শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ‘সংস্কারের’ যে দাবি উঠেছে, তার ধাক্কায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতেও পরিবর্তন এসেছে।
Published : 12 Aug 2024, 10:01 PM
সুপ্রিম কোর্টে পরিবর্তনের হাওয়ায় নতুন চারজন বিচারক পেল আপিল বিভাগ।
হাই কোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক এখন থেকে আপিল বিভাগে বিচারিক দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার পর সোমবার তাদের আপিল বিভাগে দায়িত্ব দিয়ে আদেশ জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তাদের এই নিয়োগ কার্যকর হবে।
আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে নতুন চার বিচারপতির শপথ অনুষ্ঠিত হবে।
গণআন্দোলনে সরকার পতনের পঞ্চম দিন ১০ অগাস্ট শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের ছয় জন বিচারপতি।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি অনুযায়ী হাই কোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এবার হাই কোর্ট বিভাগের আরও চার বিচারককে আপিল বিভাগে নিয়োগ করা হল।
হাই কোর্টে জ্যেষ্ঠতার ক্রমে তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ১৯৬১ সালের ১৮ মে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা প্রয়াত এএফএম আবদুর রহমান চৌধুরীও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি অনার্স ও এলএলএম ডিগ্রি নেওয়ার পর যুক্তরাজ্যে আন্তর্জাতিক আইনের ওপর আরেকটি মাস্টার্স করেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
১৯৮৫ সালে জজ কোর্টে এবং ১৯৮৭ সালের সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি।
২০০৩ সালের ২৭ অগাস্ট জুবায়ের রহমান চৌধুরী অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাই কোর্টে নিয়োগ পান। দুই বছর পর হাই কোর্টে তার নিয়োগ স্থায়ী হয়।
হাই কোর্টে জ্যেষ্ঠতার ক্রমে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ছিলেন পঞ্চম অবস্থানে। ১৯৫৭ সালের ১২ ডিসেম্বর তার জন্ম।
রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়ার পর আইন পড়া শুরু করেন জিয়াউল করিম। স্নাতক ও স্নাতকোওরের পর পিএইচডিও করেন আইনে। আইনজীবী হিসেবেই কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৮৬ সালে জজ কোর্টে, ১৯৮৮ সালের হাই কোর্ট এবং ১৯৯৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন জিয়াউল করিম।
অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে তিনি হাই কোর্টে নিয়োগ পান ২০০৪ সালের ২৩ অগাস্ট। দুই বছর পর তাকে হাই কোর্টে স্থায়ী করে নেওয়া হয়।
বিচারপতি সৈয়দ মো. জিয়াউল করিমের সঙ্গে একই দিনে হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি মো. রেজাউল হক, একই দিনে তারা স্থায়ী হন।
বিচারপতি মো. রেজাউল হক জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬০ সালের ২৪ এপ্রিল। হাই কোর্ট বিভাগে জ্যেষ্ঠতার ক্রমে আর অবস্থান ছিল ষষ্ঠ।
আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নতকোত্তর করার পর ১৯৮৮ সালে জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন রেজাউল হক। এরপর ১৯৯০ সালে তিনি হাই কোর্টে তালিকাভুক্ত হন।
বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক হাই কোর্টে জেষ্ঠতার ক্রমে অষ্টম অবস্থানে। তার জন্ম ১৯৬৩ সালের ১১ জুলাই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ১৯৯০ সালের ৭ অক্টোবর জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৯২ সালের ২৬ নভেম্বর হাই কোর্টে তালিকাভুক্ত হন।
বিচারপতি এমদাদুল হক অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাই কোর্টে নিয়োগ পান ২০০৪ সালের ২৩ অগাস্ট। দুই বছর পর তাকে হাই কোর্টে স্থায়ী করে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-
নতুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ