌্যাব।

রাজশাহী

রাজশাহীতে মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন।

নিহত লিয়াকত আলী মণ্ডলের বাড়ি পুঠিয়া থানার নামাজগ্রাম এলাকায়। তিনি ওই এলাকার ‘চিহ্নিত মাদক কারবারি’ এবং তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে সাতটি মামলা রয়েছে বলে র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আশরাফুল ইসলামের ভাষ্য।

তিনি বলছেন, রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেলপুকুর থানার ক্ষুদ্র জামিরা এলাকায় মাদক চোরা কারবারিদের সঙ্গে র‌্যাবের গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।

“র‌্যাবের একটি টহল দল ওই এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। তখন র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় লিয়াকত মোটরসাইকেল নিয়ে পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়; অন্যরা পালিয়ে যায়।”

পরে গুলিবিদ্ধ লিয়াকতকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান মেজর আশরাফুল।

ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব ৮২৩টি ইয়াবা, দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে বলে জানান তিনি।

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর এলাকার র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন এক মাদক চোরাকারবারি নিহত হয়েছে।

নিহত সবদুল ইসলাম মণ্ডল (৪৫) নরেন্দ্রপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। রোববার রাত দেড়টার দিকে ওই গ্রামের তেমাথায় র‌্যাবের চেকপোস্টে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে র‌্যাব-৬ এর ঝিনাইদহ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার গোলাম মোর্শেদের ভাষ্য।

তিনি বলেন, মাদকের চালান যাওয়ার খবর পেয়ে র‌্যাবের একটি টহল দল রাতে তেমাথায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিল। রাত ১টা ৩৫ মিনিটে সবদুল মণ্ডল ও তার সহযোগীরা মোটরসাইকেলে করে সেখানে গেলে র‌্যাব সদস্যরা তাদের থামার ইংগিত দেয়। 

“কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীরা না থেমে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র‌্যাবও তখন পাল্টা গুলি চালায়। কয়েক মিনিট গোলাগুলির পর মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে সবদুলকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।”

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা মোর্শেদ।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, ১০০ বোতল ফেনসিডিল, ১৫০ ইয়াবা এবং একটি হেলমেট উদ্ধার করা হয়েছে। এ অভিযানে তিন র‌্যাব সদস্যও আহত হয়েছেন। তাদের কালীগঞ্জ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে মাদক মামলার এক আসামি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। 

রোববার রাত ৩টার দিকে জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ওই ঘটনা ঘটে বলে জীবনননগর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান।

তিনি বলেন, নিহত জোনাব আলী উথলী গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনের একাধিক মামলা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করতে ওই গ্রামে অভিযানে যায় পুলিশ।

“পুলিশ জীবননগর সন্ন্যাসীতলায় পৌঁছালে জনাব আলী পুলিশের দিকে গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ী জনাব আলী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।”

ওসি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড গুলি, তিনটি হাসুয়া এবং এক বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। নিহত জনাব আলীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ইমান আলী, ফাইল ফটো

নরসিংদী

নরসিংদীর ঘোড়াশালে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে পুলিশ।

পলাশ থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান জানান, নিহত ইমান আলী (৩০) ওই এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক চোরাকারবারি। দুই বছর  আগে দ্বীন ইসলাম নামে স্থানীয় এক যুবককে হত্যা মামলারও প্রধান আসামি সে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে ঘোড়াশাল সেতু টোলপ্লাজার পাশে  খালিশারটেক এলাকায় র‌্যাব-১১ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদকসম্রাট ঈমান আলী গুলিবিদ্ধ হয়।”

পরে সকালে ঈমানকে পলাশ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে বলে জানান ওসি। 

র‌্যাব-১১ এর কোম্পানি কমান্ডার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভোরে তারা ইমান আলীর  টানঘোড়াশালের বাড়িতে তল্লাশি চালান। সেখানে তাকে না পেয়ে নারায়ণগঞ্জের আদমজীনগরে র‌্যাব-১১ কার্যালয়ের দিকে রওনা হন তারা।

“পথে দুই সহযোগীসহ ইমান আলীকে একটি মোটরসাইকেলে করে তার বাড়ির দিকে যেতে দেখা যায়। র‌্যাবের গাড়ি দেখে তার দুই সহযোগী পালিয়ে যায় এবং মাদক সম্রাট ইমান আলী র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে সে নিহত হয়।”

র‌্যাব কর্মকর্তা জসিম বলেন, এ অভিযানে র‌্যাবের ডিএডি আবুল বাশার ও এসআই নির্মল চন্দ্র দে আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি এবং এক হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। পলাশ থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা করেছে র‌্যাব।

নিহত ইমান আলীর মামা ইসমাইল মিয়া জানান, এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা ইমান নরসিংদী শহরের নাগরিয়াকান্দি এলাকায় বসবাস করতেন। তার মা তাজমহল এবং ভাই বাদশা থাকেন পলাশ উপজেলার টানঘোড়াশালের বাড়িতে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তিন বছর আগে ইমানের বাবা মিলন মিয়াকে ঘোড়াশালে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা  করা হয়।

গাজীপুর

গাজীপুরের টঙ্গীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে থানায় মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৪টি মামলা রয়েছে।

নিহত রেজাউল ইসলাম রনি ওরফে বেস্তি রনি (২৭) টঙ্গীর এরশাদ নগরের ৩ নম্বর ব্লকের হাফিজুল ইসলামের ছেলে।

রোববার রাত সোয়া ৩টার দিকে টঙ্গীর নিমতলী মাঠ এলাকায় গোলাগুলিতে রনি নিহত হন বলে টঙ্গী থানার ওসি মো. কামাল হোসেনের ভাষ্য।

তিনি বলেন, মাদক কেনা-বেচার খবর পেয়ে পুলিশ রাতে ওই এলাকায় অভিযানে যায়।

“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে রনি গুলিবিদ্ধ হয়। অন্যরা পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।”

ঘটনাস্থল থেকে রনিকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।

তিনি বলেন, রনির বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় মাদকের চোরা কারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৪টি মামলা রয়েছে।

অভিযানে আহত টঙ্গী থানার এএসআই মো. ওমর ফারুক ও এএসআই মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।